'ঘুষের বদলে প্রশ্ন' মামলায় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিপদ বাড়ছে। লোকসভায় মহুয়ার সদস্যপদ খারিজের পক্ষেই সমর্থন এথিক্স কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য। আজ অর্থাত্ বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটির রিপোর্টে দেখা গেল, ৬ সদস্য কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পক্ষে। ৪ জন সদস্য বিপক্ষে। মহুয়ার বিরুদ্ধে থাকা ৬ সাংসদের মধ্যে একজন কংগ্রেসের বহিষ্কৃত সাংসদও রয়েছেন।
এথিক্স কমিটির প্রধান বিনোদ সোনকার জানিয়েছেন, অপরাজিতা সারঙ্গি, রাজদীপ রায়, সুমেধানন্দ সরস্বতী, প্রিনীত কউর, বিনোদ সোনকার ও হেমন্ত গোডসে। যাঁরা মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে সমর্থন করেননি, তাঁরা হলেন দানিশ আলি, ভি ভাইথিলিঙ্গম, পিআর নটরাজন ও গিরিধারী যাদব।
ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলা এবং লোকসভার পোর্টালে লগ ইন করার পাসওয়ার্ড অন্যকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল মহুয়ার বিরুদ্ধে। প্রথম অভিযোগ অস্বীকার করলেও দ্বিতীয়টি মেনে নেন তিনি। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর এথিক্স কমিটি তৃণমূল সাংসদকে বহিষ্কারের সুপারিশ করল স্পিকার ওম বিড়লার কাছে। এথিক্স কমিটির বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে ৫০০ পাতার খসড়া রিপোর্ট অনুমোদিত হয়েছে।
তাহলে মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ চূড়ান্ত? নিয়ম হল, স্পিকার এই প্রস্তাব পেশ করবেন সংসদের অধিবেশনে। বিরোধীরা আলোচনা চাইলে তা আদৌ স্পিকার গ্রহণ করবেন কি না সেটি তাঁর এক্তিয়ারের বিষয়। তবে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের অভিযোগের ভিত্তিতে শুনানি করেছে লোকসভার এথিক্স কমিটি। দুবের অভিযোগ, দুবাইয়ের শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির থেকে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। স্পিকারকে চিঠি দিয়ে মহুয়ার সাসপেনশনের দাবিও তোলেন তিনি। এর পরেই হীরানন্দানি হলফনামা দিয়ে জানান, মহুয়ার সংসদের লগইন আইডি জেনে তাতে প্রশ্ন পোস্ট করতেন তিনি। তবে ঘুষের অভিযোগ মানেননি। মহুয়াও নিজের লগ ইন আইডি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ মানেননি।
এথিক্স কমিটির খসড়ায় মূলত তিনটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এক, মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ বাতিল করা হোক। দুই, শুধু সাংসদ পদ বাতিলই নয়, একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হোক। তিন, এথিক্স কমিটির বৈঠকে বিএসপি সাংসদ দানিশ আলিও নিয়মভঙ্গ করেছেন। তাঁর সেই আচরণকেও নথিবদ্ধ করা হচ্ছে।