স্কুলে মদ্যপান ও অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) ট্রাফিক কলোনী এলাকায়। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই রাতের অন্ধকারে ওই এলাকার রেলওয়ে মহিলা সমিতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে অসামাজিক কাজকর্ম (Anti Social Activities)। বসছে নেশার আসর। এর প্রতিবাদ জানান স্কুলের শিক্ষিকা এবং এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি। অসামাজিক কাজের ভিডিও এলাকায় ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় জেলার রাজনৈতিক মহলে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ (Police)।
স্কুলের শিক্ষিকা সৌমিতা সাহার অভিযোগ, "দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই রাতের অন্ধকারে স্কুলে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ। বসছে মদ জুয়ার আড্ডা। দিনের বেলাতেও চলে বহিরাগতদের অত্যাচার। এমনকি ছাত্রছাত্রীরা একা বাথরুমে যেতেও ভয় পায়।" স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষিকা বিজলি মণ্ডলের অভিযোগ, "সম্প্রতি অত্যাচার মাত্রা ছাড়া হয়।" যার জেরেই তাঁরা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি শেখ পিন্টুকে বিষয়টি জানান। বহিরাগতদের তাণ্ডবে কার্যত ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন এক বৃদ্ধও। জানা গেছে, ওই বৃদ্ধ স্কুলেই থাকেন। তিনি জানাচ্ছেন, "কিছু বললে ওরা মারবে। রাত্রে অনেক জন আসে। মদ গাঁজা খায়। বারণ করলে গালাগালি দেয় । মারধর করে চশমায় ভেঙে দিয়েছে। ভয় লাগে।"
এদিকে বিষয়টি জানতে পেরে গোটা ঘটনার ভিডিও বানান শেখ পিন্টু। সেই ভিডিও এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। স্কুলে পৌঁছান আইএনটিটিইউসির পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি ইফতিকার আহমেদ, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক নুরুল আলম সহ দলের বেশকিছু কর্মী সমর্থক। ঠিক সেই সময়ই স্কুল পৌঁছান শেখ পিন্টু ও তাঁর এক সঙ্গী শেখ মুন্না । ভিডিও করা নিয়ে বচসা শুরু হয়ে যায় উভয় পক্ষের মধ্যে। নুরুল আলমের অভিযোগ, "সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্র করেই তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বকে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হয়ত ভিডিও বানানোর জন্যই ফেলা হয়েছে মদের বোতল। এর পেছনে বিজেপি - সিপিএমের ছেলেরা যুক্ত।" তিনি আরও বলেন, "স্কুল সম্প্রসারণের কাজ চলছে, জানলা দরজা কিছু নেই নতুন বিল্ডিং-এ । তাই রাত্রি ১১ তার পর কেউ যদি স্কুল চত্বরে ঢোকে পড়ে তার দায়িত্ব আমাদের নেওয়া সম্ভব নয় । পুলিশকে প্রশাসনকে বলতে হবে।" যদিও আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব অবশ্য স্বীকার করে নেন, 'ঘটনা মিথ্যা নয়।' তবে তাঁরা এও বলেন, 'রাত্রে লাঠি নিয়ে পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসন আমাদের দেয়নি যে খেয়াল রাখবো কে মদ খাচ্ছে, কে চুরি করেছে।'
এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শেখ পিন্টু থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পিন্টুর অভিযোগ, স্কুলে অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করায় তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান ডিএসপি হেড কোয়ার্টার সৌভিক পাত্র। পাশাপাশি স্কুলে যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে তার জন্যও পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।