PM Modi at Parliament: সোমবার সংসদের বিশেষ অধিবেশনের সূচনায় বক্তব্য পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পুরনো ভবনের স্মৃতি, G20, চন্দ্রযান ৩ থেকে সংসদের বৈচিত্র্য, এক নজরে আজ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ১০টি পয়েন্ট-
- G20: ভারতের ফেডেরাল কাঠামো, G20 সামিটে দেশের আলাদা আলাদা সরকারের প্রচেষ্টার প্রভাব বিশ্বজুড়ে পড়েছে। এটি দেশের গৌরব বাড়াবে। আর ভারত এর অধ্যক্ষ থাকা অবস্থায় আফ্রিকান ইউনিয়ন তার সদস্য পদ প্রদান করা হয়েছে।
- ভারতের ক্ষমতার প্রমাণ: প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ করার অভ্যাস কিছু মানুষের রয়েছে। স্বাধীনতার সময় থেকেই এটা চলে আসছে। এখনও চলছে। কিন্তু ভারত তার ক্ষমতা প্রমাণ করেছে।
- পুরনো সংসদ ভবন ছাড়ার আগে আবেগঘন: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এই সংসদ ভবন ছাড়ার এই মুহূর্তে আমার মন-মস্তিষ্ক অনেক ভাবনা, স্মৃতিতে জড়িয়ে। নানা অম্ল-মধুর স্মৃতি, নানা আনন্দের মুহূর্ত এর সঙ্গে জড়িয়ে। আর সেই কারণে এটি আমাদের গৌরবও বটে।
- চন্দ্রযান ৩: প্রধানমন্ত্রী বলেন, চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যে, শুধু ভারতই নয়, পুরো দেশই অভিভূত। এতে ভারতের ক্ষমতার এক নতুন রূপ, যা আধুনিকতা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, আমাদের বিজ্ঞানীদের ক্ষমতা, ১৪০ কোটি দেশবাসীর সংকল্পের সঙ্গে জড়িত, তা দেশ ও বিশ্বে এক নতুন প্রভাব বিস্তার করেছে। এই সংসদ ভবনের মাধ্যমে আমি আরও একবার দেশের বিজ্ঞানীদের কোটি কোটি অভিনন্দন জানাতে চাই।
- রেল প্ল্যাটফর্ম থেকে সংসদ: আবেগের সুরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি প্রথমবার যখন সংসদ সদস্য হয়েছিলাম এবং একজন সাংসদ হিসাবে এই ভবনে প্রবেশ করেছিলাম তখন স্বাভাবিকভাবেই আমি এই সংসদ ভবনের প্রবেশ পথে আমার মাথা ছুঁইয়ে প্রবেশ করেছিলাম। এই লোকতন্ত্রের মন্দিরে প্রণাম করে পা রেখেছিলাম। আমি তখন কল্পনাও করিনি, কিন্তু ভারতের গণতন্ত্রের শক্তি, সাধারণ মানুষের এর উপর ভরসাই রেল প্ল্যাটফর্মে দিন কাটানো এক সাধারণ শিশু সংসদে পৌঁছে দিয়েছে।
- সংসদের বৈচিত্র্য: আমরা সবাই, আমাদের আগের অনেকেও এই ক্ষমতার সাক্ষী। সময়ের সঙ্গে আমাদের সংসদের কাঠামো বদলেছে। সদস্য বেড়েছে। সমাজের সমস্ত অংশের প্রতিনিধি, বৈচিত্রে পরিপূর্ণ। অনেক ভাষার মানুষ রয়েছে। সমাজের সমস্ত অংশের মানুষ, সমস্ত আর্থিক অবস্থার মানুষ, গ্রাম হোক, শহর হোক, দলিত হোক, আদিবাসী হোক, মহিলা হোক... ধীরে ধীরে সব ধরনের সংসদ অংশগ্রহণ করেছেন।
- সংসদের বিভিন্ন রেকর্ড: আগে মহিলাদের সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে মা-বোনদের সংসদে যোগদান বেড়েছে। তাঁরা সংসদ ভবনের গৌরব বাড়িয়েছেন। প্রায় সাড়ে ৭ হাজারের বেশি প্রতিনিধি দুই সংসদ ভবনে যোগ দিয়েছেন আজ পর্যন্ত। এর মধ্যে প্রায় ৬০০ মহিলা সাংসদ এই দুই ভবনের গরিমা বাড়িয়েছেন।
এই ভবনে ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত টানা ৪৩ বছর সাংসদ হয়েছিলেন। আবার এই সংসদ ভবনের শফিকুর রহমান ৯৩ বছর বয়সেও প্রথম এসেছিলেন। এগুলি সংসদের গৌরবকে আরও মহিমান্বিত করে। আমরা পরিবারের মতো। তাই সংসদ ছাড়ার বহু বছর পর দেখা হলেও আমরা সেই দিনটি ভুলি না।
- প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতিদের প্রশংসা: এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের অবদানেরও প্রশংসা করেন। 'জওহরলাল নেহেরু থেকে শুরু করে বাজপেয়ী পর্যন্ত, এই সংসদে বেশ কয়েকজন নেতা তাঁদের ভারত নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি দেশের কাছে তুলে ধরেছেন,' লোকসভায় বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ থেকে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ এবং দ্রৌপদী মুর্মু এবং নেহেরু-শাস্ত্রী থেকে চন্দ্রশেখর-অটল-মনমোহন দেশ গঠনে সকলের অবদানের কথা স্মরণ করেন। সর্দার বল্লবভাই প্যাটেল, লোহিয়া, আডবাণীর মতো দেশনেতাদের কথা মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও মাভলঙ্কার জি থেকে সুমিত্রা তাই থেকে বিড়লা জি পর্যন্ত সংসদ অধ্যক্ষদের সম্মান জানান তিনি।
- ইন্দিরা গান্ধীর স্মরণ: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রসঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীর স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
- সাংবাদিকদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন: প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সাংবাদিকদেরও আমি স্মরণ করব, যাঁরা সারা কর্মজীবনে সংসদের খবরই কভার করেছিলেন। তাঁরা পুরোটার একপ্রকার সাক্ষী ছিলেন। তাঁরা ভিতরের খবরও দিতেন।' এরপর তিনি মজা করে বলেন, 'আবার ভিতরের ভিতরের খবরও দিতেন। এমন সাংবাদিকদেরও আমি চিনতাম।' তাঁর কথায় সাংসদ কক্ষে হাসির রোল ওঠে। প্রধানমন্ত্রী বসেন, তাঁদের নাম হয় তো জানেন না, কিন্তু তাঁদের কাজের সাক্ষী সকলে। তাঁরাই দেশের সকলের কাছে সংসদের খবর পৌঁছে দিতেন। তাঁদের কলমের জোর এই দেশের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করেছে।