টলিপাড়ায় যেমন নতুন সম্পর্ক গড়ে, তেমন একের পর এক সম্পর্ক ভাঙার গুঞ্জনও শোনা যায়। সত্যি স্টুডিওপাড়ার সম্পর্কের সমীকরণ বোঝা খুবই কঠিন। গত প্রায় এক মাসে একের পর এক টলি তারকার বিচ্ছেদের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কাদের দাম্পত্যে চিড় ধরল?
যিশু- নীলাঞ্জনা
দীর্ঘ ২০ বছরের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে যিশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তর। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে এরকমই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে বেশ কিছু দিন ধরেই। যা প্রকাশ্যে আসার পরে, রীতিমতো হতবাক সকলে। টিনসেল টাউনের গুঞ্জন, যিশু- নীলাঞ্জনার সাজানো সংসারে চির ধরেছে এক গুজরাতি তনয়ার জন্যে। যিশুর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, কলকাতার বাইরে কাজ করতে করতে নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন যিশু এবং সেই নতুন প্রেমিকা কোনও অভিনেত্রী নন। নিজের আপ্ত সহায়ক- শিনাল সুর্তির সঙ্গেই নাকি প্রেম করছেন যিশু। শোনা যাচ্ছে, শুধু প্রেম নয়, শিনালের সঙ্গে নাকি মায়ানগরীতে এক প্রকার সংসার পেতেছেন অভিনেতা। অর্থাৎ মুম্বইতে সহবাস করছেন যিশু- শিনাল। কর্মসূত্রে, প্রায় ৫ বছর ধরে যিশুর সমস্ত কাজ সামলাচ্ছেন তিনিই। যদিও এই বিষয়টি দু'জনের কেউই নিশ্চিত করেননি।
অর্জুন- সৃজা
এই মুহূর্তে আরও এক পাওয়ার কাপলের বিচ্ছেদের গুঞ্জনে সরগরম বাংলা ইন্ডাস্ট্রি। অর্জুন চক্রবর্তী ও তাঁর স্ত্রী সৃজা সেনেরও নাকি বিচ্ছেদ হতে চলেছে। সম্প্রতি সৃজা, অর্জুনকে ইনস্টাগ্রামে আনফলো করেছেন। এমনকী, অভিনেতার সঙ্গে তাঁর সমস্ত ছবিও মুছে দেন। এর কারণ হিসাবে শোনা যাচ্ছে অর্জুনের পরকীয়া। টলিপাড়ার অন্দরের খবর, আমেরিকায় বঙ্গ সম্মেলনে গিয়ে এক নায়িকার সঙ্গে অর্জুনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সেই ঘনিষ্ঠটা এতটাই বাড়াবাড়ি পর্যায় যায় যে, সেটা অর্জুনের স্ত্রীর কানে আসতে খুব বেশি সময় লাগেনি। দুরত্ব বাড়ে জুটির মধ্যে। যদিও পুরো বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের কাছে অস্বীকার করেন অর্জুন। শুধু তাই নয়, সৃজা যে ভাল আছেন তা এক প্রকার প্রমাণ করতে অর্জুন, সম্প্রতি স্ত্রীয়ের সঙ্গে একটি ছবিও পোস্ট করেন।
ঋষি- দেবযানী
টলিপাড়ার চর্চা, দীর্ঘ ১২ বছরের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে ঋষি কৌশিক ও দেবযানী চক্রবর্তীর। এই আলোচনা দ্বিগুণ হয় সম্প্রতি, অভিনেতার ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিও থেকে। এরপর ঋষির বিরুদ্ধে সরাসরি পাল্টা অভিযোগ আনেন দেবযানী। নাম উহ্য রেখেই, এক দম্পতির পথচলার গল্প শেয়ার করেন ঋষি। এই গল্প শুনেই সকলেই অনুমান করেন, নিজের জীবনের গল্পই তুলে ধরেছেন তিনি। অভিনেতা বলেন, সেই মেয়েটি নাকি তাঁর স্বামীকে কথায় কথায় চাকরির খোঁটা দেন। স্বামীর উপর সর্বক্ষণ খবরদারি করেন, কিন্তু খোঁজখবর নেন না। এমনকী মেয়েটিকে সুস্থ পথে বিচ্ছেদের কথা জানালেই তিনি নাকি থানা-পুলিশ, মহিলা কমিশন, বড় কর্তাদের ভয় দেখায়। ঋষি যোগ করেন, "ধূমপান, মদ্যপান, রাত্রে পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি, একেই কি বলে আধুনিকা নারী...?" ঋষি কৌশিক নেটিজেনদের থেকে জানতে চেয়েছেন, "ছেলেটির কী করা উচিত?"
