মার্চ-এপ্রিল মাসে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ দেশে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে। দেশজুড়ে অক্সিজেনের হাহাকার, মৃত্যুতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশ।দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কা সামলিয়ে খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসে কোভিড। সামনে রয়েছে ধনতেরাস, দীপাবলি এবং ছট পুজোর মতো বড় উৎসব। অনুমান করা হচ্ছে উৎসব শেষে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে। দিল্লি সহ অন্যান্য রাজ্যে, অভিভাবকরাও তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু ভাইরোলজিস্টের এ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে।
ন্যাশনাল ভেক্টর বার্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের উপদেষ্টা ভাইরোলজিস্ট অক্ষয় ধারিওয়াল বলেছেন, উৎসবের সময়ও মানুষকে করোনা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। এখনই বলা যাচ্ছে না, করোনার আতঙ্ক পুরোপুরি চলে গেছে। বিপদ এখনও কাটেনি। তাই ধনতেরসের মতো উৎসবে ভিড় জমাবেন না।
ডঃ ধারিওয়াল বলেছেন, মানুষের জন্য এখন কোভিডের বিধি নিষেধ মানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাড়ির বাইরে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। এখন অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না, যা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
অন্যদিকে, তিনি আরও জানান, থার্ড ওয়েব আসার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে জানান, এখন ভারতে তৃতীয় ঢেউ আসার কোনও আশঙ্কা নেই। যদিও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আসতেই থাকবে, কিন্তু এখনই দ্বিতীয় তরঙ্গের মতো বিপর্যয় আর ঘটাবে না। এর জন্য ভ্যাকসিনেশন এবং হার্ড ইমিউনিটিকেই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা।
দেশের ১০০ কোটি মানুষকে ইতিমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই বলছেন শিশুদের নিয়ে চিন্তা করবেন না। চিকিৎসকের মতে, এখন করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের তেমন কোন বিপদ নেই। অভিভাবকরা নির্ভয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারেন। তিনি বলেন, উৎসবের পর পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার প্রত্যাশা নগণ্য, তাই উৎসবের পর অভিভাবকরা তাদের সম্মতি দিতে পারেন।
পাবলিক পলিসি অ্যান্ড হেলথ এক্সপার্ট ডক্টর চন্দ্রকান্ত লাহরিয়াও এই বিষয়ে জানিয়েছেন, এখন অভিভাবকদের ভয় পাওয়ার দরকার নেই। উৎসবের পর করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও জাতীয় পর্যায়ে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা নগণ্য। শিশুদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ খুবই কম। সংক্রমণ থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে শিশুদের মধ্যে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
চিকিৎসকের আরও বক্তব্য, সাম্প্রতিক সেরো সমীক্ষায় দেখা গেছে যে জুনের মধ্যে ৬৭.৬% অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে। সেরোর সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, শিশুদের মধ্যেও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে যা বড়দের থেকে বেশি তাড়াতাড়ি তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, দেশের ১০০ কোটি মানুষ করোনার ডোজ পেয়ে গেছেন।
চিকিৎসকেরা বলেন, শিশুদের অতীতেও কম গুরুতর রোগ ছিল। শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ হলেও মারাত্মক কোনও প্রভাব ফেলবে না। তাই শিশুদের স্কুল খুলতে হবে। এ নিয়ে অভিভাবকদের আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। তিনি বলেন, ডেনমার্ক-সুইডেন প্রভৃতি দেশ স্কুল বন্ধ করেনি, আমেরিকায় শিশুদের স্কুলে পাঠানো শুরু করেছে।