হরিয়ানার অধিকাংশ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি। কাইথাল, যমুনানগর, পঞ্চকুলা সহ বহু জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জেজেপি বিধায়ক ঈশ্বর সিং গুহলা বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গেলে কাইথালে গেলে প্রতিবাদের মুখোমুখি হন তিনি। একজন ক্ষুব্ধ মহিলা তাঁকে চড় মারেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ভিডিও।
পঞ্জাব ও হরিয়ানার বেশ কিছু গ্রামে ঘাগর নদীর জলস্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অঞ্চলে অবিরাম বর্ষণে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উভয় রাজ্যেই ত্রাণ ব্যবস্থা চলছে।
যমুনানগর, কাইথাল, পঞ্চকুলায় বৃষ্টি কবলিত জেলাগুলিতে অন্তর্ভুক্ত। তবে এই জেলাগুলি থেকে জল ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। তবে এর জেরে জিন্দ, ফতেহাবাদ, ফরিদাবাদ, পালওয়াল, সিরসার মতো জেলাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী এনডিআরএফ/সেনা দলও অনেক জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে।
লাগাতার যমুনার জলস্তর বাড়ছে দিল্লিতে। হরিয়ানার হাথনিকুন্ড ব্যারেজ থেকে ক্রমাগত জল ছাড়ার কারণে যমুনার ভয়ঙ্কর রূপ দেখা যাচ্ছে। বুধবার রাতে যমুনার জলস্তর ২০৮ মিটার অতিক্রম করেছে। অর্থাৎ দিল্লির যমুনা নদী বিপদসীমার প্রায় ২ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে ডুবতে পারে দিল্লি।
বন্যার আকারে হরিয়ানা থেকে দিল্লির দিকে প্রতি মুহূর্তে বিপদ বাড়ছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নীচু এলাকায় এনডিআরএফ বাহিনী উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে। সাড়ে ১৬ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
নয়ডা সংলগ্ন দিল্লির কালিন্দী কুঞ্জ যমুনা ঘাটেও যমুনার জলের রেকর্ড বৃদ্ধির প্রভাব দেখা যাচ্ছে। কালিন্দী কুঞ্জ যমুনা ঘাট জলে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে কালিন্দী কুঞ্জ ঘাটে এত জল তাঁরা দেখেননি।
যমুনার জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় নয়ডায়তেও বিপদের মেঘ ঘনাচ্ছে। নয়ডার কিছু এলাকায় বন্যার পরিস্থিতির সতর্কতাও রয়েছে। নয়ডার যমুনা নদীর কাছাকাছি এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে। নয়ডার কয়েকটি গ্রামে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে গীতা কলোনির শ্মশানে যমুনার জল পৌঁছেছে, পরে ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে, দিল্লি পুলিশ বন্যা কবলিত এলাকায় CrPC-র ১৪৪ ধারা জারি করেছে। দিল্লি-এনসিআরের অনেক এলাকায় এখনও বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে। তবে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দিল্লিতে দু’দিন বৃষ্টি থেকে স্বস্তি মিললেও ফের বৃষ্টি বাড়বে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, "মুনা, ওয়াজিরাবাদ, চন্দ্রওয়াল ও ওখলায় জলস্তর বৃদ্ধির কারণে জল শোধনাগার বন্ধ করতে হয়েছে। এর ফলে দিল্লির কিছু এলাকায় জলের সমস্যা হবে। যমুনার জল কমার সঙ্গে সঙ্গে আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেগুলি শুরু করার চেষ্টা করব।"
দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলে একটি পরামর্শ জারি করেছে। এছাড়াও বলা হয়েছে যে জনগণকে বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকতে হবে এবং যেকোনো প্রয়োজনে হেল্পলাইন নম্বর ১০৭৭-এ যোগাযোগ করতে হবে।