একই ফ্লাইটে যাচ্ছিলেন দু'জনে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং কলকাতার এক ব্যবসায়ী। অক্ষয় সাতনালিওয়ালা নামে ওই ব্যবসায়ী রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার অনুমতি মেলেনি। এরপর তিনি তাঁর প্রস্তাবটি বিমানের একটি ন্যাপকিনে লিখে মন্ত্রীর কাছে পাঠান। অভিনব সেই প্রস্তাবের পরই রেলের তরফে বৈঠকে ডাকা হয় ওই ব্যবসায়ীকে। ন্যাপকিনে লেখা সেই ব্যবসায়ীক প্রস্তাবটি ভাইরাল হয়েছে।
২ ফেব্রুয়ারি দিল্লি থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে দুজনেই একই ফ্লাইটে ছিলেন। একই ফ্লাইটে রেলমন্ত্রীকে দেখতে পেয়ে সাতনালিওয়ালা তাঁর ব্যবসায়িক ধারণা নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন, যা নিয়ে তিনি অনেক দিন ধরেই ভাবছিলেন। তবে ফ্লাইট প্রটোকল ও উচ্চ নিরাপত্তার কারণে তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেননি। অবশেষে, তিনি একটি টিস্যু পেপারে তার প্রস্তাব লিখেছিলেন এবং অনেক চেষ্টার পরে অশ্বিনী বৈষ্ণবের কাছে জমা দিতে সক্ষম হন।
টিস্যু পেপারে ওই ব্যবসায়ী লেখেন, 'প্রিয় স্যার, আমি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বৃহত্তম কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংস্থা মেসার্স ইস্টার্ন অর্গানিক ফার্টিলাইজার প্রাইভেট লিমিটেডের প্রতিনিধিত্ব করছি।'
তিনি তার কোম্পানির কাজ সম্পর্কে লিখেছেন এবং অশ্বিনী বৈষ্ণবকে তার ব্যবসার ধারণাটি জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, 'স্যার, আপনি যদি অনুমতি দেন, আমি জানাতে চাই যে, কীভাবে রেলওয়ে সাপ্লাই চেইনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠতে পারে... এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভারত অভিযানে অবদান রাখতে পারে।'
টিস্যু পেপারের ওই লেখা রেলমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর পরই যে পূর্ব রেলের সদর দফতর থেকে জেনারেল ম্যানেজারের ফোন আসবে, সেটা সাতনালিওয়ালা ভাবতেও পারেননি। জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ কে দেউস্কর সাতনালিওয়ালার সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। সংস্থাটির সঙ্গে মাল পরিবহনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
মঙ্গলবার পূর্ব রেলের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর, বৈঠকের সময় সাতনালিওয়ালা দেশের বিভিন্ন অংশে, যেমন ছত্তিশগড়ের রায়পুর এবং ওড়িশার রাজগঙ্গাপুরে বিভিন্ন শিল্প এবং সম্ভাব্য কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছিলেন। ব্যবসায়িক সম্ভাবনার প্রতি সাড়া দিয়ে, পূর্ব রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক রেলপথের মাধ্যমে কঠিন এবং অন্যান্য বর্জ্য পরিবহনের জন্য নমনীয় শর্তাবলী অফার করেছেন, যা পরিবহনের একটি সাশ্রয়ী পদ্ধতি। রেলপথের মাধ্যমে এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য পরিবহন বর্জ্য পুনর্ব্যবহারে অবদান রাখবে, যার ফলে প্রক্রিয়ায় দূষণ হ্রাস পাবে। বৈঠকে কলকাতা-শিয়ালদা ডিভিশনের চিৎপুর ইয়ার্ড থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আবর্জনা ভরার নীতি ও সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
'ইন্ডিয়া টুডে টিভি'কে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেছেন, 'সংস্থাটি আনন্দ প্রকাশ করেছে যে, রেলমন্ত্রীর কাছে একটি ন্যাপকিনে লেখা সহজ আবেদনে সাড়া মিলেছে শুরু হয়েছে। যা একজন সাধারণ ব্যবসায়ীর কল্পনার বাইরে। তাঁরা এমন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার জন্য রেলমন্ত্রী এবং পূর্ব রেলের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।'