এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব আবারও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, "ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছা অনুযায়ী দেশ চলবে। এটি আইন ও ন্যায়বিচারের মূলনীতি।"
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মঞ্চে বক্তব্য
প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি অনুষ্ঠানে ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) প্রসঙ্গে এই বক্তব্য রাখেন বিচারপতি যাদব। অনুষ্ঠানে হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি দীনেশ পাঠকও উপস্থিত ছিলেন।
মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রথাগুলি নিয়ে সমালোচনা
মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম উল্লেখ না করেও বিচারপতি যাদব বহুবিবাহ, তিন তালাক, এবং হালালার মতো প্রথাগুলিকে “অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, "একাধিক স্ত্রী রাখা কিংবা তিন তালাক দেওয়া নারীদের সম্মানহানি করে। এগুলি কোনোভাবেই ভারতের আইন মেনে চলতে পারে না।"
হিন্দু ধর্ম ও সংস্কারের উল্লেখ
বিচারপতি যাদব হিন্দুধর্মের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন যে, “বাল্যবিবাহ ও সতীদাহ প্রথার মতো কু-সংস্কার হিন্দু সমাজ থেকে সংস্কারকরা মুছে দিয়েছেন। তেমনই অন্যান্য সম্প্রদায়গুলোকেও তাদের সংস্কার করতে হবে।”
সহনশীলতার বিষয়ে মন্তব্য
তিনি বলেন, “হিন্দু সংস্কৃতি ক্ষুদ্রতম প্রাণীকেও সম্মান করতে শেখায়। অন্য সম্প্রদায়ের উচিত ভারতীয় সংস্কৃতি ও মহান ব্যক্তিত্বদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।”
অভিন্ন নাগরিক বিধি ও ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি
বিচারপতি যাদব অভিন্ন নাগরিক বিধির প্রতি জোর দিয়ে বলেন, “একটি দেশে একটাই আইন থাকা উচিত। রাম মন্দির নির্মাণের মতো অভিন্ন নাগরিক বিধির বাস্তবায়নও সময়ের ব্যাপার।”
পূর্বের বিতর্কিত মন্তব্য
এর আগেও বিচারপতি যাদব বিতর্কে জড়িয়েছেন। ২০২১ সালে তিনি দাবি করেছিলেন, “গরু একমাত্র প্রাণী যা অক্সিজেন নির্গত করে।” তিনি গরুকে জাতীয় পশু করার এবং গোরক্ষাকে হিন্দুদের মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সমালোচনার ঝড়
বিচারপতি যাদবের মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই তার বক্তব্যকে বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতার পরিপন্থী বলে অভিহিত করছেন। একইসঙ্গে, তার বক্তব্য দেশের বহুত্ববাদী ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।