বাংলায় হারিয়ে যাওয়া বহু লোকশিল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য লোক পালা 'গম্ভীরা'। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায় হিন্দুসমাজে এই গম্ভীরা গানের উৎপত্তি। গম্ভীরা নৃত্যটি মালদহ জেলা জুড়ে চৈত্র সংক্রান্তির উৎসবের সময় প্রদর্শিত হয়। সেই হারিয়ে যাওয়া শিল্পকে কেন্দ্র করে মোজোটেল এন্টারটেনমেন্ট অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন এবং বায়োস্কোপ ভেঞ্চারসের নতুন ছবি 'নানা হে'। সম্প্রতি শুরু হয়েছে ছবির শ্যুটিং।
ছবিতে রয়েছেন একঝাঁক টলিপাড়ার শিল্পীরা। অভিনয় করছেন খরাজ মুখোপাধ্যায়, সৌরভ দাস, শ্রীতমা দে, বিমল গিরি, শ্রেয়া ভট্টাচার্য, অঞ্জন কাঞ্জিলাল, প্রল্লাদ সর্দার ও কাঞ্চনা মৈত্রর মতো শিল্পীরা। 'নানা হে' যৌথভাবে পরিচালনা করবেন অঞ্জনাভ রায় এবং সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। এই গল্পের কাহিনিকার অঞ্জনাভ রায়, সিনেমাটোগ্রাফির দায়িত্ব সামলাবেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।
মালদহের গম্ভীরার বিশেষত্ব হল মুখোশের ব্যবহার৷ স্থানীয় সূত্রধর সম্প্রদায় নিম ও ডুমুর গাছের অংশ বিশেষের সাহায্যে মুখোশগুলি তৈরি করে। এই ছবিতে খরাজ একজন গম্ভীরা শিল্পী বাঘারু, যে ফরমায়েশ করা বানিজ্যিক গম্ভীরা করবেন না বলে খানিকটা স্বেচ্ছা নির্বাসন নিয়ে নিজেকে গৃহবন্দী করেছেন। তার কাছে হঠাৎই গম্ভীরার উপর গবেষণামূলক কাজের জন্য মহানগর থেকে আসে একটি মেয়ে (শ্রীতমা দে)।
বাঘারুর সঙ্গে কথপোকথন করতে করতে সেও হারিয়ে যায় গম্ভীরার ইতিহাস এবং প্রান্তিক মানুষদের না জানা শিল্পযাপনের মধ্যে। শুধু তাই নয় এই শিল্প পুরোপুরি পাল্টে দেয় একজন আদ্যপ্রান্ত শহুরে ছেলে। যে, সভ্যতার উন্মাদনায় উন্মত্ত হওয়াকে জীবন মনে করত। এই চরিত্রে অভিনয় করছেন সৌরভ দাস। একটা হারিয়ে যেতে বসা লোকশিল্প কীভাবে এই তিনজন মানুষের ব্যক্তিগত জীবন, তাদের জীবনের ওঠাপড়া, টানাপোড়েনের সঙ্গী হয়ে যায়, সেই নিয়েই তৈরি হবে 'নানা হে'।
মোজোটেল এন্টারটেনমেন্টের কর্ণধার সুমনা কাঞ্জিলাল বলেন, "এই ছবির সবচেয়ে বড় সম্পদ এর সঙ্গীত। প্রায় নয়টি অসাধারণ গান তার মধ্যে বেশীরভাগ লোকসঙ্গীত। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন তীর্থ ভট্টাচার্য ও অঞ্জনাভ রায়। গান গেয়েছেন তীর্থ ভট্টাচার্য, দুর্নিবার সাহা, শ্রেয়া ভট্টাচার্য, আহেলি সরকার। 'নানা হে' শুধুমাত্র একটা সিনেমা নয় , এটা হারিয়ে যাওয়া লোককথার দলিল।"