আগেই সময় ঠিক ছিল, সেই মতই নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী ভূমি পুজোর পর হয় শিলান্যাস। সেই সঙ্গে সব ধর্মের প্রার্থনাসভারও আয়োজন করা হয়।
প্রথা মেনে এদিন দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে শুরু হয় নতুন সংসদের ভূমিপুজনের অনুষ্ঠান।
নিজের হাতে নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদী।
নতুন এই সংসদ ভবন তৈরিতে খরচ হচ্ছে ৯৭১ কোটি টাকা। নতুন এই ভবনে লোকসভা কক্ষ ও রাজ্যসভা কক্ষের আয়তন অনেকখানিই বাড়ছে। যেখানে লোকসভায় বসতে পারবেন ৮৮৮ জন। রাজ্যসভায় আসন থাকবে ৩৮৪টি। এখন লোকসভায় ৫৪৩ জন সাংসদ বসতে পারেন। রাজ্যসভায় ২৪৫ জন সাংসদের বসার আসন রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশাপাশি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার অধ্যক্ষ বেঙ্কাইয়া নাইডু উপস্থিত ছিলেন ভূমি পুজোর অনুষ্ঠানে। এছাড়াও ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-সহ কেন্দ্রের একাধিক মন্ত্রী ও বিজেপি নেতারা।
এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পুরোনো সংসদ ভবনটির এবার অবসর নেওয়ার সময় হয়ে এসেছে। আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। দেশের ইতিহাসের জন্য আজ একটি মাইলস্টোন। পুরোনো ভবনের শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস আমাদের মনে থাকবে। কিন্তু বাস্তবকেও তো মাথায় রাখতে হবে। পুরোনো ভবনটিকে ঠিক রাখতে অবিশ্রান্তভাবে মেরামতের কাজ চালিয়ে যেতে হত।”
মোদী বলেন, 'পুরনো সংসদ ভবনে দেশের প্রয়োজনগুলো পূরণের জন্য কাজ হয়েছে। নতুন ভবনে ভারতের আকাঙ্খা পূরণ হবে। ইন্ডিয়া গেটের আগে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল যেমন রাষ্ট্রীয় পরিচয় বানিয়েছে তেমনই সংসদের নতুন ভবন নতুন পরিচয় স্থাপন করবে। দেশের লোক নতুন ভবন দেখে গর্ব করবে। স্বাধীন ভারতের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে।'
স্বাধীনতার ৭৫ বছরে ২০২২ সালের মধ্যে নতুন সংসদ নির্মাণের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্র নিয়েছে মোদী সরকার। যদিও সেটা সম্ভব কিনা তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। কারণ সুপ্রিম কোর্ট আপাতত নির্মাণে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
শিলান্যাস পর্বে অনুমতি মিললেও নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ সহ গোটা সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
মোদী সরকার ৯৭১ কোটি টাকা খরচ করে নতুন সংসদ ভবন তৈরির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করতেই তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিতর্ক। বিরোধীরা প্রশ্ন তোল করোনা কালে বিধ্বস্ত অর্থনীতির মাঝে সংসদ ভবনের পরিবর্তনের প্রয়োজন নিয়ে।
আগামিদিনে সংসদের দুই কক্ষে সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই এমন বন্দোবস্ত বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন সংসদ ভবন তৈরির জন্য দরপত্র আগেই ডাকা হয়েছিল। দরপত্র দিয়েছিল লারসেন অ্যান্ড টুরবো, সাপুরজি-সহ মোট সাতটি সংস্থা। ভবন তৈরির জন্য সর্বোচ্চ খরচ ধরা হয়েছিল ৯৭১ কোটি টাকা। তবে সবচেয়ে কম দর হেঁকে বরাত পেয়েছে টাটা গোষ্ঠী । এদিন শিলান্যাসে উপস্থিত ছিলেন রতন টাটাও।
নতুন সংসদ ভবনের আয়তনে হবে ৬৪ হাজার ৫০০ বর্গ মিটার। দেখতে হবে ত্রিকোণাকৃতি। বর্তমান সংসদ ভবনের কাছেই তৈরি হবে। সরকার জানিয়েছে, পার্লামেন্ট হাউস এস্টেটের প্লট নাম্বার ১১৮-তে নতুন ভবনটি গড়ে উঠবে।