CDS Bipin Rawat: দেশের প্রথম সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াত (CDS Bipin Rawat)-এর মৃত্যুতে ফেসবুকে 'উল্লাস'। লালবাজারের কড়া ধমকে বহু পোস্ট ডিলিট। এই ঘটনা নিয়ে প্রবল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কী করে মৃত্যু নিয়ে মানুষ এমন প্রতিক্রিয়া দিতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
দুর্ঘটনায় মৃত্যু
ভয়াবহ কপ্টার দুর্ঘটনায় তামিলনাড়ুতে প্রাণ গিয়েছে দেশের সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াতের। দেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান দেশের তিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদে থাকা বিপিন রাওয়াতের মৃত্যুতে শুধু ভারতই নয়, শোক প্রকাশ করেছে অনেক দেশের রাষ্ট্রনেতা এবং সেনানায়করা।
শোকের মাঝে
তবুও যেন ভারতের মধ্যে থেকেই এক খন্ড ভিন্নমতের দেখা মিলল সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। কপ্টার দুর্ঘটনায় বিপিন রাওয়াতের মৃত্যু নিশ্চিত হতেই ফেসবুক, টুইটার-সহ সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইলে উল্লাস উদযাপন করতে দেখা গেল একশ্রেণীর নেটিজেনদের। তা নিয়ে প্রবল সমালোচনা হয়েছে তাদের।
লজ্জাজনক পোস্ট
দেশের কোটি কোটি জনগণ শোকজ্ঞাপন এবং শ্রদ্ধা জানালেও একশ্রেণীর নেট নাগরিকদের দেখা গেল সেনাকর্তা বিপিন রাওয়াতের মৃত্যুর পক্ষে সওয়াল করতে। কেউ কেউ বিপিন রাওয়াত এর মৃত্যুতে আনন্দ প্রকাশ করে নিজের দার্শনিক উপলব্ধি প্রকাশ করছেন ফেসবুকে।
আবার কেউ কয়েকদিন আগে নাগাল্যান্ডে সেনার গুলিতে ১৪ জন গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করে তামিলনাড়ুর কুন্নুরে ঘটে যাওয়া কপ্টার দুর্ঘটনাকে, পরোক্ষে 'উচিত শিক্ষা' বলেই মনে করছেন।
এক শ্রেণীর নেট-নাগরিকদের এমন উচ্ছ্বাসে স্বভাবতই তীব্র আপত্তি জানিয়েছে সমাজের প্রায় সব মহল। যার ফলে লালবাজার সাইবার থানায় উপচে পড়েছে অসংখ্য অভিযোগ।
পুলিশে একের পর অভিযোগ
পুলিশ সূত্রে খবর, বহু নাগরিক সাইবার ক্রাইম থানা ইমেইল করে আবার কেউ ফোনের মাধ্যমে ফেসবুক এবং টুইটারে এমন আপত্তিকর পোস্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পদক্ষেপ করে লালবাজার সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, বায়ুসেনার কপ্টার দুর্ঘটনার দিন সন্ধে থেকেই এমন অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়তে শুরু করেছে সাইবার থানায়।
কলকাতা পুলিশ জানাচ্ছে
কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সাইবার) বিদিশা কালিতা বলেন, "এমন বেশ কিছু পোস্ট আমাদের নজরে আসার পর ফেসবুকের কাছে সংশ্লিষ্ট প্রোফাইল এর ব্যাপারে জানানো হলে, সেই পোস্টগুলি তৎপরতার সাথে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের তরফে সরিয়ে নেওয়া হয়, ওই একই ব্যক্তি একই ধরনের পোস্ট করতে থাকলে আমরা যথাযথ আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নেব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।"
কড়া ব্যবস্থা
লালবাজার সূত্রে আরও খবর, বহু ক্ষেত্রেই বিতর্কিত পোস্ট নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর, সংশ্লিষ্ট ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ফোন করে কড়া ভাষায় সতর্ক করা হয়। আপত্তিকর ওই ফেসবুক পোস্টগুলি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয় অভিযুক্তদের।
আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি
লালবাজারের সূত্রে দাবি, বহু ক্ষেত্রে সরাসরি ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেসবুক পোস্ট সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি লালবাজারের থেকে কড়া ধমক খেয়ে অনেকেই নিজেদের ফেসবুক পোস্ট মুছে ফেলেন। লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, আমাদের সতর্কতার পরেও কেউ ফের একই পোস্ট আপলোড করলে, আমরা আইনি পদক্ষেপ করব।
কিন্তু তার জন্য সেই পর্যাপ্ত নজরদারি কি আদৌ সোশ্যাল মিডিয়ায় করা সম্ভব পুলিশের পক্ষে? কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সাইবার) বিদিশা কালিতা বলেন, "লালবাজার সাইবার ক্রাইম থানার সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আধিকারিকরা প্রথম দিন থেকেই একটি ডেটাবেস রেকর্ড করা শুরু করে দিয়েছেন। যে সমস্ত প্রোফাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছিল এবং যারা পোস্ট ডিলিট করে দেন তাদের সেই তথ্য ওই ডেটাবেসে রাখা থাকছে। সেই ডেটাবেসের তথ্য অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রোফাইল গুলোর উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। ভবিষ্যতেও ওই একই প্রোফাইল থেকে একই পোস্ট করা হলেই আমরা আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করব।"