সংবাদের শিরোনামে রয়েছেন অভিনেত্রী- সাংসদ নুসরত জাহান (Nusrat Jahan)। ব্যক্তিগত জীবন থেকে রাজনীতি, বিগত কয়েক মাস বারবারই চর্চায় এসেছেন তিনি। নেটাগরিক থেকে সাধারণ মানুষ, অনেকের কটাক্ষের শিকার হয়েছেন বহুবার।
১৯৯০ সালের ৮ জানুয়ারী কলকাতার এক মুসলমান পরিবারে জন্ম হয় নুসরতের। ২০২১ সালে ৩১ বছর পূর্ণ করলেন তিনি। কলকাতার একটি স্কুলে পড়াশোনা করার পর, ভবানীপুর কলেজ থেকে কমার্সে স্নাতক পাশ করেছেন তিনি।
বাড়ির বড় মেয়ে নুসরত বরাবর সকলের খুব আদরের। এদিকে ছোট বোনের পড়াশোনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দায়িত্ব যথাযথ পালন করেন তিনি।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হন নায়িকা। সেই সময়ে ওয়েস্টার্ন পোষাক পরে পার্লামেন্টের সামনে ছবি তোলায় ট্রোলিংয়ের স্বীকার হতে হয়েছিল তাঁকে ও আরেক অভিনেত্রী -সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে।
২০১৯ সালের ১৯ জুন বয়ফ্রেন্ড, ব্যবসায়ী নিখিল জৈন (Nikhil Jain) সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন নুসরত জাহান। তুরস্কে বসেছিল তাঁদের বিয়ের রাজকীয় অনুষ্ঠান। এরপর কলকাতায় এসেও হয় গ্র্যান্ড রিসেপশন পার্টি।
নিখিল জৈনের সঙ্গে বিয়ের পর থেকেই হিন্দু ও মুসলিমদের রোষানলে পড়তে হয়েছে তৃণমূলের সাংসদ নুসরত জাহানকে। কলকাতার রথযাত্রায় তাঁর উপস্থিতি থেকে সিঁদুর খেলা, একাধিক বার ধর্মীয় বিতর্কে জড়িয়েছে তাঁর নাম।
গত কয়েক মাস ধরে নিখিল জৈনের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ ও সেই সঙ্গে অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের (Yash Dasgupta) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।
গত ডিসেম্বর মাসে নুসরত জাহান গিয়েছেন রাজস্থানে। সেখানে আজমের খাজা গরিব নওয়াজের মাজারে উপস্থিত হয়ে রাষ্ট্র ও দেশের অগ্রগতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য প্রার্থনা করেছেন তিনি। যদিও আজমের শরিফে তিনি একা যাননি। সঙ্গে গিয়েছেন অভিনেতা যশ। দুজনের একসঙ্গে ছবি সোস্যাল পেজে না দিলেও আলাদা আলাদ শেয়ার করেছেন নিজেদের প্রোফাইলে।
পুজোর আগে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'SOS কলকাতা'-এ একসঙ্গে কাজ করেছিলেন যশ-নুসরত ও মিমি। সেখান থেকেই যশ ও নুসরতের বন্ধুত্ব অনেকটাই গভীর হয়েছে বলে শোনা যায়। এমনকি গত কয়েকমাস ধরে সহবাস করছে 'যশরত', এমনটাই গুঞ্জন চারিদিকে।
এদিকে নুসরত ও নিখিলের বিয়ে প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তুরস্কের বিবাহ আইন অনুসারে এই অনুষ্ঠান অবৈধ। সেই সঙ্গে হিন্দু-মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবাহ আইন অনুসারে বিয়ে করা উচিত। যা এ ক্ষেত্রে মানা হয়নি। ফলত, এটা বিয়েই নয়।
একটি বিবৃতি দিয়ে নায়িকা বলেন,"তুরস্কের বিবাহ বিধি অনুযায়ী বিয়ের অনুষ্ঠানটি অবৈধ। অপরন্তু, যেহেতু এটি একটি আন্তঃধর্মের বিয়ে ছিল, তাই এটির জন্য বিশেষ বিবাহ আইন অনুসারে বৈধতা প্রয়োজন। ভারতে, যা ঘটেনি। আইনত এটি বিয়ে নয়, সম্পর্ক বা লিভ-ইন সম্পর্ক। তাই বিবাহবিচ্ছেদের প্রশ্নই ওঠে না।" এরপর থেকে চলতে থাকে নানা টানাপোড়েন। নিখিলের সঙ্গে বিচ্ছেদের জল্পনার মাঝেই টলিপাড়ায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছিল অভিনেত্রী -সাংসদের মা হওয়ার গুঞ্জন।
ধীরে ধীরে সামনে আসতে শুরু করে নুসরত জাহানের বেবি বাম্পের ছবি। যদিও আগত সন্তানের পিতৃত্ব নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরাসরি মুখ খোলেননি নায়িকা। তবে বিভিন্ন আকার -ইঙ্গিতে সকলকে নিত্যদিনই তিনি জানান দিচ্ছেন, যশের সঙ্গেই রয়েছেন তিনি।
ছোট্ট অতিথি আসতে আর হাতে গোনা কয়েক ঘণ্টা বাকি। বুধবার সকালেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চেকআপ করিয়ে ফিরে এসেছেন বাড়িতে। প্রসব যন্ত্রণার উপর নির্ভর করে, বুধবার কিংবা বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হবেন নুসরত। এই নিয়ে জোরদার চর্চা চলছে ইন্ডাস্ট্রি থেকে শুরু করে তাঁর অসংখ্য ফ্যানদের মধ্যে।
কলকাতার একটি প্রথম সারির বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হবেন নুসরত জাহান। সূত্র মারফত শোনা যাচ্ছে, সব ঠিক থাকলে বৃহস্পতিবারই ভূমিষ্ঠ হবে নায়িকার সন্তান। এদিকে নুসরতের সোশ্যাল পেজে উঁকি মারলেই নজরে আসে মাতৃত্বের পূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন তিনি। চোখে -মুখে ফুটে উঠেছে সেই আভা।
নুসরতের করা প্রতিটা ছবি ও ভিডিয়োতে ট্রোল করেন বহু নেটিজেন। তবে এত কটাক্ষ, নেগেটিভিটির মধ্যে বহু নেটাগরিক সমর্থনের হাতও বাড়িয়ে দেন নায়িকার দিকে। তাঁদের মতে, 'স্বাধীন নারী' কিংবা 'সিঙ্গেল মাদার' হওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী উদারণ নুসরত জাহান। এদিকে একেবারে 'কেয়ার নট' অ্যাটিটিউড রেখেছেন নায়িকা। তিনি দিব্যি উপভোগ করছেন তাঁর মাতৃত্ব। এমনকি আগামী বছরের শুরুতেই তিনি কাজে ফিরবেন বলে শোনা যাচ্ছে। বলাই বাহুল্য সকলেই এখন অপেক্ষা করছেন ছোট্ট অতিথির। এরপরই কী সন্তানের পিতৃত্ব নিয়ে মুখ খুলবেন নায়িকা? তা বলবে সময়...