মাঝসমুদ্রে ভারতীয় নৌবাহিনীর পরাক্রম। আত্মসমর্পণ করল ৩৫ জন ভয়ঙ্কর সোমালি জলদস্যু। ভারতীয় উপকূল থেকে প্রায় ১,৪০০ নটিক্যাল মাইল দূরে এক বাণিজ্যিক পণ্যবাহী জাহাজ থেকে আত্মসমর্পণ করে জলদস্যুরা। শুধু তাই নয়, সেখান থেকে ১৭ জন ক্রু সদস্যকে নিরাপদে সরিয়ে আনেন নৌবাহিনীর কর্মীরা। আধিকারিকরা বলছেন ভারতীয় নৌবাহিনী রীতিমতো পরিকল্পনা করে এই অভিযান চালায়। মিশন সাকসেসফুল।
মার্কোস কমান্ডোরা কার্গো জাহাজে নামেন
এ যেন সেনা সংক্রান্ত কোনও সিনেমার দৃশ্য। এই অভিযানে যুদ্ধ জাহাজ INS কলকাতা এবং INS সুভদ্রাকে মোতায়েন করা হয়। সেই সঙ্গে মনুষ্যবিহীন বিমান দিয়ে নজর রাখা হচ্ছিল। এরপরে, মার্কোস কমান্ডোরা সি-17 বিমান থেকে জলদস্যুপূর্ণ জাহাজে অবতরণ করেন। হঠাৎ আকাশ থেকে এভাবে কমান্ডোদের আসতে দেখে হকচকিয়ে যায় জলদস্যুরা। বেগতিক বুঝে শেষমেশ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
নৌবাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার বিবেক মাধওয়াল বলেন, 'গত ৪০ ঘণ্টায়, আইএনএস কলকাতা, একটি দুরন্ত অপারেশনের মাধ্যমে ৩৫ জন জলদস্যুকে সফলভাবে ঘিরে ফেলে এবং তাদের আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে। মার্কোস কমান্ডোরা কোনও আঘাত ছাড়াই জাহাজ থেকে ১৭ জন ক্রু সদস্যকে নিরাপদে সরিয়ে এনেছেন।'
সোমালিয়ার পূর্ব উপকূলের সমুদ্রে বাণিজ্যিক জাহাজে ছিনতাই খুবই সাধারণ একটি বিষয়। এই স্থান দিয়ে যাওয়ার সময়ে বাড়তি সতর্ক থাকতে হয় পণ্যবাহী জাহাজগুলিকে। নৌবাহিনী জানিয়েছে, সশস্ত্র জলদস্যুরা রুয়েন নামের এক কার্গো জাহাজ প্রায় তিন মাস আগে হাইজ্যাক করেছিল। ১৪ ডিসেম্বর কার্গো জাহাজটি হাইজ্যাক করা হয়।
নৌবাহিনী জানায়, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর সোমালি জলদস্যুরা এমভি রুয়েন জাহাজটি হাইজ্যাক করে। নৌবাহিনী জানতে পারে, জলদস্যুরা এই জাহাজের মাধ্যমে সমুদ্রে তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিল। এরপরেই নৌবাহিনী এই অভিযান চালায় এবং ৩৫ জন সোমালি জলদস্যুকে আত্মসমর্পণ করে।
ভারতীয় নৌবাহিনী ইতিমধ্যে উত্তর ও মধ্য আরব সাগর সহ গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুটে বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষার জন্য নিরাপত্তা অভিযানের অংশ হিসাবে যুদ্ধ জাহাজ এবং নজরদারি বিমান বাড়িয়েছে। গত কয়েক মাসে, হুথি সন্ত্রাসবাদীরা লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়ছে।