আহমেদাবাদ এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে নয়া মোড়। দুর্ঘটনার প্রায় এক মাস পরে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করল বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত সংস্থা (AAIB)। আর সেই রিপোর্টেই উঠে এসেছে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য।
প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১২ জুন দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এয়ার ইন্ডিয়া (AI171)–এর বোয়িং ৭৮৭–৮ ড্রিমলাইনার বিমান। আকাশে ওড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন পাইলট। এরপরই বিমানটি আহমেদাবাদ বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে আছড়ে পড়ে। মূহূর্তে প্রাণ হারান ২৬০ জন। মাত্র একজন যাত্রী বেঁচে যান।
হঠাৎ ইঞ্জিনে জ্বালানি যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়
তদন্তে জানা গিয়েছে, বিমানটি যখন আকাশে উঠতে শুরু করেছিল, সেই সময় বিমানের নিয়ন্ত্রণ ছিল কো-পাইলট ক্লাইভ কুন্দরের হাতে। ক্যাপ্টেন সুমিত সভরওয়াল পর্যবেক্ষণ করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই বিমানের ইঞ্জিন ১ এবং ২–এর ফুয়েল সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যায়। ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে শোনা গিয়েছে এক পাইলট অপর পাইলটকে জিজ্ঞেস করছেন, 'তুমি জ্বালানি বন্ধ করেছ কেন?' উত্তরে অপর পাইলট বলছেন, 'আমি কিছু বন্ধ করিনি।'
মাত্র ২৬ সেকেন্ডের মধ্যেই ‘মেডে’ কল আসে। প্রচণ্ড বিপদের আশঙ্কা থাকলেই বিমানচালকরা এই সংকেত দেন। ১:৩৮:৩৯-এ বিমান টেক অফ করেছিল। ১:৩৯:০৫–এ ককপিট থেকে এমার্জেন্সি কল আসে। এরপরই বিমানটি ক্র্যাশ করে।
প্রসঙ্গত, ক্যাপ্টেন সভরওয়াল একজন সিনিয়র ট্রেনিং পাইলট ছিলেন। তাঁর ১৫,৬৩৮ ঘণ্টারও বেশি ওড়ার অভিজ্ঞতা ছিল। এর মধ্যে বোয়িং ৭৮৭–ই সব মিলিয়ে ৮,৫৯৬ ঘণ্টা উড়িয়েছেন। সহ-পাইলট ক্লাইভ কুন্দরও কম অভিজ্ঞ নন। ২০১৭ সালেই এয়ার ইন্ডিয়া–তে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর মোট ৩,৪০৩ ঘণ্টা বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তার মধ্যে ড্রিমলাইনারেই ১,১০০ ঘণ্টা।
তদন্তে কোনও প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা ষড়যন্ত্রের প্রমাণ এখনও মেলেনি বলে জানিয়েছে AAIB। এখনও পর্যন্ত বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বা এর GE GEnx-1B ইঞ্জিন ব্যবহারে কোনও নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়নি। তবে দুর্ঘটনার চূড়ান্ত রিপোর্টে আরও অনেক তথ্য উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।