দেশে দ্রুত বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ মানুষ। এরই মাঝে আমেরিকার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেটা সায়েন্টিস্ট ভ্রমর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বললেন ইন্ডিয়া টুডের কনসাল্টিং এডিটর রাজদীপ সরদেশাই। ভারতে সংক্রমণের পিক কবে নাগাদ হতে পারে, আলোচনায় উঠে এল সেই প্রসঙ্গও।
প্রশ্ন - ভারতে করোনার পিক কবে হবে? রোজই ২ লক্ষ সংক্রমণ হচ্ছে, সংক্রমণ আর কতো বাড়বে?
ভ্রমর মুখোপাধ্যায় - আমরা যা দেখতে পাচ্ছি তা জনসাধারণের দৃষ্টিকোণকে কিছুটা আস্বস্ত করবে। আমরা দিল্লি, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গে দ্রুত বেশি কেস দেখতে পেয়েছি। এই সমস্ত জায়গায় করোনা চরমে পৌঁছে গিয়েছে। আগামী ৭-১০ দিনে করোনার কেস কমতে পারে। দিল্লিতে পজিটিভিটি রেট বাস্তবে কিছুটা কম। তবে আমার ধারণা আগামী ৭ দিনে কিছু রাজ্য চরমে পৌঁছবে। জানুয়ারির শেষে ভারতে চরমে পৌঁছবে করোনা।
প্রশ্ন - ওমিক্রনের কেস যত তাড়াতাড়ি বাড়ছে, তত তাড়াতাড়িই কমছে?
ভ্রমর মুখোপাধ্যায় - এমনটাই মনে হচ্ছে। ওমিক্রন খুবই সংক্রামক। এটি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। তবে দীর্ঘদিন স্থায়ী হবে না, এমনটাই সংকেত পাওয়া যাচ্ছে।
প্রশ্ন - পজিটিভিটি রেট বাড়ছে। আমাদের কি টেস্ট পজিটিভিটি রেট দেখা উচিত, নাকি হাসপাতালে ভর্তির হার দেখা উচিত? হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ওপরে কি নজর দেওয়া উচিত?
ভ্রমর মুখোপাধ্যায় - দুনিয়ার অন্যান্য দেশে যেখানে হাসপাতালে ভর্তির সঠিক ডেটা আছে, সেখানে আমি সহমত যে আমাদেরও হাসপাতালে ভর্তির হারের ওপরে নজর দেওয়া উচিত। কিন্তু ভারতে হাসপাতালে ভর্তির সঠিক তথ্য নেই। যদি আমাদের কাছে সঠিক তথ্য থাকত, তাহলে আমি আপনার সঙ্গে সহমত হতাম।
প্রশ্ন - এমন অনেক রাজ্য আছে যেখানে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। এছাড়া কম ভ্যাকসিন যুক্ত রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে। আপনার কি মনে হয় এটা উদ্বেগের বিষয়?
ভ্রমর মুখোপাধ্যায় - ভ্যাকসিনেশানই শেষ উপায়। এত মানুষক পজিটিভ হচ্ছেন। তবে অনেক কম জনকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে। অন্য ঢেউয়ের থেকে পরিস্থিতি এখনও আলাদা। আসলে টিকাকরণের ফলে ভারতে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় পরিবর্তন এসেছে। যদি আপনি অন্য দেশের ডেটা দেখেন, তাহলে দেখতে পাবেন যে, ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাঁদের বেশিরভাগই ভ্যাকসিন নেননি। তাই যে সমস্ত রাজ্যে নির্বাচন হতে চলেছে সেই সমস্ত জায়গার মানুষকে ভ্যাকসিন নেওয়া কোভিড গাইডলাইন মেনে চলার আবেদন জানাচ্ছি।
প্রশ্ন - এই ঢেউ কি ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হয়ে যাবে, নাকি মার্চে চলে যাবে?
ভ্রমর মুখোপাধ্যায় - আমার বিশ্বাস, ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই ঢেউ থেমে যাবে। তবে সবটাই মানুষের আচরণের ওপরে নির্ভরশীল। আমরা জানি না গঙ্গাসাগরের মতো মেলা আয়োজনের পর কী হবে। যদিও পরিসংখ্যান বলছে, জানুয়ারির শেষের মধ্যে এটি পিকে উঠবে এবং ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেটি শেষ হয়ে যাবে।