Rahul Gandhi Bharat Jodo Yatra:কন্যাকুমারী থেকে শুরু হওয়া রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা আজ শ্রীনগর-এ শেষ হয়ে গেল। ১২ রাজ্য এবং ২ টি কেন্দ্রশাসিত প্রদেশের হয়ে এই যাত্রা এগিয়েছে। এই সময় রাহুল গান্ধী ৩৫০ কিলোমিটার লম্বা পদযাত্রা করেছেন। (ছবিটি ভারত জনযাত্রার দ্বিতীয় দিনের। সে সময় রাহুল গান্ধী কন্যাকুমারী ছিলেন)
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেপ্টেম্বর ২০২২-এ তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে এরপরে এই যাত্রা তিরুবনন্তপুরম কোচি, নীলাম্বর, মাইসোর, কর্ণাটকের বেল্লারি, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশের রায়পুর, তেলেঙ্গানা, ভিকরাবাদ, মহারাষ্ট্রের নানদের, জলগাঁও যামোদ, মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর, রাজস্থানের কোটা, দোসা আলোয়ার, উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর, দিল্লি, আম্বালা, হরিয়ানা, পাঠানকোট, পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর এবং শ্রীনগর পর্যন্ত পৌঁছান।
রাহুল গান্ধী যাত্রা নিয়ে বলেন যে আমি লক্ষ লক্ষ লোকের সঙ্গে দেখা করেছি। আমার কাছে শব্দ নেই যে, আমি কীভাবে এই অভিজ্ঞতা আপনাকে বলতে পারব। এই যাত্রার উদ্দেশ্য, দেশের একতা বজায় রাখা। এই যাত্রা গোটা দেশে ছড়ানো হিংসা এবং ঘৃণার বিরুদ্ধে। এই যাত্রায় লোকেদের দুর্দান্ত প্রতিক্রিয়া পেয়েছি।
১৩৬ দিন-এর এই যাত্রা রাহুল গান্ধী ১২টি সভাকে সম্বোধিত করেন। সেখানে একশোর বেশি কর্নার মিটিং এবং ১৩টি প্রেস কনফারেন্স করেন। এছাড়া ২৭৫ এর বেশি ওয়াকিং ইন্টারেকশন এবং একশোর বেশি সেটিং ইন্টারেকশন করেন।
কংগ্রেসের পূর্ব অধ্যক্ষ সোনিয়া গান্ধী নিউ ভারত জনযাত্রা শামিল যখন যাত্রা কর্নাটকের মানডওয়াতে পৌঁছন, তখন সোনিয়া গান্ধী তাতে অংশ নেন। সেই সময় সোনিয়া গান্ধীর জুতোর ফিতা খুলে গিয়েছিল। রাহুল গান্ধী ফিতা বেঁধে দেন।
ভারত জোড়ো যাত্রা যখন মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে পৌঁছায়, তখন কিছু লোকেরা মোদি মোদি স্লোগান তোলেন। এতে রাহুল গান্ধী তাদের ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দেন। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল।
রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রা যখন পাঞ্জাবে পৌঁছায়, তখন তাতে পাঞ্জাবি সিঙ্গার সিধু মুসেওয়ালার বাবা বলকোর সিং সিধুও শামিল হয়েছিলেন।গত বছরই সিধু মুসেওয়ালা খুন হয়ে যান।
এই যাত্রার সময় রাহুল গান্ধীকে সাদা রঙের টিশার্ট পড়ে থাকতে দেখা যায়। এত ঠান্ডায় শুধু টি শার্ট পরে যাত্রা করা রাহুল গান্ধীর ঠান্ডা লাগে না? এর উত্তরে তিনি জানান যে, যে যাত্রার সময় একদিন সকাল ছটা সময় তিনটে বাচ্চা তাঁর কাছে আসে। তারা ছবি তুলতে চান। যখন তিনি তাদের ধরেন তখন বাচ্চারা ঠান্ডায় কাঁপছিল, রাহুল গান্ধী জানান যে, "সেইদিন আমি ঠিক করি, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার শরীরে ঠান্ডা অসহনীয় হবে না, আমি ঠান্ডায় কাঁপতে না শুরু করব ততক্ষণ পর্যন্ত সোয়েটার পরবো না। আমি তাদের বার্তা দিতে চাই যে, যদি আপনাদের ঠান্ডা লাগে, তাহলে সেই ঠান্ডা আমারও লাগে, যেদিন আপনি সোয়েটার পড়বেন, ওই দিন রাহুল গান্ধী সোয়েটার পড়বে।"
ভারত জোড়ো যাত্রার সময় রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে একাধিক বার একসঙ্গে দেখা যায়। যাত্রা শেষ হওয়ার পর প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন যে কন্যাকুমারী থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত যেখানে যেখানে গেছি, এই যাত্রা অভূতপূর্ব সমর্থন পেয়েছে। কারণ এই দেশে এখনও পর্যন্ত একতা রয়েছে। দেশের সংবিধানের জন্য দেশের মাটির জন্য আবেগ রয়েছে।
ভরত জোড়ো যাত্রার ৯৫ তম দিন রাহুল গান্ধী কোটাতে ছিলেন। সেখানে হাইওয়েতে তিনি গরুর গাড়িতে চড়ে যাত্রা করেন। এই গরুর গাড়িতে কৃষকেরা সবার ছিলেন। রাহুল গান্ধী প্রায় দশ মিনিট পর্যন্ত ওই গাড়িতে চলেন।
গত বছর ১৪ ডিসেম্বর ভারত জোড়ো যাত্রায় আরবিআই-এর প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন শামিল হন। এর আগে রাহুল গান্ধী এবং রঘুরাম রাজান নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন বলে দেখা যায়। বিজেপি এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। যাত্রায় শামিল হওয়ার পর রঘুরাম রাজন জবাব দেন, যে এই যাত্রায় তিনি কোনও চাকুরীজীবী বা অর্থনীতিবিদ হিসেবে অংশ নেননি। বরং এবং উদ্বিগ্ন নাগরিক হিসেবে অংশ নিয়েছেন।
ভারত জোড়ো যাত্রা যখন রাজস্থানের দোসাতে পৌঁছয়, তখন রাহুল গান্ধী এক কৃষকের ঘরে যান। সেখানে তিনি ঘাস কাটার মেশিন নিয়ে ঘাস কাটার চেষ্টাও করেন। এই সময় মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকেও ঘাস কাটতে দেখা যায়।
এই যাত্রা যখন গত মাসে দিল্লিতে পৌঁছয়, তখন দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার কমল হাসান তাতে যোগ দেন। সম্প্রতি কমল হাসান বলেছিলেন যে আমাদের দায়িত্ব যে এই দেশের যাওয়া সম্মান ফিরিয়ে আনা। ভারত জোড়ো যাত্রা রাজনীতির ঊর্ধ্বে।
এই ছবি সেই সময়ের, যখন যাত্রা মধ্যপ্রদেশের খরগোউন পৌঁছয়। সেই সময়ে অলিম্পিক গোল্ড মেডেলিস্ট বক্সার বিজেন্দ্র সিং যাত্রাতে শামিল হন।
দোসাতে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় ফিল্মমেকার আনন্দ পট্টবর্ধন এবং শ্রীমন্তিনী ধুরু সামিল হয়েছিলেন।
ছবি-বিভিন্ন এজেন্সি ও কংগ্রেসের নিজস্ব ওয়েব থেকে সংগৃহীত।