Advertisement

৭৫ বছরে এতটা বদল গিয়েছে দেশ ! জানেন কী ?

স্বাধীনতার পর কেটে গিয়েছে ৭৫ টা বছর। স্বাভাবিক নিয়মেই অনেক বদল হয়েছে সব ক্ষেত্রেই। তা বলে এতটা পরিবর্তন ! এটাই কী ছিল ভবিতব্য !

গর্বের ৭৫
Aajtak Bangla
  • নয়াদিল্লি,
  • 15 Aug 2021,
  • अपडेटेड 7:53 PM IST
  • ৭৫ বছরে ব্যাপক পরিবর্তন দেশে
  • এগিয়েছে অনেক ক্ষেত্রে
  • পিছিয়ে থাকার ক্ষেত্রও রয়েছে

কতটা বদলেছে দেশ

দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পার হয়ে গিয়েছে। ৩৪ কোটি জনতা থেকে ১৩৫ কোটিতে এসে পৌঁছেছে ভারত। আগে দেশের নাগরিকরা ঘরে ৩৪ বছর বাঁচত, সেই বাঁচার বয়স ঘরে পৌঁছেছে। ৬৯ বছরে দেশের জিডিপি ২.৯৩ লাখ কোটি থেকে এখন ১৩৪ লাখ কোটিতে পৌঁছে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের বার্ষিক আয় ২৭৪ টাকা থেকে বেড়ে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। ৭৪ বছরে দেশে অনেক কিছুই বদলে গিয়েছে। আসুন এক ঝলকে দেখে নি, স্বাধীনতার সময় থেকে আজ পর্যন্ত কতটা বদলে গিয়েছে দেশ।

দেশের জনসংখ্যা ও ব্যাপক বৃদ্ধি

যখন আমরা স্বাধীন হয়েছি। তখন দেশের জনসংখ্যা ছিল ৩৪ কোটি ১৯৫১ সালে দেশের প্রথম জন গণনা হয়। সেই সময় আমাদের জনসংখ্যা দাঁড়ায় ৩৬ কোটির কাছাকাছি। শেষবার ২০১১ সালের জনগণনা হয়েছে। সেখানে আমাদের জনসংখ্যা ১২১ কোটি পার হয়ে গিয়েছিল। পরে অবশ্য জনগণনা না হলেও আধার যারা তৈরি করছেন সেই সংস্থা ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত দেশের জনসংখ্যা ১৩৭ কোটির কাছাকাছি বলেও অনুমান করেছে।

আয় বৃদ্ধি হয়েছে কয়েক গুণ

সাধারণ মানুষের আয় বেড়েছে কয়েক গুণ। ৭৪ বছর-এ সাধারণ মানুষের গড় আয় অনেকটাই বেড়েছে। ১৯৫৫ সালে দেশে একজন মানুষ বার্ষিক ২৭৪ টাকা আয় করত। সেই হিসেবে দেখা গেলে এই আয় এর সংখ্যা অনেকটাই কম। তার কারণ অবশ্য অনেকেই স্বনির্ভর ছিল। তবু হিসেবের খাতায় এই সংখ্যায় লেখা দিয়ে রয়েছে। আজ ২৭৪ টাকা থেকে সারা মাসের মোবাইল ডাটা প্ল্যান ঠিকমতো চালানো যায় না। কিন্তু ওই সময়ে এটাই ছিল একজন মানুষের গড় বার্ষিক আয় স্বাধীনতার পর থেকে। বার্ষিক আয়ের পরিমাণ বাড়তে থাকে। ২০২১ সালে প্রতি ব্যক্তি গড়ে ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা আয় করেন। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ না হলে আরও বেশি আয়ের সম্ভাবনা ছিল। এই মুহূর্তে হিসেব করলে হয়তো আয়ের পরিমাণটা কিছুটা হলেও ধাক্কা খাবে।

Advertisement

২৭ কোটির বেশি লোক এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে

একটা আনুমানিক সমীক্ষার হিসেবে স্বাধীনতার সময় ২৫ কোটি। বেশি লোক দারিদ্র সীমার নীচে ছিল। ওই সময়ের জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ। আমাদের দেশের ১৯৫৬ সালের পরে দারিদ্রের সংখ্যার হিসাব বের করা শুরু হয়েছে। বিএস মিনহাজ আয়োগ, যোজনা আয়োগ কে নিজেদের রিপোর্ট দিয়েছিল, তাতে আনুমানিক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল, যা হিসেবে দেশে সাড়ে ২১ কোটি লোক গরিবি অর্থাৎ দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। দারিদ্রসীমার নীচে সবচেয়ে তাজা হিসেবে ২০১১ সালে পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে ২৬.৯ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছেন।

