IndiGo Crisis বা সঙ্কট কবে মিটবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আজও প্রচুর বিমান বাতিল। যাত্রীদের টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছে সংস্থা। IndiGo Flights শুধু বাতিলই নয়, দেরি হওয়া বা সময় বদলে ফেলার ঘটনাতেও নাজেহাল যাত্রীরা। বিমানবন্দরে গিয়ে ফ্লাইট ছাড়ার ঘণ্টা খানেক আগেও যাত্রীরা জানেন না, আদৌ গন্তব্যে যেতে পারবেন কিনা। উদ্বেগের প্রতিটি মুহূর্ত।
রবিবার দেশজুড়ে ৬০০-র বেশি বিমান বাতিল ছিল। আজ অর্থাত্ সোমবারও ইন্ডিগো আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছে, সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে যাত্রীদের। সকালেই প্রায় ৩০০ বিমান বাতিল।
এখন প্রশ্ন হল, এই সঙ্কট হঠাত্ তৈরি হল, নাকি এর বীজ বোনা শুরু হয়েছে অনেক আগেই। সংস্থার এক প্রাক্তন কর্মীর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। সেখানে যে কারণ ওই কর্মী জানাচ্ছেন, তা রীতিমতো উদ্বেগের।
এই যাবতীয় সঙ্কটের জন্য ইন্ডিগো দুষছে ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন্সকে। অর্থাত্ পাইলটদের ১০ ঘণ্টা বিশ্রাম বাধ্যতামূলক। কিন্তু এটাই কি একমাত্র কারণ? সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাক্তন কর্মী যা দাবি করলেন, তাতে তো দেখা যাচ্ছে, গলদ অন্য জায়গায়।
ওই প্রাক্তন কর্মীর দাবি, ২০০৬ সালে IndiGo-র প্রথমদিকের কর্মীদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হত। ভাল পরিষেবার উত্সাহ করা হত। তারপর লোভ বাড়তে শুরু করল। সংস্থার শীর্ষস্থানীয় অফিসারদের অহংকার ও নীতিগত পতন শুরু হল।
ওই প্রাক্তন কর্মীর দাবি, আজকের পরিস্থিতি রাতারাতি হয়নি। কয়েক দশকের নির্যাস। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল, কর্মীদের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি রাখা। ইন্ডিগো-র উচ্চপদে এমন ব্যক্তিও রয়েছেন,যাঁরা ঠিক মতো ই-মেল পর্যন্ত লিখতে পারেন না। শুধুমাত্র ভয় দেখিয়ে ও নানা দুর্নীতি করে উচ্চপদে বসে গিয়েছেন।
ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের এই প্রাক্তন কর্মী এখানেই থেমে থাকেননি, বরং তার খোলা চিঠিতে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ করেছেন, লিখেছেন, 'পাইলট, ইঞ্জিনিয়ার এবং গ্রাউন্ড স্টাফ সহ অন্যান্য কর্মচারীদের উপর উঠতি নেতৃত্বকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তাহীন ডিউটি টাইম, ক্লান্তি এবং অপারেশনাল চাপ নিয়ে পাইলটদের হুমকি দেওয়া হত বা অপমান করা হত। যে সব পাইলটরা প্রতিবাদ জানান, তাঁদের ভয় দেখানো শুরু হয়। ডিউটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়।' চিঠিতে বলা হয়েছে এই সমস্ত কিছুর জন্য কোনও কিছুই শোনা হত না, কেবল ভয়ের পরিবেশ। তিনি লিখছেন, পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়ে উঠেছে যে গ্রাউন্ড স্টাফরা, যাঁরা প্রতি মাসে ১৬ হাজার বা ১৮ হাজার টাকা মাইনে পান, তাঁরা সবচেয়ে বেশি চাপের মধ্যে থাকেন। অবস্থা এতটাই ভয়াবহ, এই গ্রান্ড স্টাফদের তিনজনের কাজ একজনকে করতে হয়। চিঠিতে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, বিমান চলাচলে বিঘ্ন, বিলম্ব এবং কর্মী ঘাটতির বর্তমান সঙ্কট কেবল বছরের পর বছর ধরে চলমান উত্তেজনার রেজাল্ট। লেখক উপসংহারে বলেছেন, আমরা বছরের পর বছর ধরে ভেঙে পড়েছি, আমরা সিস্টেম ভেঙে পড়তে দেখেছি, ইউরোপ থেকে নেতৃত্ব আসা-যাওয়া করতে দেখেছি, এবং আমরা আরও মাত্র এক ঘণ্টা বিশ্রামের জন্য প্রার্থনা করেছি।' তবে, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স এখনও এই ভাইরাল চিঠির কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।