আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ খুনের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। এই হাসপাতালে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সদ্যপ্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের জমানাতে দেদার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। এই আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্তে সিট গঠন করে স্বরাষ্ট্র দফতর। সিট গঠনের সিদ্ধান্তে মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের আরও এক রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার। সুখেন্দু শেখর রায়ের পর তৃণমূলের অন্দরের আরও এক সাংসদের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন সিট গঠন নিয়ে জহর সরকার বলেন, "জেনে ভালো লাগল যে সরকার অবশেষে আর জি কর হাসপাতালে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে সিট তদন্ত গঠন করেছে। প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডঃ সন্দীপ ঘোষের আমলের দুর্নীতির তদন্ত হবে। এটা অনেক আগেই করা উচিত ছিল। অবিলম্বে তাঁকে সাসপেন্ড করুন।"
আরজি করে গত ২০২১ সাল থেকে ব্যাপক কারচুপি, টেন্ডার দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জাল ওষুধ বিক্রি থেকে বর্জ্য সিরিঞ্জের কালোবাজারি, সিন্ডিকেট সহ একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে সন্দীপ ঘোষের নামে। চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর থেকে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। সন্দীপ রায়ের নামে ক্ষোভ-অভিযোগ উগরে দেন হাসপাতালেরই চিকিৎসকদের একাংশ। অবশেষে ঘটনার নয়দিন পার হওয়ার পর আইজি পদমর্যাদার অফিসার প্রণব কুমারের নেতৃত্বের ৪ সদস্যের সিট গঠন করে স্বরাষ্ট্র দফতর। এক মাসের মধ্যে সিটকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন সন্দীপ ঘোষ। ২০২৩ সালের ৩১ মে, তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক হিসেবে বদলি করে স্বাস্থ্যভবন। পরে জানা যায়, সন্দীপ ঘোষ অধ্যক্ষের ঘরে তালা দিয়ে চলে যায়। ফলে নতুন অধ্য়ক্ষ এসেও দায়িত্ব নিতে পারেননি। এরপর সেদিন দুপুরেই স্বাস্থ্যভবন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ বদল হচ্ছে না। ওই পদেই বহাল থাকেন সন্দীপ ঘোষ।
এরপর গতবছর সেপ্টেম্বরে অধ্যক্ষ বদলি ঘিরে আবারও চাপানউতোর শুরু হয়। এরপর অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগে অধ্যাপক পদে বদলি করা হয়। তাঁর জায়গায় বারাসাত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করা হয়। তাও বেশিদিন নয়। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে ফেরানো হয় সন্দীপকে।
আরজি কর কাণ্ডে এর আগেও মুখ খুলেছিলেন রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় শাসক দলের বিরোধিতা করায় কলকাতা পুলিশ তাঁকে শমনও পাঠায়। যদিও তিনি তাতে সাড়া দেননি। তবে আরজি কর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের অন্দরেই ক্ষুব্ধ একাংশ।