বার্ষিক মাথাপিছু আয় কতটা বাড়ল

কিন্তু এই হিসেবে দরিদ্র কাদের বলা হচ্ছে। তার একটা নির্দিষ্ট রূপরেখা রয়েছে, শহর এবং গ্রামভিত্তিকভাবে তাদের আলাদা হিসাব রয়েছে। শহরে থাকা ব্যক্তিরা যদি প্রত্যেক মাসে ১ হাজার টাকার বেশি রোজগার করেন এবং গ্রামে থাকা ব্যক্তি যদি ৮১৬ টাকার বেশি প্রতি মাসে আয় করেন, তাঁরা দারিদ্র্যসীমার নিচে আসবেন না।

বেকারত্ব সমস্যার এখনো পর্যন্ত তেমন সমাধান হয়নি

স্বাধীনতার সময়ে দেশে কত সংখ্যক লোক বেকার ছিলেন। এটা নিয়ে বিভিন্ন সরকারি তথ্য পাওয়া যায়নি। বেকারদের নিয়ে ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে অফিস এনএসএসও ১৯৭২। প্রথম সার্ভে করে সেই সমীক্ষা মোতাবেক ওই সময় দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৮.৩৫ শতাংশ। ২০১৮-১৯ সালে শেষবার বেকারত্বের হার নির্ণয় করা হয়। ওই তত্ত্বের হিসেবে দেশে এখন বেকারত্বের সমস্যা ৫.৮ শতাংশ। যদিও সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি সিএমআই এর হিসেব অনুযায়ী ২০২১ সালে দেশে বেকারত্বের হার ৬.৯৫ শতাংশ।

জিডিপির কি অবস্থা

কোনও দেশের আর্থিক স্থিতি কেমন, এটা জানতে হলে জানতে হবে সেদেশের জিডিপির পরিস্থিতি কি। জিডিপি অর্থাৎ গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট। মনে করা হয় যখন ইংরেজরা ভারতে এসেছিল তখন ভারতের জিডিপির অংশীদারিত্ব গোটা পৃথিবীর অংশীদারিত্বের ২২ শতাংশ ছিল। কিন্তু যখন তারা দেশ ছেড়ে চলে গেল, তখন ভারতের জিডিপি ৩ শতাংশে নেমে আসে। স্বাধীনতার পর থেকে এখনও পর্যন্ত আমাদের জিটিপি ৫০ গুণ বেড়েছে। ১৯৫৫ সালে আমাদের জিডিপি ২.৯ লাখ কোটি টাকা ছিল। যা ২০২০-২১ লাখ কোটি টাকায় কিংবা তারও বেশি এসে পৌঁছেছে।

স্বাধীনতার পরে ভারতের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কতটা বেড়েছে

করোনা জানিয়ে দিয়ে গিয়েছে যে কোনও দেশের জন্য স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কতটা জরুরি। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাধীনতার সময় যেখানে ৩০টি মেডিকেল কলেজ ছিল, কিন্তু এখন ৫৪১ মেডিকেল কলেজ রয়েছে। শুধু তাই নয় স্বাধীনতার সময় গোটা দেশে ২ হাজার ১৪ টি সরকারি হাসপাতাল ছিল। এখন সরকারি হাসপাতালের সংখ্যা ২৩ হাজার এর বেশি। চিকিৎসকের সংখ্যা ১২ লাখের বেশি। যদিও জনসংখ্যার নিরিখে এখনও এই সংখ্যা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করা হয়।

শিশুমৃত্যুর হার এবং লিঙ্গ ভিত্তিক হিসাব

স্বাধীনতার পর থেকে শিশু মৃত্যুর হার দেশে অনেকটাই কমেছে। কিন্তু লিঙ্গ বৈষম্যের ভারসাম্যের ক্ষেত্রে আমরা এখনও অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছি।

কত ছিল সোনার দাম

এক সময় ছিল, যখন ভারতকে সোনার পাখি বলা হতো। এর কারণ আমাদের দেশে প্রত্যেক বাড়িতে সোনার ভান্ডার ছিল। প্রত্যেকের কাছেই কিছু না কিছু সোনা থাকত। এখনও পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সোনা ধারণ করা পরিবার ভারতে রয়েছে। আজকে ১০ গ্রাম সোনার দাম ৫০ হাজার টাকার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু সেই সময় যখন স্বাধীন হয়, ১০ গ্রাম সোনার দাম ছিল ৯০ টাকা। আজকে হিসেবে তুলনা করলে স্বাধীনতার সময় আমরা যত টাকায় ১০ গ্রাম সোনা কিনতে পারতাম। আজ ওই টাকায় এক লিটার পেট্রোলও পাওয়া যায় না।

Advertisement

পেট্রোলের দাম কত ছিল জানেন ?

সোনার পরই আসে সোনার চেয়েও দামি এখন পেট্রোল। আজকে দেশে প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম ১০০ টাকা। কোথাও তারও বেশি। কিন্তু স্বাধীনতার সময় পেট্রোলের দাম ছিল ২৭ পয়সা প্রতি লিটার। ২০০০ সাল পর্যন্ত ১ লিটার পেট্রোলের দাম ২৯ টাকার আশপাশে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ কুড়ি বছরে পেট্রোলের দাম বিশেষ করে শেষ দশ বছরে অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে।

তখন ছিল দেড় লাখ স্কুল, আজ ১০ গুণ বেশি

সরকারি হিসাব অনুযায়ী ৩১ মার্চ ১৯৪৮ সালে দেশে ১ লক্ষ ৪০ হাজার স্কুল ছিল এবং ১২ হাজার ৬৯৩ টি মিডিল এবং হাইস্কুল ছিল। কিন্তু আজকে দেশে ১৫ লাখের বেশি স্কুল রয়েছে। তার পাশাপাশি ৪১৪ থেকে কলেজের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২ হাজার। ওই সময় বাজেটে মাত্র ৭৪ কোটি টাকা শিক্ষা খাতে ব্যয় করা হতো। আর এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৯৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে।

অপরাধেও অগ্রগতি !

অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে ৬০ গুণ। কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্সি ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো এনসিআরবি ১৯৫৩ সালে অপরাধের লেখাজোখা রাখত। সেই সময়ের এনসিআরবি প্রথম রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৫২ সালে দেশে। ৬.২৫ লক্ষ্য অপরাধের মামলা লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল ওই সময় ১০ হাজারের বেশি মামলা ছিল। এনসিআরবি রিপোর্ট ২০১৯ সালে পেশ করা হয় সেই রিপোর্ট অনুযায়ী ৫১.৫৬ লাখ এর বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৮ হাজার এর বেশি খুনের মামলা রয়েছে। ধর্ষণের মামলা তে সবচেয়ে বেশি রেকর্ড লিপিবদ্ধ হয়েছে। ১৯৭১ সালে এনসিআরবি ধর্ষণের যে ডেটা দিয়েছে তাতে ২ হাজার ৪৭৮ টি মামলা ছিল, যেখানে ২০১৯ সালে ৩২ হাজার ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়।

কৃষি ক্ষেত্রে কতটা পিছোলাম ?

কৃষি ক্ষেত্রে জিডিপির যোগদান ছিল একসময় দেশের মোট জিডিপির ৪৬ শতাংশ। এখন সেখানে কমে গিয়ে হয়েছে ২০ শতাংশ। একমাত্র কৃষি বোধহয় সেই ক্ষেত্র, যেখানে ভারতের জিডিপির সংখ্যা কমেছে। ভারত কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে, কৃষিজমি সংখ্যা কমতে থাকে অনীহা। বাড়তে থাকে, এই মুহূর্তে প্রচুর কৃষিজমি শিল্পের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

গাড়ির সংখ্যা কোথায় পৌঁছেছে

সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের হিসেবে ১৯৫১ সালে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন এটা পাওয়া গিয়েছে। সেই সময় মাত্র তিন লক্ষ গাড়ি ছিল গোটা দেশে। কিন্তু মার্চ ২০২০ পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা ৩০ কোটিতে পৌঁছেছে। ১৯৫১ সালে দেশে চার লক্ষ কিলোমিটার সড়ক ছিল। সেখানে এখন 62 লাখ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে

রেলের চিত্রটি বদলে গিয়েছে

দেশের কোনও ক্ষেত্রে যদি সম্পূর্ণ ভোল বদলে গিয়ে থাকে, তাহলে তা হল ভারতীয় রেল। ১৬ এপ্রিল ১৮৫৩ সালে আমাদের দেশে প্রথম ট্রেন চলেছিল। প্রথম ট্রেন মুম্বই থেকে থানে পর্যন্ত ৩৩.৬ কিলোমিটার পথ সফর করে। এরপর রেলওয়ে ট্রাক বসানো হতে শুরু করে। ১৯৫৫ সালে ১২৮ কোটি যাত্রী সফর করত। কিন্তু এখন সে সংখ্যা পৌঁছেছে ৮০০ কোটিতে। যাত্রী বাড়ার ফলে রেলের রাজস্বও বাড়তে থাকে। ১৯৫০ সালে যেখানে রেল থেকে ৯৮ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়, হত সেখানে ২০১৯-২০ সালে ৫০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়।

দেশের খরচ বেড়েছে

খরচও বহুগুণ বেড়েছে কেন্দ্রের। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র সরকারের খরচ বাজেটে অনেক বেড়ে গিয়েছে. স্বাধীনতার পর প্রথম বাজেট পেশ করা হয়েছিল ১৫ অগাস্ট ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৩১ মার্চ পর্যন্ত সেই সময়ে সরকার ১৯৭ কোটি টাকার রূপরেখা তৈরি করেছিল। তারপর আমাদের বাজেট প্রতি বছরই বাড়তে শুরু করে। এই বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট পেশ করেছে তার খরচের হিসাব প্রায় ৩৫ লক্ষ কোটি টাকা।

Advertisement

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement