১ মে ভারতে আসছে রাশিয়ান ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি। সেদেশের ডিরেক্ট ইনভেস্ট ফান্ড-এর প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ জানিয়েছেন, প্রথম ব্যাচের টিকা ভারতে আসছে মে দিবসের দিনই। যদিও প্রথম দফায় কত পরিমাণ ভ্যাকসিন পাঠানো হচ্ছে তা স্পষ্ট করেননি তিনি। প্রতিষেধকটি যৌথভাবে তৈরি করেছে গামায়েল ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অফ এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি এবং আরডিআইএফ। ভারতে এটির বিপণনের দায়িত্বে রয়েছে ডক্টর রেড্ডিজ সংস্থা।
এই টিকাও দুই ডোজে দেওয়া হয়। প্রথম ডোজ দেওয়ার ২১ দিন পর দ্বিতীয়টি। সবথেকে বেশি ইমিউনিটি (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) গড়ে ওঠে প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ থেকে ৪২ দিনের সময়সীমার মধ্যে।
জানা গেছে, এই টিকার পরিবহন সহজ কারণ এটি রাখতে হয় ২ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যে। অর্থাৎ, সাধারণ রেফ্রিজারেটরের মধ্যেই রাখা যাবে এই টিকা, কোনও কোল্ড চেনের প্রয়োজন পড়বে না।
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে স্পুটনিক ভি-এর কার্যকারিতা ৯১.৬ শতাংশ বলে দাবি করা হচ্ছে। ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্না সহ পৃথিবীর সেরা প্রতিষেধক হিসেবে বিবেচিত প্রতিষেধকের কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ। অন্যদিকে, ট্রায়ালে ৮১ শতাংশ কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনের।
পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রেও রাশিয়ান প্রতিষেধকটি সসম্মানে পাশ করেছে। শরীরে ক্ষতিকর কোনও প্রতিক্রিয়ার করে না বলেই জানানো হয়েছে। এ পর্যন্ত স্পুটনিক ভি-এর ট্রায়ালে ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, তবে তার কোনওটার সঙ্গেই প্রতিষেধকের সম্পর্ক নেই। ফ্লুয়ের লক্ষণ, সূচ ফোটানোর জায়গায় হালকা ব্যথা এবং দুর্বলতার মতো ছোটখাট সাইড এফেক্টের কথা জানা গেছে।
এক ডোজ স্পুটনিক ভি টিকার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ১০ ডলারেরও কম। তবে ভারত এখনও এর দাম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসেনি। প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে এ নিয়ে দর কষাকষি চলছে বলে খবর। তবে ভারতের বাজারে প্রায় সাড়ে ৭০০ টাকায় পাওয়া যাবে রাশিয়ার করোনা টিকা ‘স্পুটনিক-ভি’। এমনটাই জানিয়েছে এ দেশে ওই টিকার উৎপাদনকারী সংস্থা হায়দরাবাদের সংস্থা ডক্টর রেড্ডি’স ল্যাবরেটরিজ।
২০২০ সালে বিশ্বে করোনা টিকা হিসেবে প্রথম ছাড়পত্র পায় স্পুটনিক ভি। এই ভ্যাকসিন বিশ্বে বাজারজাত করছে ‘রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’। ইতিমধ্যে পাঁচটি শীর্ষ ভারতীয় টিকা প্রস্তুতকারী সংগঠর সঙ্গে চুক্তি করেছে রুশ সংস্থাটি। চুক্তি মতে প্রতিবছর তৈরি হবে ৮৫ কোটি ডোজ। ২০২১ সালের মধ্যেই দেশের ১২ থেকে ১৩ কোটি মানুষের কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার সংস্থা ‘রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’ (আরডিআইএফ)-এর তরফে দাবি করা হয়েছে, ভারতকে নিয়ে বিশ্বের মোট ৬০টি দেশ স্পুটনিক ভি ব্যবহার করছে। যাদের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩০০ কোটি। যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ। আরডিআইএফ আরও দাবি করেছে, ভারতে গ্ল্যান্ড ফার্মা, হেটেরো বায়োফার্মা, পানাসিয়া বায়োটেক, স্টেলিস বায়োফার্মা, ভার্চো বায়োটেক এই পাঁচ সংস্থা বছরে ৮৫ কোটির বেশি স্পুটনিক ভি-র ডোজ তৈরি করবে।