এদিকে সম্প্রতি ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন দেবযানী। তিনি লেখেন, "বিগত কয়েকদিন যাবৎ সমাজমাধ্যমে করা আমার স্বামীর কিছু পোস্ট নিয়ে আমাকে বারবার কিছু অবাঞ্ছিত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পুরো বিষয়টি আমার কাছে অত্যন্ত কুরুচিকর, সম্মানহানিকর এবং বিব্রতকর। এবিষয়ে প্রথমেই আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে আমার বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ করা হয়েছে তার প্রতিটি সম্পূর্ণ মিথ্যে, অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অন্যায্য এবং কাল্পনিক। এগুলি করার একমাত্র কারণ আমার সামাজিক সম্মানহানি করা, আমার ক্ষতি করা এবং পোস্টদাতার নিজের নীচ উদ্দেশ্য সাধন করা।"
অর্ণব- ইপ্সিতা
টেলি অভিনেতা অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায় ও ইপ্সিতা মুখোপাধ্যায় তাঁদের সম্পর্কে ইতি টেনেছেন। এই খবরই এখন শোনা যাচ্ছে, স্টুডিও পাড়ার আনাচে-কানাচে। দু'জনেই সোশ্যাল পেজ থেকে মুছেছেন সমস্ত ঘনিষ্ঠ ছবি। এমনকী আংটি বদলের ছবিও মুছে ফেলেছেন অর্ণব। সংবাদমাধ্যমকে অভিনেতা বলেছেন, "আমাদের আইনি বিয়ে হবে না। কারণ আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে যাচ্ছে।"
অর্ণব -ইপ্সিতার মধ্যে প্রথম দূরত্ব বাড়ে অভিনেত্রীর বড় পর্দায় পা রাখার সময় থেকে। 'প্রসেনজিৎ ওয়েডস ঋতুপর্ণা' ছবিতে মুখ্য চরিত্রে দেখা যায় ইপ্সিতাকে। কিছুদিন আগে একই মেগা 'জল থই থই ভালোবাসা'-তে অভিনয় করেন দু'জনেই। তবে এরপর ফের দূরত্ব তৈরি হয় দুই টেলি তারকার মধ্যে। তবে বারবার আড়ি- ভাব হলেও, জুটির ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, এবারের অশান্তি অনেকটা বড় এবং আর তাঁদের কাছাকাছি আসার কোনও সম্ভাবনা নেই।
সোহিনী- কল্লোল
টেলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, আরও এক তারকার বিচ্ছেদের কথা। এবার বিচ্ছেদের পথে টেলি অভিনেত্রী সোহিনী গুহ রায় ও তাঁর স্বামী কল্লোল চৌধুরী? সোশ্যাল মিডিয়ায় উঁকিঝুঁকি মারলে প্রায়ই দেখা যেত সোহিনী- কল্লোলের নানা আবেগমাখা মুহূর্ত। কিন্তু হঠাৎই নেটমাধ্যম থেকে অদৃশ্য হয় দু'জনের ছবি, ভিডিও। নিজেদের সব ছবি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মুছে দেন অভিনেত্রী। বছর আগে এরকমই খবর শোনা যায়। দূরত্ব বাড়ে দু'জনের মধ্যে। তবে ফের দু'পক্ষের অভিমানের বরফ গলে, দূরত্ব মিটে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায় জুটির একসঙ্গে নানা ছবি। ঘুরতে যাওয়া থেকে সিনেমা দেখা, নানা মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন সোহিনী ও কল্লোল। এই খবরে দারুণ খুশি হয়েছিলেন অভিনেত্রীর ফ্যানেরা।
তবে এবার ফের দুঃসংবাদ তাদের জন্য। শোনা যাচ্ছে, সংসারে চিড় ধরেছে সোহিনী- কল্লোল। এমনকী একে অপরকে ইনস্টাগ্রামে আনফলোও করেছেন। প্রশ্ন উঠছে এবার কি বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটছেন জুটি? সে প্রসঙ্গে দু'জনের কেউই এখনও খোলামেলা কথা বলেননি।