ছবির ঘোষণা হয়েছিল আগেই। অতিমারীর জন্য ভার্চুয়াল মাধ্যমেই কাজ এগিয়েছে। বুধবার হয়ে গেল স্ক্রিপ্ট রিডিং সেশনও। কথা হচ্ছে চলচ্চিত্র পরিচালক অনীক দত্তের (Anik Dutta) পরবর্তী ছবি 'অপরাজিত' (Aparajito) নিয়ে। ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনের ব্যানারের এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee)।
এই বছর সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ (100 Years Of Satyajit Ray)। মূলত তাঁকে ট্রিবিউট জানাতেই এই ছবি তৈরির কথা ভেবেছেন নির্মাতারা। তবে একই নামের ছবি খোদ সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) 'অপু ট্রিলজি' (Apu Trilogy) -র দ্বিতীয় ভাগে ১৯৫৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল। তবে নামে মিল থাকলেও কিংবা 'পথের পাঁচালী' (Pather Panchali) থেকে অনুপ্রাণিত হলেও এটা একেবারেই রিমেক না। অনীক দত্ত আজতক বাংলাকে জানালেন, "এই ছবির প্রি- প্রোডাকশন এখন চলছে জোর কদমে। বাড়ি থেকে যতটা সম্ভব কাজ এগোচ্ছে। তবে বাইরে সেভাবে বেরনো যাচ্ছে না বলে রেকি ঠিক মতো করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই এতটা কাজ এগোবে আগে ভাবতে পারিনি।"
পরিচালক আরও যোগ করলেন, "এটা একেবারেই কোনও বায়োপিক না। সত্যজিৎ রায়ের গল্প থেকে এটা সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে মূল যে চরিত্র, তাঁর নাম 'অপরাজিত'। একটা রেফারেন্স থাকলেও 'অপরাজিত'-র সঙ্গে এর কোনও মিল নেই। ঠিক কীভাবে 'পথের পদাবলী' তৈরি হল তা নিয়ে গল্প। এই ছবি নিয়ে বহু দিন আগেই আমার বাবুর (সন্দীপ রায়) সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল।"
অপরাজিত রায়কে (আবির চট্টোপাধ্যায়) কেন্দ্র করেন 'অপরাজিত' ছবির মূল গল্প। 'পথের পদাবলী' (Pather Podaboli) নামক একটি ছবি তৈরি করা তাঁর স্বপ্ন ও তা সম্পন্ন হওয়ার আগে নানা বাধা -বিপত্তি ও প্রতিকূলতা নিয়ে ছবির গল্প গেঁথেছেন অনীক দত্ত। তবে ছবির প্রেক্ষাপট পাঁচের দশক। সময়টা ১৯৫৫ সাল। চৌত্রিশ বছরের অপুর মাথায় প্রায় দশ বছর আগে থেকে সিনেমার পোকা নাড়াচাড়া করতে থাকে। নতুন ধারার ছবি সে তৈরি করবে এমনটাই ইচ্ছে তাঁর।
শেষমেশ সে বানিয়ে ফেলে তাঁর জীবনের প্রথম ছবি 'পথের পদাবলী'। তিন বছরের লড়াইয়ের পর সে পায় বিশ্বসেরার পুরস্কার, ঝুলিতে আসে বহু সম্মান - স্বীকৃতি। এই অসাধ্য সাধন কীভাবে ঘটলো, সেই গল্পই অপু একটি সাক্ষাৎকারে বলে। বলা চলে, 'অপরাজিত হচ্ছে' অপুর জীবনের প্রথম সিনেমা 'অপুর পদাবলী' বানানোর আখ্যান। সব ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবর মাস থেকে শুরু হবে ফিরদৌসুল হাসান ও প্রবাল হালদার নিবেদিত এই ছবির শ্যুটিং।
প্রসঙ্গত, এর আগেও 'মেঘনাদবধ রহস্য', 'আশ্চর্য প্রদীপ', 'ভূতের ভবিষ্যৎ', 'ভবিষ্যতের ভূত' - ইত্যাদি ছবিগুলির মাধ্যমে যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছেন অনীক দত্ত। এইবার উপরি পাওনা হিসাবে তাঁর ছবির বিষয়বস্তুর সঙ্গে যোগ রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের। তাই বলাই বাহুল্য দর্শকেরা অপেক্ষা করে থাকবেন আরও একটি অনবদ্য সৃষ্টির।