ভারতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত G-20-কে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে সফল সম্মেলন বলা হচ্ছে। সম্মেলনের প্রথম দিনেই G-20 নেতারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেছেন। বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
একদিকে মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ কানেক্টিভিটি করিডোর চালু, আফ্রিকান ইউনিয়নকে G20-তে প্রবেশের অনুমোদনের মতো ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দ্বিতীয় দিনেও G20-র সমস্ত দেশ নয়াদিল্লির ঘোষণাপত্র গ্রহণ করেছে।
আসুন এই শীর্ষ সম্মেলনের পাঁচটি বড় সিদ্ধান্তের বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক:
নয়াদিল্লি ঘোষণাপত্রের বিষয়ে ঐকমত্য
G-20 সদস্য দেশগুলির সকলের সম্মতিতে 'নিউ দিল্লি লিডারস সামিট ডিক্লারেশন' গৃহীত হয়েছে।
ভারত মণ্ডপমে শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিষয়ে জানান। তিনি বলেন, 'আমরা এইমাত্র সুসংবাদ পেয়েছি যে আমাদের কঠোর পরিশ্রম এবং আপনাদের সহযোগিতার মাধ্যমে, নিউ দিল্লি লিডারস সামিট ডিক্লারেশন গৃহীত হয়েছে। আমি সকল মন্ত্রী এবং আধিকারিকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।
ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ করিডোর
G-20 শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ কানেক্টিভিটি করিডোর চালু করা হয়েছে। এর ফলে শিপিংয়ের সময় এবং খরচ কমে যাবে। এটিকে চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের বিকল্প হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE), সৌদি আরব, জর্ডন এবং ইসরায়েল হয়ে ভারত থেকে ইউরোপে পর্যন্ত বিস্তৃত রেলপথ এবং বন্দরগুলিকে একত্রিত করা হবে। রেল সংযোগের মাধ্যমে ভারত ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্যের গতি প্রায় ৪০% বেড়ে যেতে পারে। এটি চিনের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্স
ভারতের আরও একটি প্রস্তাবে সম্মতি মিলেছে। সম্মেলনের প্রথম দিনেই গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্স গৃহীত হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল দীর্ঘ মেয়াদে জৈব জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করা। অর্থাৎ উদ্ভিদ, শস্য, শ্যাওলা, ভুষি এবং খাদ্য বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদন করা। এর ব্যবহার বাড়লে পেট্রোল ও ডিজেলের ওপর সবার নির্ভরতা কমবে। পরিবেশ দূষণও কমবে।
আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রবেশ
G-20 সম্মেলনের প্রথম দিনে, ভারত আফ্রিকান ইউনিয়নকে G-20-র স্থায়ী সদস্য করার প্রস্তাব করেছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদী সমস্ত দেশের সম্মতিতে এটি পাশ করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, আফ্রিকায় চিনের প্রভাব বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আফ্রিকা মহাদেশে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় ভারতের পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের ১২টি দ্রুত বর্ধনশীল দেশের মধ্যে ৬টি আফ্রিকার।
6G প্রযুক্তির বিষয়ে ঐকমত্য
6G প্রযুক্তি নিয়ে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। এতে চীনের কানেক্টিভিটি ডিভাইস সেক্টরে শক্তি কমে যাবে। বর্তমানে 5G-র ক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে চিনের আধিপত্য রয়েছে।