Advertisement

বিহার জুড়ে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া, তারপরেও অবিচল নীতীশ রথ

এর আগে লালুপ্রসাদ বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তাই এবারও প্রশ্ন উঠছিল ফের ১৫ বছর পর শাসক বদলের পুনরাবৃত্তি কী হতে চলেছে বিহারে। ভোটপর্ব মেটার পর বিভিন্ন মিডিয়া হাউসের Exit Poll-ও সেই ইজ্ঞিতই দিচ্ছিল। সবমিলিয়ে ভোটের ফলপ্রকাশের আগে নীতীশের ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনার উপরে যেন কালো মেঘ জড় হচ্ছিল৷

Nitish Kumar
সুমনা সরকার
  • ,
  • 10 Nov 2020,
  • अपडेटेड 12:51 PM IST
  • বিহারে ছিল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া
  • যুব সমাজের মধ্যে জলছিল ক্ষোভের আগুন
  • তার পরেও নীতীশের নেতৃত্বে এনডিএর বাজিমাত

২০০৫ সাল, বিহারের ইতিহাসে নীতীশ রাজের সূচনা। যেই বিজয়রথ চলছে ২০২০ সালেও। একসময় বিহারে ভোট মানেই ছিল গুণ্ডা-মাফিয়াদের রাজত্ব। সেখান থেকে আজকের বিহার ১৮০ ডিগ্রি বদলেছে। আর তার কৃতীত্বের অনেকটাই দাবিদার নীতীশ কুমার। বিহার কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর  বিটেক নীতীশের হাত ধরেই বিকাশ দেখেছে বিহার। রাজ্যজুড়ে কমেছে মাফিয়ারাজ। ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত লালুপ্রসাদের বিহাররের থেকে অনেকটাই আলাদা নীতীশের বিহার। লালুর জামানাকে জঙ্গলরাজ বলেই বিঁধে থাকে বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বিহারে ভোট প্রচারে এসে সেই জঙ্গলরাজকে নিশানা করেছিলেন। আর জঙ্গলরাজের যুবরাজ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তেজস্বীকে। তুলে ধরেছিলেন নীতীশ আমলের সুশাসনকে। তবে মানুষের মধ্যে তলে তলে ক্ষোভ যে জমা হচ্ছিল তা নিজেও বুঝতে পারছিলেন নীতীশ কুমার। এবারের বিধানসভা ভোটে একাধিক জায়গায় প্রচারে গিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মধ্যেও পড়তে হয়েছিল নীতীশকে। তাই ভোটযুদ্ধে বৈতরণী পার হতে প্রচারের শেষদিন মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছিলেন জেডিইউ প্রধান। ভোটারদের মধ্যে সহানুভূতির ঝড় তুলতে অবসরের ইজ্ঞিত দিয়েছিলেন নীতীশ। আর তার এই বার্তাকে বিরোধী শিবির ফল বেরনোর আগেই নীতীশের পরাজয় স্বীকার করে নেওয়া বলে উৎসাহিত হয়ে উঠেছিল।

নীতীশের বিরুদ্ধে এবার যেমন প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া ছিল তেমনি ছিল তরুণ রক্তের আক্রমণ। দীর্ঘ ১৫ বছর শাসনে নীতীশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি। তবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে জরুরি ছিল কর্মসংস্থান। জাতপাতের রাজনীতির সঙ্গে অভ্যস্ত বিহারের যুবসমাজের গলাতেও তাই ছিল পরিবর্তনের সুর৷ স্পষ্টতই লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বীর দিকে ঝুঁকে পড়ে বিহারের যুবসমাজ৷ এর আগে লালুপ্রসাদ বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তাই এবারও প্রশ্ন উঠছিল ফের ১৫ বছর পর শাসক বদলের পুনরাবৃত্তি কী হতে চলেছে বিহারে। ভোটপর্ব মেটার পর  বিভিন্ন মিডিয়া হাউসের Exit Poll-ও সেই ইজ্ঞিতই দিচ্ছিল। সবমিলিয়ে ভোটের ফলপ্রকাশের আগে নীতীশের ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনার উপরে যেন কালো মেঘ জড় হচ্ছিল৷

Advertisement

গত বছরও বিহারে বেকারত্বের হার ছিল ১০.৩ শতাংশ৷ দেশে যে রাজ্যগুলিতে বেকারত্বের হার সবথেকে বেশি, তার মধ্যে অন্যতম বিহার৷ করোনাকালে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা নীতীশকে আরও অসহায় করে তুলেছিল। কর্মসংস্থানের খোঁজে বিহারের যুবসমাজ তাই লালুপুত্রের মধ্যেই ভরসা খুঁজতে চেয়েছিল। রাজ্যে বেকারত্বের সমস্যাকে তুলে ধরে প্রতিটি জনসভায় নীতীশ সরকারকে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন তেজস্বীও৷ ফলও পাচ্ছিলেন হাতেনাতে৷ তেজস্বীর জনসভাগুলিতে যুবসমাজের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো৷ ভোট প্রচারে দশ লক্ষ সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তেজস্বী৷ ফলে নীতীশের সূর্য যে ডুবতে চলেছে তা ধরেই নিয়েছিল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে আমজনতা। তবে মঙ্গলবার পাল্টে গেল হিসাব। সোমবার ছিল লালুপুত্র তেজস্বীর জন্মদিন। ছেলেকে আরজেডি প্রধান বলেছিলেন তাঁক জন্মদিনের উপহার এবার রাজ্যবাসী দেবে। সকালে ভোটগণনা শুরু হতে তেজস্বীর মুখের হাসিও চওড়া হচ্ছিল। কিন্তু বেলা বাড়তেই ঘুরতে থাকে চাকা। তারপর দিনভর দুই শিবিরের দড়ি টানাটানি। দলগত আসনের হিসেবে আরজেডি এগিয়ে থাকলেও বিহারে এগিয়ে এনডিএ জোট। নির্বাচনে আসন সংখ্যা কমলেও বুড়ো হাড়ে ভেল্কি দেখালেন নীতীশ। তেজস্বী ঝড় উঠলেও ফের একবার অভিজ্ঞ নীতীশের উপরেই ভরসা রাখল বিহারবাসী। 

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement