একটি রাজনৈতিক দল মানে সেটা একটি 'সংগঠন' বা 'একদল মানুষের সংস্থা'। তাই তারা 'প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (PMLA)'-এর ৭০ নম্বর ধারার আওতায় পড়ে। মঙ্গলবার এমনটাই জানাল দিল্লি হাইকোর্ট। এর ফলে আম আদমি পার্টি(AAP) যে মদ মামলায় আরও চাপে পড়বে, তা ধরে নেওয়াই যায়।
গ্রেফতারকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তার শুনানির সময়েই হাইকোর্ট এই পর্যবেক্ষণের বিষয়ে জানিয়েছে।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ED)-এর হাতে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারকেও মান্যতা দিয়েছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বেঞ্চ জানায়, রাজনৈতিক দলগুলি PMLA এর ৭০ নম্বর ধারার আওতায় পড়ে। কারণ এটি একটি 'ব্যক্তিদের সংগঠন', কোনও সংস্থার মতোই।
উচ্চ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে এবার রাজনৈতিক দলগুলি PMLA-এর আওতায় এসে যাবে। ক্ষেত্র বিশেষে রাজনৈতিক দলগুলিকে অর্থ পাচারের মামলায় অভিযুক্ত করতে পারবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
আরও উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, আবগারি নীতির ক্ষেত্রে, কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা AAP-কে একটি কোম্পানির সঙ্গে তুলনা করার পাশাপাশি এবং কেজরিওয়ালের তার 'ডিরেক্টরের' সঙ্গে তুলনা করেছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর হেফাজত চাওয়ার সময়ে ইডি রাউস এভিনিউ আদালতে জানায়, 'AAP অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মাধ্যমে টাকা পাচারের অপরাধ করেছে। এই অপরাধ PMLA (মানি লন্ডারিং প্রিভেনশন আইন)-এর ৭০ নম্বর ধারার মধ্যে পড়ে।'
PMLA এর ৭০ নম্বর ধারা কী?
৭০ নম্বর ধারার অধীনে, কোনও সংস্থা আর্থিক তছরূপ করলে তার শাস্তি প্রদান করা হয়। এই ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনও কোম্পানি প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (PMLA) লঙ্ঘন করে, লঙ্ঘনের সময় কোম্পানির কার্যকলাপ তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা কোনও ব্যক্তি দোষী বলে বিবেচিত হবেন।
কারাগারেই থাকবেন কেজরিওয়াল
লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লি হাইকোর্টে বড়সড় ধাক্কা পেয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লি হাইকোর্ট তাঁর গ্রেফতারকে চ্যালেঞ্জ করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। আদালত জানায়, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর সংগৃহীত বিভিন্ন বিষয়ে অনুমান করা হচ্ছে যে তিনি ষড়যন্ত্র করেছিলেন এবং সেই অর্থ ব্যবহার এবং লুকানোতে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।
হাইকোর্টের আদেশের পর, আপাতত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিহার জেলে থাকবেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
হাইকোর্টের আদেশের পরপরই অবশ্য আম আদমি পার্টি জানায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাঁর গ্রেফতারের বিরুদ্ধে শীঘ্রই সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। এই আবগারি নীতি মামলা তাদের দলকে ধ্বংস করার জন্য 'দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র' বলে অভিহিত করেছে AAP।