শ্রদ্ধা হত্য়াকাণ্ডের মতো দিল্লি পাণ্ডবনগরের খুন এখন শিরোনামে। আসলে রামলীলা ময়দান সংলগ্ন এলাকা থেকে বেশ কয়েক মাস ধরে মানবদেহের টুকরো পাচ্ছিল পুলিশ। আর তার তদন্ত নেমে ঘটনার কিনারা করে দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
মৃত ব্যক্তির নাম অঞ্জন। তাকে খুনের অভিযোগ তার স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে। পরিকল্পনামাফিক অঞ্জনকে খুন করা হয়। তারপর দের ফ্রিজে ভরে রাখা হয় মাসের পর মাস। সেই দেহাংশ মা ও ছেলে ফেলে দিয়ে আসত বাড়ির কাছেই মাঠে। ঘটনায় অভিযুক্ত পুনম ও তার ছেলে দীপককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাাবাদ করে পুলিশ যে তথ্য পেয়েছে তা সিনেমার স্ক্রিপ্টকেও হার মানাবে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই খুনের নেপথ্যে রয়েছে সন্দেহ ও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক।
আরও পড়ুন : অল্প পুঁজিতে কী ব্যবসা করবেন বুঝতে পারছেন না? মাত্র ১০ হাজার টাকায় শুরু করুন এই বিজনেস
ফ্রিজে রাখা ছিল দেহ
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে রামলীলা ময়দানের আশেপাশের বাড়িগুলির ফ্রিজ তল্লাশি করে। কোথাও কোনও পচা গন্ধ আসছে কিনা তাও জিজ্ঞাসা করে স্থানীয়দের। কিন্তু তারপরও কোনও ক্লু পাননি তদন্তকারীরা। তারপর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে খুনের রহস্যের কিনারা করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
কে এই অঞ্জন?
সোমবার দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ জানিয়েছে, পাণ্ডবনগরের রামলীলা ময়দানে পাওয়া মৃতদেহের টুকরোগুলি অঞ্জন দাসের। সে বিহারের বাসিন্দা। তার স্ত্রী পুনম ও ছেলে দীপক তাকে খুন করে। কারণ, অঞ্জনের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ও ছেলের স্ত্রী ও বোনের উপর কুদৃষ্টি।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, অঞ্জনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে দীপক ও পুনম। প্রথমে অঞ্জনকে ওষুধ দেওয়া হয়। এরপর তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তারপর মৃতদেহ ১০সেই টুকরা করে ফ্রিজে রেখে দেয় অভিযুক্তরা। প্রতিদিন রাতে দেহাংশ ফেলে দিত বাড়ির কাছের মাঠে।
আরও পড়ুন : রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলা স্থগিত সুপ্রিম কোর্টে, এরপর কী হবে ?
কেন-কীভাবে খুন ?
পুলিশ জানায়, পুনমের তৃতীয় স্বামী অঞ্জন। পুনমের আগের পক্ষের তিন সন্তান ছিল। এদিকে পুনম আবার অঞ্জনের দ্বিতীয় স্ত্রী। তার প্রথম স্ত্রী ও পরিবার বিহারে থাকে। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ৮ সন্তান ছিল অঞ্জনের।
অঞ্জন কোনও কাজ করত না। সে পুনমের গয়না বিক্রি করে বিহারে তার পরিবারের কাছে টাকাও পাঠিয়েছিল। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হতো। এর মধ্যেই পুনমের ছেলে দীপকের বিয়ে হয়। পুনম এবং দীপকের সন্দেহ হয়, অঞ্জন দীপকের স্ত্রীর দিকে কুনজর নেয়। এমনকী অঞ্জনের একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বলেও অভিযোগ। আর সেই সন্দেহেশ বশেই অঞ্জনকে খুন করে পুনম ও দীপক।
কীভাবে তদন্তের কিনারা ?
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, খুনের কিনারা করতে ক্রাইম ব্রাঞ্চকে বেশ পরিশ্রম করতে হয়। মাঠে দেহাংশ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে ওই এলাকার অনেক বাড়িতে তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। প্রায় ৫০০ ফ্রিজ পরীক্ষা করা হয়। তবে সেগুলো থেকে সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। এরপর এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনার কিনারা করতে সক্ষম হয় তদন্তকারীরা। গ্রেফতার করা হয় পুনম ও দীপককে। তারা খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বলে দাবি।