চাঁদের (Moon) পৃষ্ঠে থাকা প্রচুর সোডিয়ামের (Sodium) সন্ধান পেল ভারতের চন্দ্রযান ২। ২০১৯ সাল থেকে চাঁদের চারপাশে ঘোরাফেরা করছে চন্দ্রযান ২ (Chandrayaan-2)। এই প্রথমবারের মতো চাঁদে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম ম্যাপ করেছে এটি। নতুন এই অনুসন্ধান চাঁদের উপরিভাগ-এক্সোস্ফিয়ারের (Exosphere) মিথস্ক্রিয়া গবেষণা আরও এক ধাপ এগিয়ে দেবে। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন বা ইসরো (ISRO) জানিয়েছে, চন্দ্রযান-২ অরবিটারের এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার (X-ray spectrometer) 'ক্লাস' প্রথমবারের মতো চাঁদে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম ম্যাপ করেছে।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, চন্দ্রযান-২-র লার্জ এরিয়া সফট এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার বা ক্লাস সোডিয়ামের পরিষ্কার উপস্থিতি শনাক্ত করেছে। যা এই যন্ত্রটির উচ্চ সংবেদনশীলতা এবং কর্মক্ষমতার প্রমাণ দিচ্ছে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে একটি সংকেতের একটি অংশ চাঁদে থাকা সোডিয়াম পরমাণুর একটি পাতলা স্তর থেকে আসছে বলে বলে মনে করা হচ্ছে। সোডিয়াম পরমাণুগুলি সৌর বায়ু বা অতিবেগুনি বিকিরণের দ্বারা চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে আরও সহজে বের হয়ে আসছে।
চন্দ্রযান-২ চাঁদের পৃষ্ঠে থাকা সোডিয়ামের একটি বৈচিত্রও খুঁজে পেয়েছে, যা বহির্জগতে পরমাণুর ক্রমাগত বেরিয়ে আসাকে ব্যাখ্যা করবে। এছাড়াও, সোডিয়াম পাওয়া গিয়েছে চাঁদের বিশুদ্ধ বায়ুমণ্ডলে, একটি অঞ্চল এতটাই পাতলা যে সেখানে পরমাণুগুলি খুব কমই মিলিত হয়। ইসরো উল্লেখ করেছে, 'এক্সোস্ফিয়ার' নামে অভিহিত এই অঞ্চলটি চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে শুরু হয় এবং আন্তঃগ্রহের মহাকাশে মিশে কয়েক হাজার কিলোমিটার প্রসারিত হয়।
চন্দ্রযান-২ এর আগে আবিষ্কার করেছিল যে চাঁদের আয়নোস্ফিয়ারের জেগে থাকা অঞ্চলে প্লাজমা ঘনত্ব (Plasma Density) রয়েছে। মহাকাশযানটি ২০১৯ সালে কক্ষপথে আসার পর থেকে চাঁদের পৃষ্ঠের অধ্যয়ন করছে। ২০১৯ সালের ২২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণ করেছিল ইসরো। ৬ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অরবিটার থেকে বিক্রমের ল্যান্ড করার কথা ছিল। কিন্তু অবতরণের শেষ ধাপে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়েছিল বিক্রম। হার্ড ল্যান্ডিং করেছিল বিক্রম। যদিও অরবিটারটি এখনও প্রদক্ষিণ করে চলেছে চাঁদকে।