ঝাড়খণ্ডের অভিনেত্রী রিয়া কুমারী তথা ইশা আলিয়াকে খুনের ঘটনায় তাঁর স্বামী প্রকাশ কুমারকে আদালতে পেশ করল পুলিশ। বয়ানে অসঙ্গত ও রিয়া কুমারীর বাপেরবাড়ির সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও সে খুন করতে পারে না বলে ইতিমধ্যেই দাবি করেছে প্রকাশ।
তদন্তে ফরেন্সিক
অন্যদিকে পুলিশের পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ফরেন্সিক দলও। গতকালের পর আজ বাগনানের চন্দ্রপুরে যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছিল, সেই জায়গাটি পরীক্ষা করে দেখেন ফরেন্সিক দলের সদস্যরা। মেজারমেন্ট ফিতে দিতে মাপজোক করে দেখা হয়। সংগ্রহ করা হয় নমুনা। গতকাল রাজাপুর থানায় যে গাড়িতে খুন হয়েছে সেটিও পরীক্ষা করে দেখেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। সেখান থেকে রক্ত-সহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহ করা হয় গুলির খোল।
ঝাড়খণ্ডের অভিনেত্রী রিয়া কুমারীর খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিভিন্নমহলে। রিয়ার স্বামী প্রকাশ কুমার দাবি করে, ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে স্ত্রী ও আড়াই বছরের মেয়েক নিয়ে কলকাতায় শপিং করতে আসছিল সে। প্রকাশ নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিল। বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটা-৬টা নাগাদ বাগনানের চন্দ্রপুরে মহিষরেখা ব্রিজের কাছে গাড়ি থামিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নামে সে। প্রকাশের দাবি, সেই সময়ই সশস্ত্র ৩ দুষ্কৃতী ঘিরে ধরে তাকে। টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্ট করে। ছিনতাইয়ে বাধা দেয় প্রকাশ। সেই দেখে এগিয়ে যান তার স্ত্রী রিয়া কুমারীও। আর তখনই ওই রিয়াকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। গুলি লাগে রিয়ার কানের তলায়। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরপর লুঠপাট চালিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রীকে নিয়ে দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে কুলগাছিয়ার পিরতলার কাছে একটি চায়ের দোকান পৌঁছায় প্রকাশ। সেখানে স্থানীয়দের বিষয়টি জানা সে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এরপর পুলিশ গিয়ে রিয়া কুমারীকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তবে এই ঘটনায় প্রকাশের বয়ানে প্রথম থেকেই সন্দেহ হয় পুলিশের। গতকাল তাকে চন্দ্রপুরে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হয়। কিন্তু বয়ানে বেশকিছু অসঙ্গতি ও রিয়ার বাপেরবাড়ির লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন - ভাঙড়ে চাষের জমিতে উদ্ধার ব্যাগ ভর্তি বোমা, মিলল তৈরির সামগ্রীও