El Nino Effect in India: মৌসম ভবন (IMD) আবহাওয়া নিয়ে এক ভয়াবহ আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। ওলট-পালট হয়ে যেতে পারে ভারতের আবহাওয়া। এল-নিনোর (El Nino) কারণে ভারতে বর্ষায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। জুলাই মাসে এটি সক্রিয় হবে। তখন দেশে বর্ষার দ্বিতীয় পর্ব চলবে। শুধু তাই নয়, এল-নিনোর কারণে দেশে গরম বেড়েছে মারাত্মক। অনেক জায়গায় পারদ চড়েছে ৪৫ ডিগ্রি।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী মাস থেকে তাপমাত্রা গড়ে প্রায় দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। এর প্রভাব পড়বে জুলাই মাসেও। তারপরও তীব্র গরম থাকবে। বিজ্ঞানীরাও একমত হয়েছে, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যআর মানুষ গরমে প্রভাবিত হয়েছে। ২১০০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা আরও দ্বিগুণ হবে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হতে চলেছে ভারত, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, ফিলিপিন ও ইন্দোনেশিয়ার।
গত ৮ বছর ধরে ক্রমাগত বাড়ছে তাপ
২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুসারে, ২১০০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে দেওয়া যাবে না। তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকলে আগামী ছয়-সাত দশকে বিশ্বের জনসংখ্যা হবে ৯৫০ কোটি। যার মধ্যে প্রায় ৫০ কোটি মানুষ গরমের কারণে মারা যাবে।
গত আট বছর ধরে ক্রমাগত গরম বাড়ছে। গত আট বছরে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যে কারণে তাপপ্রবাহ হচ্ছে। জঙ্গলে আগুন লেগে পুড়ছে।
২০২৭ থেকে গড় তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে
আর মাত্র চার বছর। অর্থাৎ, ২০২৭ সালের আগে সারা বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা এই ভয়ঙ্কর আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছে। এর মানে এই নয় যে বিশ্বের তাপমাত্রা ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির স্তরের উপরে যাবে। তবে গরম বাড়বে। এটা নিশ্চিত। সারা পৃথিবী জ্বলে উঠবে। আবহাওয়ার সময় পরিবর্তন হবে। দুর্যোগ আসবেই। ৩০ বছরের গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রার ভিত্তিতে WMO এই প্রকাশ করেছে। সংস্থা জানিয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বের তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। এর ৬৬ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতি পাঁচ বছরে প্রচণ্ড গরম বাড়বে
WMO আরও একটি উদ্বেগজনক সতর্কতা জারি করেছে। যাতে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে রেকর্ড ভাঙার তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা ৯৮ শতাংশ। ২০১৬ সাল থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি একটি বিশাল জলবায়ু সঙ্কট, যা বেশিরভাগ দেশেই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না।
জলবায়ু পরিবর্তনে আসবে আরও এল নিনো
গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে না পারলে ক্রমবর্ধমান তাপ ঠেকানো যাবে না। এর প্রভাব পড়বে বিভিন্ন দেশের প্রতিটি ঋতুতে।
ভারত-চিনের বিশাল এলাকা পরিণত হবে মরুভূমিতে
গত বছর এশিয়ার অনেক এলাকায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় খরার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ক্রমাগত হিমবাহ গলে যেতে দেখা যায়। হিমালয়ের হিমবাহ, যেগুলিকে ওয়াটার টাওয়ার বলা হয়, সেগুলির গলে যাওয়ার আশঙ্কা দ্রুত বাড়ছে। এগুলি গলে গেলে নদীগুলি শুকিয়ে যাবে। অর্থাৎ পাকিস্তান, ভারত ও চিনের বিশাল এলাকা পরিণত হবে মরুভূমিতে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। গত বছর খরার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। বন্যার কারণে ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে ২৩ শতাংশ এবং ভূমিধসের কারণে ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে ১৪৭ শতাংশ। ২০০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গড় অর্থনৈতিক ক্ষতির সঙ্গে এর তুলনা করা হয়েছে।
৪০ বছরে পাঁচটি প্রধান হিমালয়ের হিমবাহ দ্রুত গলছে
গত বছর এশিয়ার উঁচু পাহাড়ি এলাকায় হিমবাহ দ্রুত গলছে। খরা এবং ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাব দক্ষিণ-পূর্ব তিব্বত মালভূমি, পূর্ব হিমালয় এবং পামির আলাইতে দেখা গেছে। ২০২০-২১ পরপর দু'টি বছর ছিল যখন হিমালয় বেল্টের হিমবাহগুলি দ্রুত গলে গিয়েছিল, যা ২০০৯ সালের পরিসংখ্যানের সমান ছিল। গত ৪০ বছরে হিমালয়ের পাঁচটি বড় হিমবাহ অনেকটাই গলে গেছে।