প্রায় ৪৯২ বছর পরে আবারও দীপাবলির আলোয় সেজে উঠতে চলেছে রাম জন্মভূমি অযোধ্যা। জানা গেছে, রামললার অস্থায়ী মন্দিরকে কয়েক হাজার প্রদীপে সাজিয়ে তোলা হবে।
আগে অযোধ্যায় দীপাবলির অনুষ্ঠান করা হলেও, সেটা একেবারেই ছোটো মাপের হত। শুধুমাত্র মন্দিরের পুরোহিতরাই এই প্রদীপ জ্বালাতে পারতেন। কিন্তু এবার এত বড় মাপের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই অযোধ্যায় রামমন্দির পুনর্নিমাণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। জানা গেছে আগামী সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই তা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। সেকারণেই এবার অযোধ্য়ায় দীপাবলির আনন্দ আগের থেকে কার্যত দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।
শোনা যাচ্ছে, এবার নাকি অযোধ্যার অস্থায়ী রামললার মন্দিরে সাড়ে পাঁচ লাখ প্রদীপ জ্বালানো হবে। পাশাপাশি দীপাবলি উপলক্ষ্যে একটি বিশেষ পূজারও আয়োজন করা হয়েছে।
রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস বললেন, "রাম মন্দির চত্বরে এবার বিশেষ দীপাবলির আয়োজন করা হয়েছে। এবছর দীপাবলির মাধ্যমে অযোধ্যায় কার্যত ত্রেতা যুগকেই ফিরিয়ে আনা হবে।"
আগামীকাল অযোধ্যার রাম মন্দিরে উপস্থিত থাকবেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি মন্দির চত্বরে মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে সন্ধ্যারতি করবেন।
প্রায় ২৮ বছর পর গত মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে মন্দির পুনর্নির্মাণের কাজের জন্য রামললাকে মূল মন্দির থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, সংস্কৃত শব্দ দীপাবলি থেকে আজ দিওয়ালি কথাটি এসেছে। অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর জয়োৎসব উদযাপন করতেই এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়। দীপাবলি কথাটির অর্থ হল আলোর ঝর্ণা। সেকারণেই এই দিন প্রত্যেকে নিজেদের বাড়ি আলোয় সাজিয়ে তোলেন।
শ্রীরামচন্দ্র ১৪ বছরের বনবাস কাটিয়ে যখন আবারও দেবী সীতা এবং ভাই লক্ষ্মণকে নিয়ে অযোধ্যায় ফিরে আসেন, তখন গোটা রাজ্য প্রদীপের আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। তখন থেকেই অযোধ্যায় দীপাবলি পালন করা হয়। কেউ কেউ আবার মনে করেন, পাণ্ডবেরা ১২ বছর বনবাস এবং এক বছরের অজ্ঞাতবাস কাটিয়ে আসার পরই ভারতের দীপাবলি শুরু হয়েছিল।
জৈনধর্মে আবার দীপাবলির সংজ্ঞাটা একেবারেই আলাদা। এই ধর্ম অনুসারে, ৫২৭ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের ১৫ অক্টোবর যখন ভগবান মহাবীর নির্বাণ লাভ করেছিলেন, সেই দিন থেকেই দীপাবলির সূচনা করা হয়। দক্ষিণ ভারতে আবার ধারণাটা একেবারেই ভিন্ন। তাঁদের মতে শ্রীকৃষ্ণ রাক্ষস কড়কাসুরকে বধ করার পরেই দীপাবলির সূচনা হয়। পশ্চিম ভারতে আবার মনে করা হয় ভগবান বিষ্ণু যেদিন বালিকে (সুগ্রীবের দাদা) পাতাললোকের রাজা ঘোষণা করেন, সেদিন থেকেই এই উৎসব শুরু হয়ে যায়।