Sourav On RG Kar Death: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্ন চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মামলায় তোলপাড় গোটা দেশ। সোশ্য়াল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং এখন গোটা ঘটনা। শুধু চিকিৎসরাই নয়, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ এ নিয়ে মুখ খুলেছেন, ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন। সেই সঙ্গে দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন। চিত্রতারকা থেকে সমাজকর্মী, খেলোয়াড় থেকে নেতা, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ফুঁসে উঠেছেন ঘটনার পিছনে কারা তা প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়ে। এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন বাঙালির আইকন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি গোটা ঘটনায় নিজের অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন।
কী বলেছেন সৌরভ?
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা নিয়ে এবার মুখ খুললেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, "এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক এবং জঘন্য ঘটনা, এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এটি মোটেও ঠিক নয়। মহিলাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া দরকার। এটি যে কোনও জায়গায় ঘটতে পারে, তাই এই রকম ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য শুধু হাসপাতালে নয়, সব জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।" পাশাপাশি তিনি বলেন, "এমন ঘটনা যে কোনও জায়গায় ঘটতে পারে। সব জায়গায় হচ্ছে। তার মানে এই নয়, যে রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মহিলাদের জন্য তলানিতে ঠেকেছে। একটা ঘটনা নিয়ে রাজ্যে মহিলার নিরাপত্তা বিচার করা উচিত নয়।"
এদিকে শুক্রবার সকালে কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের একটি সেমিনার হলে যে স্নাতকোত্তর ইন্টার্ন চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যায়, তাঁর শরীরে ১০টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। প্রাথমিক ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নিহতের চোখ, মুখ, গোপনাঙ্গ, পেট, হাত এবং পায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। গোপনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ঘটনাস্থলে অর্ধনগ্ন অবস্থায় পাওয়া যায় মৃতদেহটি। গোলাপি কুর্তি ও সাদা ওপরের পোশাক পাশে পড়ে ছিল।
এছাড়াও, লাশের কাছে জিন্স ও অন্তর্বাস পাওয়া যায় এবং গোপনাঙ্গের কাছে একটি চুলের ক্লিপও খুঁজে পাওয়া গেছে।
ময়নাতদন্তের ফলাফল অনুযায়ী, ঘটনাটি আত্মহত্যার নয়, বরং যৌন নিপীড়নের পরে নৃশংস হত্যার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, এই চিকিৎসকের ঘাড়ের হাড় ভেঙে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা শ্বাসরোধের মাধ্যমে হত্যার সম্ভাবনা নির্দেশ করছে। ঘটনার সময় হিসাবে ভোর ৩টা থেকে ৬টার মধ্যে সময়কাল উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে কোনও সিসি ক্যামেরা না থাকায় পুলিশ অপরাধীর সঠিক পরিচয় জানার জন্য প্রাথমিক ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের অপেক্ষা করছে। এদিকে, নির্যাতিতার পরিবার ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। ময়নাতদন্তের সময় নির্যাতিতার মা ও দুই মহিলা সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পুরো প্রক্রিয়াটি ক্যামেরায় ধরা হয়। কলকাতা পুলিশের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) ইতিমধ্যেই গঠন করা হয়েছে।
এদিকে, হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার এবং কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁরা আরও দাবি করেছেন, ডাক্তারদের জন্য রাতে ডিউটির সময় বিশ্রামের কোনও সুনির্দিষ্ট কক্ষ নেই এবং মহিলা ও পুরুষ ডাক্তারদের জন্য আলাদা টয়লেটেরও ব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তার অভাবে তারা ভীষণ উদ্বিগ্ন এবং দ্রুত সুরক্ষার পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।