ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ হিংসার আগুনে জ্বলছে। বিক্ষোভে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা। বিপুল সংখ্যক আন্দোলনকারী ঢাকায় তাঁর বাসভবনে ঢুকে লুটপাট শুরু করে। ভেঙে ফেলা হয় বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের মূর্তি। উত্তেজনার মধ্যে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শিগগিরই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কথা বলেছেন। এদিকে হিংসা বিধ্বস্ত বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের একটি বড় বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। এবং উভয় দেশই অনেক প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি-রফতানি করে। আসুন জেনে নিই বাংলাদেশ থেকে ভারতে কী আসে এবং এখান থেকে কী পাঠানো হয়।
হিংসার কারণে প্রতিদিন কোটি টাকার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে চলমান হিংসার প্রভাব পড়েছে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যেও। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন ১৫০ কোটি টাকারও বেশি ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পেট্রাপোল এবং বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৩০,০০০ কোটি টাকার বার্ষিক বাণিজ্য হয়, যা গত কয়েকদিন ধরে স্থবির হয়ে পড়েছে।
ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি অংশীদার
আমরা যদি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের দিকে বিস্তারিতভাবে দেখি, ibef.org-এ উপলব্ধ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ভারতের একটি প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি অংশীদার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে মোট বাণিজ্য ছিল ১৪.২২ বিলিয়ন। FY২৩ সালে ভারত থেকে বাংলাদেশে ৬,০৫২ আইটেম রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানির সংখ্যা ছিল ১২.২০ বিলিয়ন, যা FY২২ তে ১৬.১৫ বিলিয়নের কম ছিল।
ভারত থেকে বাংলাদেশে পাঠানো প্রধান পণ্য (FY ২০২৩)
তুলো সুতো (১.০২ বিলিয়ন)
পেট্রোলিয়াম পণ্য (৮১৬ মিলিয়ন)
শস্য (৫৫৬ মিলিয়ন)
কটন টেক্সটাইল এবং অন্যান্য ফেসিং (৫৪১ মিলিয়ন)
জৈব এবং অজৈব রাসায়নিক (৪৩০ মিলিয়ন)
বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা পণ্যের কথা বললে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১১৫৪টি পণ্য আমদানি হয়েছে। যা ছিল প্রায় ২.০২ বিলিয়ন, যেখানে আগের FY২২-এ এই সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছিল ১.৯৭ বিলিয়ন।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসছে প্রধান পণ্য (FY ২০২৩)
আরএমজি তুলা (৫১০ মিলিয়ন)
সুতি কাপড়, তৈরি (১৫৩ মিলিয়ন)
আরএমজি মানুষের তৈরি ফাইবার (১৪২ মিলিয়ন)
মশলা (১২৫ মিলিয়ন)
পাট (১০৩ মিলিয়ন)
সম্প্রতি ভারতীয় টাকায় ব্যবসা শুরু হয়েছে
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। এটা থেকেও অনুমান করা যায় যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশ এখন ভারতীয় টাকায় বাণিজ্য শুরু করে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে মোদী সরকার গঠনের পর ২২ জুন ভারতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এই সময়ে অনেক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।