বসন্তকালে প্রকৃতির রূপ যেন ঢেলে সাজানো থাকে। এই সময় বিভিন্ন স্থানে বসন্ত উৎসবে মেতে ওঠেন উৎসবপ্রেমীরা। গত সাত বছর ধরে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করছেন সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। লিলুয়া মীরপাড়া পার্ক ময়দানের বসন্ত উৎসব উদযাপন হল ১৭ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার।
এ তো শুধু উৎসব নয়, যেন মহা যজ্ঞ। প্রতি বছর দোলের আগেই ইমনের বসন্ত উৎসব কলকাতা এবং হাওড়া দুই শহরের মানুষকেই রাঙিয়ে দিয়ে যায়।
এই উৎসব যেন কিছুটা মুক্ত বাতাসের মতো লিলুয়াবাসীর কাছে। প্রতি বছরের মতো এবারও উৎসবে সামিল হলেন বিভিন্ন শিল্পীরা। নাচ- গান-কবিতায় তৈরি হল এক রঙিন আবহ।
এই বসন্ত উৎসব নিয়ে ইমন খুবই সংবেদনশীল। এই উৎসবের মধ্যে দিয়েই তিনি মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রতি বছর। পাশে থাকেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীর বাবা ও পরিবার- পরিজনেরা।
এত বড় উৎসবে ইমনের সঙ্গী অবশ্যই ওঁর স্বামী নীলাঞ্জন ঘোষ। সকলের নিরলস চেষ্টায় লিলুয়ার মানুষ বসন্ত উৎসবের সাক্ষী হয় গত সাত বছর ধরে।
একে অপরকে রঙিন আবিরে রাঙিয়ে দিলেন 'নীলামন'। লেন্সবন্দী হল সে সুন্দর মুহূর্ত।
ইমন জানালেন, "লিলুয়ায় করব শুনে প্রথম প্রথম অনেকেই নাক সিঁটকেছিলেন। এত বড় উৎসব লিলুয়ায় আগে হয়নি। কিন্তু আমি আমার জন্মস্থানেই উৎসবটা করতে চেয়েছি বরাবর। অনেক বাঁধা বিপত্তি এসেছে, পিছু পা হয়নি।"
তিনি আরও যোগ করলেন, " দেখতে দেখতে সাত বছর পার করে ফেলল আমাদের বসন্ত উৎসব। যাঁরা প্রথম প্রথম এত দূর আসতে চাইতেন না, এখন সবাই আসেন। আমি কৃতজ্ঞ সমস্ত গুণী শিল্পীদের কাছে। প্রতি বছর আমার অনুরোধে সবাই এখানে এসে হাসি মুখে অনুষ্ঠান করে যান, এটা আমার কাছে খুব বড় প্রাপ্তি।"
এবারেও উৎসবে ছিল চাঁদের হাট। শ্রাবণী সেন, অঙ্কিতা ভট্টাচার্য, প্রাঞ্জল বিশ্বাস, রথিজিৎ ভট্টাচার্য, শ্বনাথ বসু, পদ্মপলাস হালদার, অর্কর মত গুণী শিল্পীরা বসন্ত উৎসবের মঞ্চ মাতালেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা গায়ক ইন্দ্রনীল সেন, শুভাপ্রসন্ন, সুজিত বসু, লীনা গঙ্গোপাধ্যায় সহ আরও বিশিষ্টজনেরা।
প্রতি বছর ঋতুরাজকে আবাহন জানাতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী। এবছরও সফলভাবে নাচে-গানে-রঙে সকলের মন রাঙিয়ে দিয়ে গেল ইমনের এই বসন্ত উৎসব।