কৃষকদের আন্দোলনে অবশেষে নরম মনোভাব দেখাল মোদী সরকার। তৃতীয় বার সরকার গঠনের পর পরই কৃষকদের জন্য নয়া ঘোষণা করল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। ১৪টি খরিফ শস্যের এমএসপি বা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠক বসেছিল। বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
জানা গিয়েছে, ২০২৪-২৫ সালের জন্য খরিফ শস্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ধানের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ক্যুইন্টাল প্রতি ২৩০০ টাকা করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১১৭ টাকা বেশি। তুর ডালের এমএসপি হবে এবার ক্যুইন্টাল প্রতি ৭ হাজার ৫৫০ টাকা। যা গত বছরের তুলনায় ৫৫০ টাকা বেশি। মুগের এমএসপি প্রতি ক্যুইন্টাল ৮ হাজার ৬৮২ টাকা হবে, যা গত বছরের তুলনায় ১২৪ টাকা বেশি। চীনাবাদামের এমএসপি ক্যুইন্টাল প্রতি ৬ হাজার ৭৮৩ টাকা হবে, যা গত বছরের তুলনায় ৪০৬ টাকা বেশি।
তুলার MSP হবে ক্যুইন্টাল প্রতি ৭ হাজার ১২১ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ৫০১ টাকা বেশি। জোয়ারের MSP হবে ক্যুইন্টাল প্রতি ৩ হাজার ৩৭১ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১৯১ টাকা বেশি। ভুট্টার MSP হবে ক্যুইন্টাল প্রতি ২ হাজার ২২৫ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১৩৫ টাকা বেশি।
মোদী সরকারের আমলে দেশের একাংশে কৃষকদের আন্দোলনে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। হরিয়ানা-পঞ্জাব সীমানায় আন্দোলনে শামিল হয়েছেন কৃষকরা। কৃষকদের সংগঠনের তরফে যৌথ বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে, অবিলম্বে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য চালু ছাড়াও স্বামীনাথন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ফসলের দাম স্থির করতে হবে। তাছাড়া গ্রেফতার হওয়া কৃষকদের মুক্তি এবং প্রবীণ কৃষক-মজদুরদের অবসরকালীন ভাতা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি ওই আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের সঙ্গে 'কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই' করার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। শুধু তাই নয়, কৃষকদের দাবি নিয়ে সংসদে সরব হওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। হরিয়ানা-পঞ্জাব সীমানায় খনউরিতে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। দলে ছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন। ডেরেকই আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে ফোনে মমতার কথা বলান। কৃষকদের উদ্দেশে মমতা বলেন, 'শত অত্যাচার সত্ত্বেও আপনারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের অবস্থান থেকে সরেননি। আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে চাই। আপনাদের যা চাহিদা রয়েছে, তা আমাকে জানাতে পারেন। যদিও আমাদের সরকার আসেনি, কিন্তু চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করব।' মোদী সরকারকেও নিশানা করেছেন মমতা। বলেছেন, 'এই সরকার গড়বড় সরকার, নড়বড়ে সরকার। আপনারা আন্দোলন জারি রাখুন। দরকার হলে আমরাও যাব।'