হিমাচল প্রদেশের মান্ডি লোকসভা আসনের ভারতীয় জনতা পার্টির সংসদ রামস্বরূপ শর্মার অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে ক্রমেই দানা বাঁধছে রহস্য। নয়া দিল্লির নর্থ অ্যাভিনিউয়ের বাসভবন থেকে বুধবার সকালে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। এখানেই স্ত্রী ও তিন সন্তানের সঙ্গে থাকতেন ৬২ বছরের সাংসদ। বিজেপি সাংসদের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। আত্মহত্যার কারণ এখনও জানা যায়নি।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ তাদের কাছে খবর আসে বিজেপি সাংসদ রামস্বরূপ শর্মা আরএমএল হাসপাতালের কাছে গোমতী অ্যাপার্টমেন্টে (সাংসদের ফ্ল্যাট) আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ আধিকারিকরাঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংসদের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। আত্মহত্যার পেছনের কারণ এখনও পরিষ্কার হয়নি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
সাংসদের কর্মীদের বয়ান
বিজেপির সাংসদ রামস্বরূপ শর্মার এক কর্মীর বায়ন, 'আমি যখন আজ সকালে ঘরটি খুলতে গিয়েছিলাম তখন সেটি ভিতরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। বারবার ফোন করার পরেও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি, তখন পুলিশকে ডাকা হয়েছিল। পুলিশ দরজা ভেঙে সাংসদের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।'
রামস্বরূপ শর্মার কেরিয়ার
হিমাচলপ্রদেশের মাণ্ডি জেলাতে ১৯৫৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রামস্বরূপ শর্মা। ২০১৪ সালে প্রথম লোকসভা নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফের মাণ্ডি থেকেই জয়লাভ করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বেশ কিছু দিন পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটির বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন। গত কয়েকমাস ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। জানা যাচ্ছে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি।
শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্ব। আপাতত সংসদের সমস্ত কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। এই ঘটনার ফলে বাতিল করা হয়েছে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক। শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
মৃত্যু নিয়ে রহস্য যেখানে
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, আত্মহত্যা করেছেন সাংসদ শর্মা। যদিও ময়নাতদন্তের পর গোটা বিষয় পরিষ্কার হবে। এদিকে, সাংসদের এহেন মৃত্যুতে রীতিমতো জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। হত্যার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। প্রসঙ্গত গত ফেব্রুয়ারি মাসে মুম্বইয়ের মেরিন ড্রাইভ এলাকায় একটি হোটেলে মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয় কেন্দ্রশাসিত দাদরা ও নগরহাভেলির সাংসদ মোহন দেলকারের দেহ। দীর্ঘদিন কংগ্রেসের সাথে যুক্ত থাকা মোহন দেলকার ২০১৯ সালে দলের সঙ্গে সম্পর্ক থেদ করেন। তারপর নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে জেতেন। পরবর্তীতে তিনি ভারতীয় নবশক্তি পার্টিতে তিনি যোগ দেন। সুইসাইড নোটে একাধিক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি।