মণিপুর ইস্যুতে সংসদে সরব বিরোধীরা। অচলাবস্থা সংসদে। ব্যাহত স্বাভাবিক কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে সরাসরি বিরোধী সদস্যদের কাছে আর্জি জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়াল এবং প্রহ্লাদ জোশী, কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খার্গে এবং অন্যান্য বিরোধী নেতাদের অনুরোধ জানান। সংসদের স্বাভাবিক কার্জক্রম যাতে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতার ডাক দেন তিনি।
কেন্দ্র বিরোধী সাংসদদের কাছে পৌঁছেছে যখন তারা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখরের ডাকা একটি বৈঠক এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যার লক্ষ্যে হাউসের মসৃণ কার্যকারিতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের ডাকা একটি বৈঠকে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন বিরোধীরা। মণিপুর ইস্যুতে সরকারের জবাবদিহিতা চেয়ে এই পদক্ষেপ। এরপরেই কেন্দ্র বিরোধী সাংসদদের সরাসরি আর্জি জানান পীযূষ গোয়াল।
রাজ্যসভার নেতা, পীযূষ গোয়েল এবং সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী, প্রহ্লাদ জোশী, কংগ্রেস প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাজ্যসভায় বিরোধী দলের নেতা হিসাবে তাঁর সহযোগিতা প্রার্থনা করা হয়।
বৈঠক চলাকালীন, INDIA জোটের নেতারা পাল্টা প্রস্তাব দেন। তাঁরা বলেন, অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে মণিপুর নিয়ে একটি অবিচ্ছিন্ন এবং নিরবচ্ছিন্ন আলোচনা প্রয়োজন। অবিলম্বে রাজ্যসভায় সেই আলোচনা শুরু করা উচিত। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
মণিপুর ইস্যুতে বিরোধী বনাম কেন্দ্র
মণিপুর হিংসা নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি চাই। এমনই দাবিতে সরব হয়েছেন বিরোধী নেতারা। এই দাবির প্রেক্ষিতে, সরকার জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিবৃতি দেবেন।
বিরোধীদের এক সূত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি এবং মণিপুর নিয়ে একটি বিস্তৃত আলোচনা করাই তাঁদের দাবি।
এর পাশাপাশি, বিরোধী দলগুলি ২৬৭ ধারার অধীনে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে চাইছে। এই ধারার মাধ্যমে সংসদের নির্ধারিত কার্যক্রম বন্ধ রেখে কোনও নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনা করা যায়। কিন্তু তাতে নারাজ কেন্দ্র সরকার। এর পরিবর্তে তারা রাজ্যসভার ১৭৬ নম্বর ধারার অধীনে স্বল্পমেয়াদী আলোচনা পরিচালনা করতে রাজি হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ বিরোধী দলের নেতাদের
বুধবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে স্মারকলিপি জমা দেন বিরোধী দলনেতারা। তাতে মণিপুর ইস্যুতে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের দাবী জানান তাঁরা।
মণিপুরে শান্তি ফেরাতে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শনের দাবিও তুলেছেন তাঁরা।
রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে, বিরোধী জোটের নেতারা হরিয়ানার নুহতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার বিষয়টি উত্থাপন করেন। তাঁদের অভিযোগ, 'প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরেই এমন ঘটনা হচ্ছে। অথচ এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার মাথা ঘামায় না।' .
মণিপুর হিংসা নিয়ে লোকসভায় কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে। আগামী ৮ তারিখ এই বিতর্ক পর্ব শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১০ অগাস্ট বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের জবাব দেবেন। গত ২৬ শে জুলাই, বিরোধী দলগুলির তরফে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিশ পেশ করেছিলেন। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ৫০ জন সাংসদের সমর্থন পাওয়ার পরে অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেন।