৯ অক্টোবর রাতটি দেশের বড় শোকের রাত হয়ে থাকল। ভারত হারাল রতন টাটাকে (Ratan Tata)। আক্ষরিক অর্থেই তিনি ভারতের 'রতন'। ৮৬ বছর বয়সে জীবানবসান। শুধু ভারত নয়, রতন টাটার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা বিশ্ব।
রতন টাটার বাবা নাভাল টাটা পরিবারে এসেছিলেন দত্তক সন্তান হিসেবে। নাভালের প্রথম স্ত্রী সোনির ঘরে জন্ম হয় রতন টাটার। রতন টাটার বয়স যখন ১০ বছর, তখন মা–বাবার বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
টাটা পরিবারের সন্তান। কম বয়সে তাঁর রূপ ও ব্যক্তিত্বে প্রেমে পড়েননি, এমন মেয়ে পাওয়া মুশকিল। তবু বিয়ে করেননি তিনি।
সারা জীবন নিজেকে সঁপে দিয়েছেন কাজে। দেশ গড়েছেন। টাটা গোষ্ঠীকে বিশ্ববাসীর কাছে নিয়ে গিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বেই টাটা গোষ্ঠীর গ্লোবালাইজেশন বলা যেতে পারে।
কেন বিয়ে করেননি রতন টাটা? ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব কমই মুখ খুলেছেন তিনি। অভিনেত্রী সিমি গারেওয়ালের একটি শো-এ ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন রতন টাটা। কেন তিনি বিয়ে, পরিবার ইত্যাদি থেকে দূরে থেকেছেন, বলেছিলেন।
রতন টাটা বলেছিলেন, 'অনেক সময় আমি একাকিত্ব বোধ করি। স্ত্রী বা পরিবার না থাকার একাকিত্ব। কিন্তু আমি আমার স্বাধীনতাকে উপভোগ করেছি। কেউ আমার উপর নির্ভরশীল নয়, এটা ভেবে আমি স্বাধীন জীবনকে উপভোগ করি। মাঝে মাঝে একটু একাকিত্ব লাগে বৈকি।'
বিয়ে নিয়ে সিমির প্রশ্নের উত্তরে রতন টাটা বলেছিলেন, 'একাধিকবার আমি বিয়ের কাছাকাছি গিয়েও শেষ মুহূর্তে সরে এসেছি।'
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে এক মার্কিন তরুণীর প্রেমে পড়েন রতন টাটা। সেটা তার পড়ার শেষদিকের ঘটনা। সেই প্রেম পরিণতি পায়নি। ভারতে ফিরে আসেন রতন টাটা।
এক সাক্ষাৎকারে টাটা জানিয়েছিলেন, মোট চারবার তাঁর বিয়ের কথা পাকা হয়েছিল। কিন্তু সেটা আর পৌঁছয়নি পিঁড়ি পর্যন্ত। লস অ্যাঞ্জেলেসে একবার প্রেমে পড়েছিলেন।
তিনি ১৯৬২ সালে ইন্দো চিন যুদ্ধ চলার কারণে মেয়েটির পরিবার তাঁকে ভারতে পাঠাতে চাননি।
২০০০ সালে একই চ্যানেলকে দেওয়া আর এক সাক্ষাৎকারে শৈশবের কথা জানিয়েছিলেন টাটা। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পরে ঠাকুমার কাছেই বড় হয়েছেন টাটা।
উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকায় পাড়ি দেন। ঠাকুমার উদ্যোগে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরে স্থাপত্যবিদ্যায় ডিগ্রি লাভ করেন।
পরে লস অ্যাঞ্জেলেসে চাকরি পান। দেশে ফেরার আগে দু’বছর সেই চাকরি করেছিলেন টাটা।