গত মে মাস থেকে সীমান্তে সেনা জড়ো করে চলেছে চিনের কুখ্যাত লালফৌজ। যার চরম পরিণতি দেখা গেছে গত ১৫ জুন। গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে চাপা উত্তেজনা অব্যাহত। দুই দেশ আলোচনার টেবিলে বসলেও কেউই সীমান্ত থেকে সেনা সরায়নি। আর এই আবহেই গত ১৯ অক্টোবর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে ঢুকে পড়েছিলেন পিপলস লিবারেশন আর্মির এক কর্পোরেল। লাদাখের ডেমচক থেকে পিএলএর সেই কর্পোরাল ওয়াং ইয়া লং-কে পাকড়াও করে ভারতীয় সেনা। যদিও সেই চিনা সেনা কর্তাকে গত মঙ্গলবারই পিএলএ-র হাতে তুলে দিয়েছে ভারতীয় বাহিনী।
ওই চিনা সেনাকে বন্দি করার পরই তাঁকে জেরা শুরু করে ভারতীয় সেনা৷ গুপ্তচরবৃত্তির জন্য চিনা জওয়ান ভারতীয় ভুখণ্ডে ঢুকে পড়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা শুরু হয়৷ সেনা সূত্র থেকে জানা যায়, তাঁর কাছ থেকে সামরিক কিছু কাগজপত্র ছাড়াও বেশ কিছু সাধারণ কাগজপত্রও উদ্ধার হয়৷ ওই সেনার কাছে আর কী পাওয়া গিয়েছিল তা এবার জানালেন এক সেনা কর্তা। ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে ওই সেনা কর্তা জানান, ভারতে প্রবেশ করার সময় পিএলএর সেই কর্পোরাল ওয়াং ইয়া লং-এর কাছে একটি খালি পেনড্রাইভ, মোবাইল ফোন, সামরিক স্লিপিং ব্যাগ এবং একটি চার্জার পাওয়া গিয়েছিল।
ভারতের হাতে বন্দি হওয়া ওই চিনা সেনা অবশ্য দাবি করেছিলেন চমরী গাইকে ফিরিয়ে আনতে গিয়েই তিনি ভুল করে ভারতীয় সীমানায় ঢুকে পড়েছিলেন৷ চিনের তরফেও দাবি করা হয়েছিল, চমরী গাই খুঁজতে গিয়ে ওই ফৌজি সীমান্ত অতিক্রম করে ফেলেছিলেন। নিখোঁজ জওয়ানের অবস্থানের বিষয়ে পিএলএর তরফে ভারতীয় সেনার কাছে আর্জি জানানো হয়। এরপরেই প্রোটোকল অনুযায়ী, যাবতীয় নিয়ম পালনের পর মঙ্গলবার রাতে চুশুল-মলডো এলাকায় পিপলস লিবারেশন আর্মির হাতে ওই চিনা জওয়ানকে তুলে দেওয়া হয়।
এমনিতেই লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দু'দেশের ৬০,০০০-এর বেশি সৈন্য মোতায়েন আছে। তার সঙ্গে আধুনিক নানা সামরিক অস্ত্রের অবস্থানে রীতিমতো যুদ্ধের পরিস্থিতি লাদাখে। এরই মধ্যে চিনা সৈনিকের ভারতে ঢুকে পড়ার ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। যদিও ভারতীয় সেনার তরফে গরম জামাকাপড়,খাবার, অক্সিজেন দেওয়া হয় লালফৌজের ওই কর্তাকে। নিয়ম মেনে তাঁকে চিনা সেনার হাতেও তুলে দেয় ভারত।