বিহারে মহাগঠবন্ধনের হারের পরে নির্বাচনে কংগ্রেসের পারফর্ম্যান্স শোচনীয়। ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা কপিল সিব্বল মুখ খুলেছেন। একে নির্বাচনে ভরাডুবি, তারপর দলের শীর্ষস্থানীয় নেতার প্রকাশ্যে সমালোচনায়, কংগ্রেসের অন্দরের কলহ সামনে এসে গিয়েছে আরও একবার। মুখ খোলার পরে স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেসের অন্যান্য নেতাদের রোষের মুখে পড়েছেন তিনি। India Today-এর বরিষ্ঠ সাংবাদিক রাজদীপ সরদেশাইকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে দলের নেতাদের উপরে তাঁর ঠিক কোন জায়গায় অভিযোগ, জানালেন সব।
দলের শীর্ষনেতাদের প্রসঙ্গে কপিল সিব্বল বললেন, 'রাহুল গান্ধী দেড় বছর আগেই সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, উনি কংগ্রেসের সভাপতি হতে চান না। এটাও বলেছিলেন, তিনি চান না, গান্ধী পরিবারের কোনও ব্যক্তি ওই পদে বসুক। এই কথার দেড় বছর কেটে যাওয়ার পরে আমার প্রশ্ন, কোনও জাতীয় দল স্থায়ী সভাপতি ছাড়া কী ভাবে চলছে? আমি দলের মধ্যে এই নিয়ে সরব হয়েছি। গত অগাস্টে চিঠিও লিখেছি। কিন্তু কেউ আমার সঙ্গে কথা বলেনি। আমি জানতে চাই, কেন গত দেড় বছরে আমাদের দলের কোনও সভাপতি নেই? কার্যকর্তারা নিজেদের সমস্যা নিয়ে কার কাছে যাবেন?'
আরও পড়ুন: কংগ্রেসে কোন্দল! 'কাজ না করে কথা বলা উচিত নয়' কপিলকে কটাক্ষ অধীরের
তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেসের মতো পুরনো দলের পক্ষে এখন সবচেয়ে কঠিন সময়। আমি কারও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না। সংগঠনের মধ্যেই যদি নির্বাচন না হয়, তা হলে আমরা যে রেজাল্ট চাইছি, তা কী ভাবে পাবো। আমি একথাই আমার চিঠিতে লিখেছিলাম।
তিনটি চিঠি লিখেছি, কেউ কথা বলেনি
গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার প্রসঙ্গে কপিল সিব্বল বলেন, 'আমি কখন বললাম, এ কথা? আমি বলেছি, আমি যদি কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য না হয়ে কী ভাবে পার্টি ফোরামে নিজের বক্তব্য রাখব। দলের কোনও সভাপতিও নেই। ২০২০ সালের অগাস্টে চিঠি লিখেছিলাম। ওটা ছিল তিন নম্বর চিঠি। গুলাম নবিজি তার আগে দুটি চিঠি লিখেছেন। তারপরেও কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি।'
অধীর চৌধুরী প্রসঙ্গ
অধীর চৌধুরীর কটাক্ষের বিষয়ে কপিল সিব্বল বলেন, 'আমি ওঁর বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। পশ্চিমবঙ্গে সামনেই নির্বাচন। ওঁর উচিত, পুরো এনার্জি বাংলার নির্বাচনে খরচ করা। অধীর নিশ্চয়ই জানবে, নির্বাচনের সময় দল স্টার ক্যাম্পেনারের লিস্ট জারি করে। যদি আমায় দল বলত, আপনি বিহারে প্রচার করুন, আমি নিশ্চয়ই যেতাম। আমার নাম স্টার প্রচারকের তালিকায় ছিল না। আমার আশ্চর্য লাগল, অধীরের মতো নেতা এই সহজ কথাটা বুঝল না। আপাতত উনি পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে ফোকাস করুন, এটাই আমার পরামর্শ অধীরকে।'
দলের কার্যকর্তাদের প্রসঙ্গ
কপিল সিব্বল বললেন, 'আমি এই কথা বলেছিলাম, কারণ, বিহারে কংগ্রেসের হারের পরে দীপাবলিতে কংগ্রেসের কয়েক হাজার কার্যকর্তা ঘরে বন্দি থাকতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ, বাইরে বেরলেই প্রশ্ন, তোমাদের দলের কী হয়েছে? এত কম ভোট পেলে কেন? কংগ্রেসের কার্যকর্তাদের মনে আঘাত লেগেছে। আমার প্রশ্ন, এই কার্যকর্তাদের মানসিক আঘাত নিয়ে কী ভাবা হচ্ছে? আমিও কংগ্রেসের একজন কার্যকর্তা। আমি কংগ্রেসের লক্ষ লক্ষ কার্যকর্তাদের হয়ে আওয়াজ তুলছি। আমি গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলছি না। কিন্তু দলে গণতন্ত্র বাড়ানোর কথা বলছি।'