Chandrayaan-3-এর উত্ক্ষেপণ সফল। ইসরোর শ্রীহরিকোটার ২ নম্বর লঞ্চ প্যাড থেকে চাঁদের উদ্দেশে রওনা দিল চন্দ্রযান-৩। প্রায় ৯০০ সেকেন্ডের উড়ান শেষে চন্দ্রযান-৩ নির্দিষ্ট ইলেকট্রিকাল পার্কিং অরবিটে স্থাপন করা হল।
শুক্রবার ১৪ জুলাই দুপুর ২.৩৫ মিনিট নাগাদ লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক-৩ রকেটে চড়ে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিল চন্দ্রযান। নির্দিষ্ট সময়ে, পরিকল্পনামাফিকই চন্দ্রযানের রকেটের প্রথম স্টেজের বুস্টার পৃথক হয়ে যায়। এরপর l110 তরল জ্বালানির বুস্টারের মাধ্যমে মহাকাশের দিকে উড়তে থাকে চন্দ্রযান-৩। এরপর ১১৪.৮ কিলোমিটার পৌঁছানোর পর চন্দ্রযানের মডিউলের ফেয়ারিংও সময় মতো খুলে যায়।
এরপর প্রায় ২০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি এসে তৃতীয় স্টেজ, অর্থাত্ C25 ক্রায়ো ইঞ্জিন চালু হয়ে যায়। ইসরোর কনট্রোল রুমে হাততালি দিয়ে ওঠেন সকলে। তরল হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের সমন্বয়ে এই ইঞ্জিন চালিত হয়। মোট ২৮ টন জ্বালানি থাকে এই স্তরে।
চন্দ্রযান-৩ এদিন পাড়ি দিল বটে। তবে এখনই সরাসরি চাঁদে পৌঁছে যাবে না। প্রথমে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে চন্দ্রযান। এরপর ৫ বার থ্রাস্টার চালিয়ে, ধাপে ধাপে পৃথিবী থেকে দূরত্ব বৃদ্ধি করা হবে। পঞ্চম বারে লুনার ট্রান্সফার অরবিট ম্যানুভারের মাধ্যমে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করবে। ৫ অগস্ট চাঁদের কক্ষপথে ঢুকবে চন্দ্রযান-৩। এরপর ৫ বার ম্যানুভারের মাধ্যমে চাঁদের ১০০ কিলোমিটারের দূরত্বের কক্ষপথে পৌঁছাবে চন্দ্রযান-৩।
এরপর প্রথমে প্রপালশন মডিউল থেকে ল্যান্ডার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তারপর তা চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং করবো এরপর সব ঠিকঠাক থাকলে ল্যান্ডারের ভিতর থেকে রোভার গড়িয়ে নেমে আসবে। চাঁদের মাটিতে ঘুরে বেড়াবে ও তথ্য সংগ্রহ করবে গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক তথ্যাদি৷ এতে নেভিগেশন ক্যামেরা এবং একটি সোলার প্যানেল।
সহজ ভাষায় ব্যাখা:
চন্দ্রযান-৩ আসলে রকেটের মাথায় বসানো। এই রকেটের মূল কাজ হল চন্দ্রযানকে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলয় কাটিয়ে মহাকাশে পৌঁছে দেওয়া। মডিউলের মধ্যে তিনটি অংশ রয়েছে। প্রোপালশন মডিউলা আর তার সঙ্গে যুক্ত ল্যান্ডার মডিউল। এই ল্যান্ডার মডিউলের পেটে রয়েছে রোভার বা ছোট একটি গাড়ি। ল্যান্ডার চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর এই রোভার একটি র্যাম্পের মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে নেমে আসবে। এরপর তাই দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা৷
রকেটের নাম LVM-3। এটি একটি হেভি-লিফ্ট লঞ্চ ভেহিকেল। এটাই ISRO-র তৈরি সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট। আর সেই কারণেই এর ডাকনাম 'বাহুবলী'। LVM-3 একটি ত্রিস্তরীয় রকেট। প্রথমে দু'টি সলিড-ফুয়েল বুস্টার এবং তারপর একটি তরল জ্বালানির কোর স্টেজ রয়েছে। সলিড-ফুয়েল বুস্টারের মাধ্যমে প্রাথমিক থ্রাস্ট প্রদান করা হয়। এরপর পেলোড কক্ষপথ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য তরল জ্বালানির কোর স্টেজ জ্বলে ওঠে। সব শেষে ক্রায়োজেনিক থ্রাস্টার, অর্থাত্ তরল হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন চালিত ইঞ্জিন।
খনও পর্যন্ত শুধুমাত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিন চাঁদের সফলভাবে সফট ল্যান্ডিং করতে পেরেছে। তাদের তুলনায় অনেক কম বাজেটেই যদি ইসরো সফল হয়, তা বিশ্বের কাছে একটি
নজির সৃষ্টি করবে।