বিহার বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্যের পর বিজেপির নজর এখন বাংলার দিকে। একের পর এক পরিকল্পনা সাজিয়ে চলেছে গেরুয়া শিবিরের থিঙ্কট্যাঙ্ক ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের জন্য। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী সকলেই প্রচারে আসবেন বলে শোনা যাচ্ছে। বাংলা জয়ই এবার গেরুয়া শিবিরের পাখির চোখ। তবে এরমাঝে হায়দরাবাদ মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের ভোটকেও কম গুরুত্ব দিচ্ছে না পদ্ম শিবির। এরমধ্যেই এই পুরভোটকে নিয়ে নজিরবিহীন প্রচার শুরু করে দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। সম্প্রতি হাইটেক শহর হায়দরাবাদে প্রচারে এসেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। তিনি ফিরতে না ফিরতেই হাজির হলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আর রোডশোয়ে নেমেই পারদ চড়িয়ে দিলেন যোগী। হুঙ্কার তুললেন হায়দরাবাকে 'ভাগ্যনগর' বানাতেই এসেছেন তিনি।
আগামী সপ্তাহেই ১৫০ আসনের হায়দরাবাদ মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের ভোট। এবার ভোটের ময়দানে লড়াই চতুর্মুখী। একদিকে রয়েছে শাসক দল টিআরএস। অন্যদিকে আসাউদ্দিনের মিম। এছাড়া রয়েছে কংগ্রেস। তবে ওয়াকিবহল মহলের দাবি আসল লড়াই হবে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে মিমের। দক্ষিণে একমাত্র কর্ণাটক ছাড়া বিজেপির তেমন ভিত্তি নেই। সেই কারণেই হায়দরাবাদের পুরো নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে ময়দানে নেমেছে গেরুয়া শিবির। কারণ বিজেপি মনে করে কর্ণাটকের পর তেলেঙ্গানাতেই নিজেদের মাটি শক্ত করার সবচেয়ে ভাল সুযোগ রয়েছে তাদের। সেই কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেও আসতে চলেছেন ভোট প্রচারে।
অনেক ঘুঁটি সাজিয়েই তেলেঙ্গনায় নিজের মাটি শক্ত করতে এগোচ্ছে গেরুয়া শিবির। রাজ্যে কংগ্রেস দুর্বল, চন্দ্রবাবু নাইডুর উপরও রাজ্যবাসী অসন্তুষ্ট। যদিও তেলেঙ্গনায় ক্ষমতায় থাকা টিআরএস যথেষ্ট শক্তিশালী, তবে নিজের গড়ে বিজেপি যদি আসাউদ্দিনের দলকে মাত দিতে পারে তবে আগামী বিধানসভা ভোটে শক্তি অনেকটাই বেড়ে যাবে গেরুয়া শিবিরের। আর সেই দিকে নজর রেখেই এগোচ্ছে গেরুয়া শিবির। আসলে, বিজেপি মনে করে যে কর্ণাটকের পরে তেলঙ্গানাই একমাত্র রাজ্য যেখানে এটি প্রবেশ করতে পারে এখানে কংগ্রেস দুর্বল, লোকেরা চন্দ্রবাবু নাইডুর প্রতি রাগান্বিত, টিআরএস শক্তিশালী, তবে ওভিসির দুর্গে বিজেপি যদি হয় মারধর করতে সফল হলে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য তার শক্তি আরও বাড়বে। এমন পরিস্থিতিতে, এটি বিশ্বাস করা হয় যে নাগরিক নির্বাচনে বিজেপির শক্তি আসলে বিধানসভা নির্বাচনের আসন্ন প্রস্তুতি।
হায়দরাবাদের ভূমিপুত্র ওয়েইসির শহরে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে সঙ্গে নিয়েই মাত দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি ক্ষমতায় এলে হায়দরাবাদের নাম বদলে ‘ভাগ্যনগর' করে দেওয়া হবে। বদলে যাবে সেকেন্দ্রাবাদ ও করিমনগরের নামও, এমন প্রচারও চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। গেরুয়া শিবিরের দাবি হায়দরাবাদের নাম আগে ভাগ্যনগরই ছিল। ১৫৯০ সালে কুতুব শাহ এসে নামটা বদলে দেন। সেই সুরেই এদিন হুঙ্কার দেন যোগী।