আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটায় পাঁচ বছরের শিশুর ধর্ষণ ও খুন। ঘটনার পর পরই অভিযুক্ত প্রতিবেশীকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
সেই ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটল না। হঠাৎ পুলিশের কাছে নিজে থেকেই আত্মসমর্পণ করল এক যুবক। তাহলে কি এটি গণধর্ষণের ঘটনা ছিল? গণপিটুনিতে মৃত 'অভিযুক্ত'রই বা এর সঙ্গে যোগ কী? গোটা বিষয়টি নিয়ে তুঙ্গে ধোঁয়াশা। গোটা বিষয়টি নিয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি পুলিশ। তদন্তের স্বার্থেই হয় তো এমনটা করা হচ্ছে। কিন্তু এই জটিলতা, ধোঁয়াশা মানতে নারাজ এলাকাবাসী। শনিবার দুপুরে এই ঘটনা কেন্দ্র করে ফালাকাটার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়াল। রাস্তা আটকে বিক্ষোভ, স্লোগান দিতে শুরু করেন স্থানীয়রা। রীতিমতো 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' স্লোগান দিতে শোনা যায় তাঁদের।
পুকুরের ধার থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছিল
শুক্রবার বিকেলের ঘটনা। পাঁচ বছরের মেয়েকে বাড়ির দাওয়ায় রেখে চাষের কাজে গিয়েছিলেন মা-বাবা। বাড়ি এসে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে খোঁজ শুরু করেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। কাছেই একটি পুকুরের কাছ থেকে মেলে একরত্তির দেহ।
স্থানীয়দের দাবি, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে পাঁচ বছরের মেয়েটিকে। তাঁরা দাবি তোলেন, জিলিপির লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
এরপরেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক প্রতিবেশীকে ধরেন স্থানীয়রা। তাকে গাছে বেঁধে ফেলা হয়। চলে তুমুল মারধর।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। সেখানে স্থানীয়দের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা। এরপর অভিযুক্তকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান পুলিশকর্মীরা। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর থেকেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পাশাপাশি রাগে-ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন স্থানীয়রা। দাবি করতে থাকেন, এর পিছনে একজন নয়, একাধিক অভিযুক্ত জড়িত থাকতে পারে। ফালাকাটা যাওয়ার যে মূল রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। মূল অভিযুক্তের গ্রেফতারির দাবি তোলেন তাঁরা।
গোটা বিষয়টির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এবার পুলিশে এসে নিজেই ধরা দিল এক যুবক। তাহলে কী আলিপুরদুয়ারের ঘটনাটি গণধর্ষণেরই কেস ছিল? পুলিশকর্মীরা জানাচ্ছেন, আপাতত বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ। অভিযুক্তের কড়া শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা।