কলকাতা (Kolkata) থেকে গ্রেফতার হল ৩ সন্দেহভাজন জেএমবি (JMB) জঙ্গি। রবিবার কলকাতা পুলিশের এসটিএফ (STF) তাদের ধরেছে। ধৃতদের নাম নাজিউর রহমান পাভেল ওরফে জোসেফ, রবিউল ইসলাম, মিকাইল খান ওরফে শেখ সাব্বির। পাড়ার ফল এবং মশারি বিক্রেতাই আসলে জেএমবি জঙ্গি! এসটিএফ (STF)-এর স্পেশ্যাল অপারেশনে পর্দা ফাঁস।
পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অস্ত্র, বাংলাদেশের পাসপোর্ট, বেশ কিছু নথিপত্র। রোগী পরিবারের সদস্য সেজে লুকিয়ে ছিল।
কলকাতার ঠাকুরপুকুর এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছিল তারা। সেখানে রয়েছে ঠাকুরপুকুর ক্য়ান্সার হাসপাতাল। ওই হাসপাতালে তাদের পরিজন ভর্তি রয়েছে। এই বলে ওই এলাকায় থাকছিল তারা।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালায় কলকাতা (Kolkata) পুলিশের এসটিএফ (STF)। আর তারপর ধরা পড়েছে ৩ জনকে। তারা জেএমবি (JMB)-র বড় মাথা বলে জানা যাচ্ছে।
পাড়ার মোড়ে ফেরি করে যে লোক গুলো এতদিন ফল বিক্রি করত। তারাই যে আসলে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন এর সক্রিয় সদস্য, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি হরিদেবপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবাসরীয় দুপুরে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সে অভিযান অবশেষে সবজিওয়ালার আড়ালে ওই জঙ্গী নেতাদের পর্দা ফাঁস হল।
রবিবার দুপুর দুটো নাগাদ দক্ষিণ শহরতলির হরিদেবপুর থানা এলাকার মহাত্মা গান্ধী রোডের ওপর থেকে অভিযান চালিয়ে জেএমবি (JMB) জঙ্গি সন্দেহে তিনজনকে আটক করে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ।
তল্লাশি চালিয়ে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি হাতে লেখা ডায়েরি, জঙ্গি সংগঠনের একাধিক কাগজপত্র, একটি মোবাইল। হাতে লেখার ডায়েরিটি পরীক্ষা করেন গোয়েন্দারা। তাতে জেএমবি জঙ্গি সংগঠনের একাধিক তথ্য এবং অসংখ্য জঙ্গি নেতার নাম এবং ফোন নম্বর পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
পাশাপাশি এক ব্যক্তির সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে নিষিদ্ধ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন (JMB)-এর সঙ্গে তার যোগাযোগের স্পষ্ট প্রমাণ মেলে। এরপরেই গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে।কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর ধৃতদের নাম নাজিউর রহমান পাভেল ওরফে জোসেফ, রবিউল ইসলাম, মিকাইল খান ওরফে শেখ সাব্বির।
তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তিনজনকে লালবাজারের নিয়ে এসে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশের হাইকমিশনের সঙ্গেও যোগাযোগ করে লালবাজার।
বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নাজিউর রহমান ওরফে জোসেফ আগে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডে চাকরি করতো। সেই সময় বেশকিছু বিস্ফোরক মামলায় তার নাম জড়ায়। তার নামে মূলত তিনটি অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশে। তার মধ্যে একটি মামলায় বাংলাদেশের জেলে প্রায় ৩ বছর কাটিয়েছেন তিনি।
এরপর জেল থেকে বেরিয়ে জোসেফ কলকাতায় এসে ঘাঁটি তৈরি করে। তার সঙ্গে যোগ দেয় আরও দু'জন, রবিউল এবং মিকাইল। আত্মগোপন করে থাকতে তারা এখানে মূলত ফল এবং মশারি বিক্রেতার ছদ্মবেশে লুকিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, শিগগিরি পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার ছক ছিল ওই জেএমবি জঙ্গিদের। এ রাজ্য বা অন্য কোনও রাজ্যে তাদের কোনো নাশকতার ছক ছিল কিনা, তা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স।
ঠিক কোন উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে তারা কলকাতায় এসেছিল তা তদন্তের স্বার্থে এখনই বলতে চাইছেন না এসটিএফ কর্তারা। কাল, সোমবার ৩ জনকে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে চাইবে কলকাতা পুলিশ।