সোমবারই এদেশে পা রেখেছিলেন মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট মাইক পম্পেয়ো ও সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স মার্ক টি এসপার। উদ্দেশ্য '2+2' বৈঠকের তৃতীয় অধ্যায়ে কৌশলগত ও নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা, আর সেই বৈঠকের মাঝেই ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে চিনকে কড়া বার্তা দিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের দুই শীর্ষকর্তা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও জানিয়ে দিয়েছেন ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে সবসময়ই আমেরিকা ভারতের পাশে রয়েছে। দুই মার্কিন প্রতিনিধি এদিন দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও।
প্রতিরক্ষা ও সামরিক ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতা বাড়াতে এই ভারত-আমেরিকা '2+2' বৈঠকে একাধিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, অস্ত্র এবং যুদ্ধের সরঞ্জাম সংক্রান্ত চুক্তিও হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
এই চুক্তির আওতায় ভারতকে গোয়েন্দা তথ্য দেবে আমেরিকা। পাশাপাশি দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের দাদাগিরি খর্ব করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ভারত।
ভারত মার্কিন '2+2' আলোচনায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর কথা বলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার ও মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেওর সঙ্গে।
বৈঠকের একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের আধিপত্য। পাশাপাশি ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য়ে প্রতিরক্ষা প্রয়ুক্তিগত সহযোগিতা।
ভারত-মার্কিন বৈঠক শেষে মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে গণতন্ত্রের বন্ধু নয় চিনা কমিউনিস্ট পার্টি। আইনের শাসন ও স্বচ্ছতা চিনের মধ্যে নেই। চিনা কমিউনিস্ট পার্টি বর্তমানে যেভাবে বিশ্বের কাছে হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারত ও মার্কিন প্রশাসন।
গালওয়ান ইস্যুতেও হোয়াইট হাউস যে নয়াদিল্লির পাশেই রয়েছে, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন আমেরিকার বিদেশ সচিব। দিল্লিতে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে গিয়ে গালওয়ানে নিহত ২০ ভারতীয় সেনা জওয়ানের স্মৃতিতে শ্রদ্ধাও জানান পম্পেয়ো ও এসপার।
ভারত-মার্কিন বৈঠকের পর ট্যুইট করেন রাজনাথ সিং। তিনি বলেন ২৬ তারিখের বৈঠক বেশ সফল হয়েছে। বিশ্বের দুই অন্যতম বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ নিজেদের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে পদক্ষেপ নিয়েছে। জয়শংকর-রাজনাথের পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গেও এদিন বৈঠক করেছেন পম্পেয়ো। সূত্রের খবর, প্রায় ৪০ মিনিটের ওই বৈঠকেও মূল আলোচ্য বিষয় ছিল পূর্ব লাদাখে চিনের আগ্রাসন।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগে ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে চিনের বিরুদ্ধে পম্পেয়োর এই বার্তা কূটনৈতিক দিক থেকে নয়াদিল্লির জন্য অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।