অভিনেত্রী জয়া আহসান দুই বাংলার অনুরাগীদের মনেই রাজত্ব করেন। তাঁর ফ্যানেদের সংখ্যা নেহাতই কম না।
দীর্ঘ ৯ মাস পড়ে ঢাকা থেকে প্রিয় শহর কলকাতায় ফিরে মূলত একটি জুয়েলারি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং দিয়েই এদেশে কাজে ফিরেছিলেন জয়া। যদিও তারপর থেকে কলকাতা সফরে করছেন পরপর অনেকগুলি কাজ।
কালো নেটের শাড়ির সঙ্গে হীরের গয়না পরিহিত জয়ার লুক সোশ্যাল মিডিয়ায় নজর কাড়ছে সকলের।
কখনও আবার অভিনেত্রী পরেছেন হালকা রঙের লং গাউন, সঙ্গে রয়েছে কুন্দনের জুয়েলারি। সবেতেই ধরা পড়ছে জয়ার মোহময়ী রূপ।
বধূ বেশেও দেখা গেছে তাঁকে। যা দেখে চোখ ফেরাতে পারছেন না কত তরুণ।
প্রায় ৫০ ছুঁই ছুঁই জয়া এখনও যে কোনও অষ্টাদশীকে হার মানাতে পারবেন।
কিছুদিন আগেই সারাদিনব্যাপী বাওয়ালী রাজবাড়িতে হয়েছে নীল দাশগুপ্তের পরিচালনায় এই বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং।
'সুন্দর তুমি এসেছিলে আজ প্রাতে', রবি ঠাকুরের এই ভাবনা ঘিরেই মূলত তৈরি হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। কবিতাটি শোনা গেছে চলচ্চিত্র পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের গলায়।
সেই প্রসঙ্গে শিবপ্রসাদের কথায়, "একটি বিজ্ঞাপনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই কবিতাটি ব্যবহার করায় নীলের আমি সত্যই প্রশংসা করি। যে যুগে বাংলা ভাষা বলতে এবং লিখতে মানুষ প্রায় ভুলে গিয়েছেন, সেই সময়ে বিজ্ঞাপনে রবি ঠাকুরকে ফিরিয়ে আনার এই চিন্তাভাবনাটি অনন্য। তাঁর এই সৃষ্টিকে আবৃত্তি করার সুযোগ আমায় দেওয়ার জন্যে আমি কৃতজ্ঞ।"
প্রায় দীর্ঘ ৯ মাস পর তিলোত্তমার বুকে পা রেখে কেমন লাগছে জয়ার? এ প্রশ্নের উত্তরে জয়া আগেই জানিয়েছিলেন, "খুব ভাল লাগছে। তবে কলকাতার রাস্তাঘাট অতিমারীর জন্যে হয়তো একটু অন্য রকম লাগলো। এত মাস পর কলকাতার বাড়ির জানালা খুলতেই ঘিরে ধরেছিল এক ঝাঁক পাখি। নিজের হাতেই খেতে দিলাম ওদের"।
গয়নার বিজ্ঞাপনের জন্যে লক্ষাধিক টাকার ভারী গয়না পরলেও, জয়ার কিন্তু পছন্দ একেবারে হালকা, ছিমছাম সাজ। তাঁর কথায়, "আমার মনে হয় আমাকে খুব লাউড লুক মানায় না। আমি খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যও বোধ করি না"।
নতুন পরিচালক নীলের সঙ্গে কাজ করা প্রসঙ্গে জয়া বললেন, "আমরা খুব মজা করে কাজটা করছি"। এর আগে বহু নামী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনের কাজ করেছেন নীল। প্রায় ২৪ বছর ধরে তিনি কাজ করে চলেছেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে। ছবি পরিচালনার কাজও খুব শীঘ্রই শুরু করবেন তিনি।
যার নামে এত প্রশংসা, অর্থাৎ নীলের কথায়, "এই বিজ্ঞাপনে আমি চেয়েছি রবি ঠাকুরের ছোঁয়ায় গয়নাগুলির উজ্জ্বল পরিসীমাটি প্রদর্শন করতে। "সুন্দর, তুমি এসেছিলে আজ প্রাতে" এই প্রতিধ্বনি এক সুন্দর আবহ সৃষ্টি করে। আমি যে রকম ভেবেছিলেন,জয়া আহসান একদম সেরকমই করেছেন। প্রতিটি গয়নায় তাঁকে অপূর্ব লাগছে।"
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী জয়া আহসান কাজ নিয়ে থাকতেই ভালোবাসেন বরাবর। দীর্ঘদিন বন্ধুটি পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পেরেছেন কাজে। করোনা আবহেই সেরে ফেলেছেন তিনটি বাংলাদেশের ছবির কাজ। 'হাসিনা: ডটারস টেল', 'বিউটি সার্কাস' ও 'নকশীকাঁথার জমিন'- এই ছবি তিনটিই বাংলাদেশে বহু প্রতীক্ষিত।
অন্যদিকে অতিমারীর জন্যেই পিছিয়ে গেছে কলকাতার তাঁর বেশ কয়েকটি ছবি মুক্তি। এর মধ্যে রয়েছে কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত 'অর্ধাঙ্গিনী'। যেটি জীবনানন্দ দাশের জীবনী নির্ভর একটি ছবি। কিছুদিন আগেই কলকাতায় আয়োজিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবেও উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী।
(ছবি: ফেসবুক ও সংগৃহীত)