ভ্যাকসিন নেওয়ার পর যদি কোনও কোভিড রোগীর সংস্পর্শে আসেন তাহলে কী করবেন?
বলা হচ্ছে নিজেরে এবং নিজের পরিবারের সদস্যদের এই অতিমারির প্রকোপ থেকে বাঁচাতে ভ্যাকসিন নেওয়া খুবই জরুরি। সেই সঙ্গে ভ্যাকসিন নিলে আগামী দিনে করোনার নতুন ঢেউ থেকে কিছুটা হলেও, মানব সমাজকে বাঁচানো যাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে যখন এই অতিমারির নতুন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও যদি আপনি কোনও কোভিড রোগীর সংস্পর্শে আসেন তাহলে কী করবেন? রইল সেই বিষয়েই কিছু টিপস-
ভ্যাকসিন নিলে আপনি অনেকটাই নিরাপদ এবং সংক্রমণের সম্ভাবনাও অনেক কম
ভ্যাকসিন নিলে আপনার শরীরে কোভিডের বাসা বাধার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। ফলে, বিপদেও অনেকটা কাটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড টিকা নেওয়ার পর যদি কোনও ব্যক্তি করোনা সংক্রমণের শিকার হন, তাহলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতি থেকে মৃত্যুর ভয়, অনেকটাই কমে যায়। যদিও, কোভিড টিকা নেওয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও কোভিড পজ়িটিভ রোগীর সংস্পর্শে এলে কতটা বিপদ?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO-এর তথ্য অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি ২টি ডোজ় ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও কোভিড আক্রান্ত হতে পারেন। তবে সেই ক্ষেত্রে বিপদ অনেকটাই কম। আপনি যদি ভ্যাকসিন নিয়ে থাকে, অথচ আপনার বিপরিতের মানুষটি যদি কোভিড আক্রান্ত হন, তাহলেও আপনি আক্রান্ত হতে পারেন। তবে সেই সময় আগের মতো ভয়ের কারণ নেই।
আপনার কি সেক্ষেত্রে নিজেকে আইসোলেট করতে এবং পরীক্ষা করতে হবে?
এ ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট গাইডলাইন দেওয়া নেই কোথাও। তবে, যে গাইডলাইন দেওয়া রয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, সম্পূর্ণ ভাবে নিজেকে কোয়ারেনটাইন করার প্রয়োজন নেই যাদের ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ়ই নেওয়া হয়ে গিয়েছে। যদিও, প্রতি ক্ষেত্রেই পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সেই সঙ্গে মাস্ক পড়তে হবে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
কী কী করবেন না ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও
চিকিৎসকরা বলছেন, ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে গেলেও, বর্তমানে স্বাভাবিক জীবন যাপনের ঝঁকি এখনই নয়। যেমন মাস্ক পড়ে বাইরে যেতে হচ্ছে তেমনই যেতে হবে। সেই সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও কি আপনি অন্যের মধ্যে ভাইরাস ছড়াতে পারেন?
ভ্যাকসিন নেওয়ার পর আপনার থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা অনেকটাই কম। এছা়ড়াও, এটা দেখা গেছে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কেউ যদি কোভিড পজ়িটিভ রোগীর সংস্পর্শে আসেনও, তারপরও তাঁর থেকে অন্যের দেহে সেই ভাইরাস ছড়ানোর প্রবণতা থাকে না। ফলে, একটি এলাকায় যত বেশি মানুষের দেহে এই ভাইরাসের প্রভাব থাকবে, ততই সেখানে ছড়ানোর সম্ভাবনা কম।
ভাইরাল লোড কতটা বেশি থাকে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর?
সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাদের ভ্যাকসিন নেওয়া শেষ তাদের দেহে করোনার প্রভাবও কম। আক্রান্ত হলেও, তা এতটাই সমান্য প্রভাব ফেলছে যে তাতে তেমন ভাবে বোঝার উপায় নেই। তাই মনে করা হচ্ছে তাদের দেহে ভাইরাল লোডও কম। যদিও, এই তত্ত্ব নিয়ে দ্বিমত ও রয়েছে। অনেকের মতে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর শরীরে ভাইরাসের প্রভাব কম হলেও, তার মানে এটা নয়, যে তার দেহে ভাইরাল লোড কম হবে।
বিপদের আশঙ্কা কোন ক্ষেত্রে বেশি?
বলা হচ্ছে যারা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ় নিয়েছেন, তাদের শরীরে ভয়ঙ্কর রূপে বাসা বাঁধতে পারে করোনা। বিশেষ করে এই ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব সব থেকে বেশি পড়তে পারে। তাই, ভ্যাকসিনের একটি ডোজ় নেওয়ার পর কোনও ভাবেই মনে করা উচিত নয়, যে তিনি নিরাপদ। আবার, যারা সবেমাত্র দ্বিতীয় ডোজ় নিয়েছেন তাঁদের দেহেও অনায়াসে বাসা বাঁধতে পারে করোনার শক্তিশালী প্রভাব। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেহে অন্টিবডি তৈরি হয় না। তার জন্য রীতিমতো ১৪ থেকে ২০ দিনের একটা সময় লাগে। এই সময় কাউকে বাইরে যেতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকরা।