বধূকে বিবস্ত্র করে মারধর ও খুনের অভিযোগ উঠল মালদায়। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকী হাত-পা বেঁধে রাতভর মারধর করে বাড়ির বাইরে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। আপাতত হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই বধূ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্তরা। অভিযোগের তির স্বামী, শাশুড়ি ও দেওরের বিরুদ্ধে।
শরীরে ধারাল অস্ত্রের আঘাত, জখমের দাগ, কালশিটে
পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে বিবস্ত্র করে অত্যাচার। অভিযোগ, খুনের চেষ্টা করা হয় গৃহবধূকে। নির্জাতিতার অভিযোগ, শরীরের একাধিক জায়গায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত। হাত পা বেঁধে রাতভর নির্যাতন। অত্যাচারের পর সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে, মৃত মনে করে বাড়ির বাইরে ফেলে দেওয়া হয় গৃহবধূকে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের সাদলিচক পঞ্চায়েতের আড়োলপুর গ্রামে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গৃহবধূ ভর্তি হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। ঘটনায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে গৃহবধূর পরিবার।
পণের দাবিতে লাগাতার অত্যাচার
জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে সম্বন্ধ করে হরিশ্চন্দ্রপুরের সুলতাননগর গ্রামের মেয়ে আশিয়া খাতুনের বিয়ে হয় নতুন সাদলিচক গ্রামের বাসিন্দা আবুজার হোসেনের সঙ্গে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে ওই বধূর ওপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ। এই ঘটনা পরিবারকে জানিয়েছিলেন আশিয়া। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে কয়েকবার কিছু টাকা দেন মেয়ের বাড়ির লোকজন। কিন্তু, এরপরও অত্যাচার দিনের পর দিন বাড়তেই থাকে।
বসে সালিশী সভাও
বেশ কয়েকবার সমস্যা মেটাতে স্থানীয়ভাবে সালিশি মীমাংসা হয়। এরআগেও পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিল পরিবার। সেইসময় শ্বশুর বাড়ির লোকজন আর অত্যাচার করা হবে না বলে জানায়। কিন্তু, রবিবার ফের নৃশংস অত্যাচারের শিকার হন ওই মহিলা। অভিযোগ, হাত-পা বেঁধে রেখে খুনের চেষ্টা করা হয়। ওই মহিলার দুই হাত, পা-সহ শরীরে একাধিক জায়গা কেটে রক্তাক্ত করা হয়। কপাল এমনকী মাথাতেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ক্রমাগত অত্যাচারে অজ্ঞান হয়ে পড়েন আশিয়া। এরপর মারা গিয়েছেন মনে করে তাঁকে রাতেই বাড়ির বাইরে ফেলে দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
সকালে প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়ে মেয়েকে উদ্ধার করেন পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীরা। গুরুতরের জখম অবস্থায় হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তির পর শুরু হয়েছে চিকিৎসা। তবে এখনও তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক। মেয়ের পরিবারের আরও অভিযোগ,৬ বছর আগে বিয়ের সময় চাহিদা মত টাকা, গয়না ও আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছিল। এরপরেও কখনও এক লক্ষ, কখনও দুই লক্ষ টাকা পণ বাবদ চেয়ে অত্যাচার চালানো হতো।