জন্মদিনের 'সারপ্রাইজ গিফট' দেওয়ার অছিলায় তরুণীর হাত-পা বেঁধে পেট্রল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল তাঁর ছোটবেলার বন্ধুর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত এক জন রূপান্তরকামী। সম্প্রতি লিঙ্গ বদলে মহিলা থেকে পুরুষ হয়েছেন তিনি। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চেন্নাইয়ের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছে?
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত তরুণীর নাম নন্দিনী। গত রবিবার তাঁর জন্মদিন ছিল। জন্মদিনের আগের দিন, অর্থাৎ শনিবার সকালে নন্দিনী তাঁর বিশেষ বন্ধু ভেট্টিমরানের সঙ্গে দেখা করেন। নন্দিনীকে ফোন করে দেখা করতে বলেন ভেট্টিমরান। জন্মদিনের আগে নন্দিনীকে বিশেষ উপহার দিতে চেয়েছিলেন তিনি। প্রথমে দেখা করতে চাননি নন্দিনী। পরে রাজি হন তিনি। শনিবার সকালে নন্দিনীর বাড়িতে যান ভেট্টিমরান। তার পরে তাঁরা একসঙ্গে বাড়ি থেকে বেরোন। চেন্নাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন তাঁরা। একটি অনাথআশ্রমেও যান তাঁরা। পরে সন্ধ্যায় উপহার দেওয়ার নাম করে নন্দিনীকে নিয়ে একটি নির্জন এলাকায় যান ভেট্টিমরান। পুলিশ আরও জানিয়েছে, সেই সময় 'সারপ্রাইজ গিফট' দেওয়ার জন্য নন্দিনীর চোখ বেঁধে দেন ভেট্টিমরান। তার পরে তাঁর হাত-পা বেঁধে দেন। তখনও নন্দিনী বুঝতে পারেননি কিছু। ভেবেছিলেন ছোটবেলার বন্ধু চমক দিচ্ছেন। কিন্তু এর পরই নন্দিনী বুঝতে পারেন যে, বিষয়টি অন্য কিছু। নন্দিনীর গায়ে পেট্টল ঢালেন ভেট্টিমরান। তার পরেই ভেট্টিমরান নন্দিনীর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন বলে
অভিযোগ। ঘটনার পরই পালিয়ে যান অভিযুক্ত। নন্দিনীর চিৎকারে ছুটে আসেন পথচলতি মানুষেরা। তাঁরাই আগুন নিভিয়ে পুলিশকে খবর দেন। নন্দিনীকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে নন্দিনীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ভেট্টিমরানের কথা জানতে পারে পুলিশ। তদন্তকারীদের কাছে ভেট্টিমরানের নম্বর দেন নন্দিনী। কিন্তু এতটাই জখম ছিলেন তিনি যে, আর কিছুই বলতে পারেননি। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নন্দিনীর।
এর পর ভেট্টিমরানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তার পরেই গা ঢাকা দেন তিনি। এতে সন্দেহ বাড়ে পুলিশের। পরে ভেট্টিমরানকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত। নন্দিনী এবং ভেট্টিমরান ছোটবেলা থেকে বন্ধু। তাঁরা একই স্কুলে পড়তেন। কয়েক দিন আগে নন্দিনী জানতে পারেন যে, তাঁর বন্ধু রূপান্তরকামী। এ কথা জানার পর নন্দিনীর অন্য বন্ধুরা ভেট্টিমরানের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দেন। কিন্তু নন্দিনী যোগাযোগ রেখেছিলেন। পুলিশের দাবি, নন্দিনীর প্রেমে পড়েছিলেন ভেট্টিমরান। কিন্তু এই প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না নন্দিনী। অন্য পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন নন্দিনী। এর পরেই প্রতিশোধ নিতে নন্দিনীকে খুন করেছেন ভেট্টিমরান।