কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অত্যাচারের প্রতিবাদে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে বাংলায়। একই সঙ্গে এই মামলা নিয়ে দেশটিতে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “আরজি কর মামলায় কিছু লোক তাদের দলকে ব্যবহার করে রাজ্যকে অশান্ত করার জন্য বাংলায় আগুন লাগানোর চেষ্টা করছে। মনে রাখবেন, আপনি যদি বাংলাকে পোড়ান, আসাম, উত্তর-পূর্ব, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও জ্বলবে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার কাঁপিয়ে দেব। " আর মমতার এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে সরব হয়েছেন একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এবার এই নিয়ে দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন আইনজীবি বিনীত জিন্দাল।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আইপিসির 152, 192, 196, এবং 353 ধারার অধীনে একটি অভিযোগ দিল্লির পুলিশ কমিশনারের কাছে দায়ের করেছেন আইনজীবী বিনীত জিন্দাল। অভিযোগের কপি দেশের রাষ্ট্রপতি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও পাঠান হয়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য জাতীয়তা বিরোধী বলেও চিঠিতে লিখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, “কেউ কেউ মনে করছেন এটা বাংলাদেশ। আমি ওদের ভালবাসি। ওদের সংস্কৃতি আমাদের সংস্কৃতি এক। তবে এটা আলাদা রাষ্ট্র। ভারতবর্ষ একটা আলাদা রাষ্ট্র। বাংলায় যদি আগুন লাগান, কোনও রাজ্যই থেমে থাকবে না। বাংলায় আগুন লাগালে অসম থেমে থাকবে না। উত্তর-পূর্ব, উত্তর প্রদেশ থেমে থাকবে না। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও থেমে থাকবে না। আপনার চেয়ারটা আমরা টলমল করে দেব।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “দিদি, আপনার এত সাহস হল কীভাবে যে অসমকে হুমকি দিচ্ছেন? আমাদের রক্তচক্ষু দেখাবেন না। বিভাজনকারী ভাষা বলাটা আপনার শোভা পায় না।” মমতার মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, “তৃণমূল সরকারের নারী বিরোধী আচরণ গণতন্ত্রের লজ্জা।” মমতার মন্তব্যের বিরোধিতা করে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি বলেন, “ওড়িশার সম্পর্কে আপত্তিজনক মন্তব্য করার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? ওড়িশা শান্তিপূর্ণ রাজ্য। এখানকার মানুষ দায়িত্ববান।” এই ধরনের মন্তব্য না করার অনুরোধ জানান ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং, ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সভাপতি বাবুলাল মারান্ডি এবং বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় কুমার সিনহা মমতার মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন।