প্রতিনিয়ত মদ্যপ ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শেষপর্যন্ত তাকেই লাঠি দিয়ে পিটিয়ে খুন করল বৃদ্ধ বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের গাঙ্গুটিয়া চা বাগানে। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতিদিন রাতে ওই বাগানের অবসরপ্রাপ্ত চা শ্রমিক জুগিমান লামার উপর মদ্যপ অবস্থায় অত্যাচার চালাত তাঁর ছেলে প্রশং লামা। বাবাকে প্রশং প্রতিদিন মারধর করতো বলেও অভিযোগ।
অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতেও প্রশং লামা মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ফিরে বাবার উপর অত্যাচার শুরু করে। বেধড়ক মারধরও করে তাঁকে। এরপর ছেলের অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে গেলে বৃদ্ধ জুগিমান লামা দরজার পাশে রাখা মোটা লাঠি দিয়ে ছেলে প্রশং লামার মাথায় একের পর এক আঘাত করেন। বাবার লাঠির ঘায়ে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে প্রশং। এরপর বৃদ্ধ জুগিমান সবাইকে বাড়িতে ডেকে আনেন। স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রশং লামাকে কালচিনির লতাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে, তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
কালচিনি থানার পুলিশ প্রশং লামার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কোচবিহার জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এদিকে ছেলেকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে জুগিমান লামাকে গ্রেফতার করেছে কালচিনি থানার পুলিশ। গাঙ্গুটিয়া চা বাগানের স্থানীয় বাসিন্দা মিনতি ওড়াও, শুক্রা টোপ্প বলেন মৃত প্রশং লামা শুধু তাঁর বাবার সঙ্গেই নয়, বাগানের অন্য শ্রমিকদের সাথেও খারাপ ব্যবহার করতো। প্রত্যেক দিন মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবাকে মারধর করতো। এই নিয়ে জুগিমান বেশ কয়েকবার স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগও জানিয়েছেন। কিন্তু কিছুতেই তাঁর স্বভাবের পরিবর্তন হয়নি। অবশেষে তাঁর এই পরিনতি হলো।
কালচিনি থানার ওসি অনির্বাণ মজুমদার বলেন, 'স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে শুনেছি মৃত যুবক তাঁর বাবাকে প্রতিদিন মদ্যপান করে শারীরিক নির্যাতন করত। প্রশং লামার মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের জন্য কোচবিহার জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।'