অসমে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই আরও ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। সরকারি তরফে জানানো হয়েছে যে এখনও পর্যন্ত ৫২ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ৩০টি জেলায় ২৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। কাছাড়, কামরূপ, ধুবরি, নগাঁও, গোয়ালপাড়া, বারপেটা, ডিব্রুগড়, বোঙ্গাইগাঁও, লখিমপুর, জোড়হাট, কোকরাঝাড়, করিমগঞ্জ এবং তিনসুকিয়া ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে। তিনি কেন্দ্র থেকে সাহায্য করার কথা জানিয়েছেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জনগণকে উদ্ধার ও ত্রাণ দেওয়ার জন্য যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করছে।
এর আগে শুক্রবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী ডিব্রুগড় জেলার বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। অসমের ভৌগোলিক অবস্থান ও আবহাওয়ার কারণেই এখানে বারেবারে বন্যা হয়। আসলে, অসমের ভৌগোলিক অবস্থান একটি বাটির মতো, যেখানে জল জমা হয়। অসম একটি রাজ্য যা সম্পূর্ণরূপে নদী উপত্যকায় অবস্থিত। এখানকার মোট আয়তন ৭৮,৪৩৮ বর্গ কিমি। ব্রহ্মপুত্র নদের উপত্যকায় ৫৬,১৯৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা অবস্থিত। বাকি ২২,৪৪৪ বর্গ কিমি বরাক নদীর উপত্যকায় অবস্থিত। প্রতি বছর অসনের মোট এলাকার প্রায় ৪০ শতাংশ বন্যায় তলিয়ে যায়।
অসমে দুটি প্রধান নদী রয়েছে। প্রথমটি ব্রহ্মপুত্র এবং দ্বিতীয়টি বরাক। এ দুটি ছাড়াও ছোট ও উপনদী রয়েছে ৪৮টি। এ কারণে এখানে বন্যার ঝুঁকি বেশি। সামান্য বৃষ্টিতেই এখানে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও অরুণাচল প্রদেশ এবং মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপন্ন কিছু নদী-সহ ১২০টিরও বেশি নদীর স্রোত অসমের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই নদীগুলিতে জল বাড়লেই অসম ফি বছর বন্যায় ভাসে। নিমাতিঘাট, গুয়াহাটি, গোয়ালপাড়া এবং ধুবড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদ বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা আশেপাশের বাসিন্দাদের জন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলছে। অন্যদিকে, কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে বন্যার ফলে ১১৪টি বন্য প্রাণী মারা গিয়েছে। শনিবার পর্যন্ত ৯৫টি প্রাণীকে উদ্ধার করা হয়েছে।